খুলনা, বাংলাদেশ | ৩ ফাল্গুন, ১৪৩১ | ১৬ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫

Breaking News

  বাংলাদেশ নিয়ে যে অপপ্রচার চলছিল জাতিসংঘের প্রতিবেদনে তা বন্ধ হয়েছে, ট্রাম্পের কাছে গিয়েও সুবিধা করতে পারেনি একটা পক্ষ : প্রধান উপদেষ্টা
  ‘অপারেশন ডেভিল হান্টে’ গেলো ২৪ ঘন্টায় সারা দেশে ৪৭৭ জন গ্রেপ্তার
  বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামের নাম জাতীয় স্টেডিয়াম ; জাতীয় ক্রিড়া পরিষদের নির্দেশনা

মুক্তিপণ দিয়ে বাড়ি ফিরেছে আরো ২ জেলে, টাকা দিয়েও মুক্তি মিলছে না শাহাজানের

নিজস্ব প্রতিবেদক, সাতক্ষীরা

দুবলার চর এলাকার বাহির সমুদ্র থেকে অপহৃত ১৫ জেলের মধ্যে মুক্তিপন দিয়ে প্রতাপনগর ইউনিয়নের আরো দুই জেলে বাড়ি ফিরে এসেছে। বৃহস্পতিবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) রাতে তারা প্রতাপনগর ইউনিয়নের চাকলা গ্রামের বাড়িতে পৌছায়। এর আগে মাথাপিছু ২ লাখ ৮৫ হাজার টাকা মুক্তিপণ নিয়ে চোখ বেধে ৯ জেলেকে বুধবার (১২ফেব্রুয়ারি) রাতে সাতক্ষীরার শ্যামনগরের মুন্সিগঞ্জ এলাকায় জঙ্গল থেকে উপরে উঠিয়ে দিয়ে যায় ডাকাতরা।

ফিরে আসা দুই জেলে হলেন, সাতক্ষীরার আশাশুনির প্রতাপনগর ইউনিয়নের চাকলা গ্রামের মো. মহিজুদ্দিন বিশ্বাসের ছেলে মো. জাহাঙ্গীর আলম ও একই গ্রামের মো. নুরমান আলী সরদারের ছেলে অরাফাত হোসেন।

তবে মুক্তিপণের টাকা পরিষদ করার পরও বাড়ি ফিরতে পারছে না প্রতাপনগর ইউনিয়নের চাকলা গ্রামের শামছুর রহমান গাজীর ছেলে শাহাজান গাজী। তার ট্রলার (ইঞ্জিন চালিত নৌকা) থাকায় ডাকাতরা আরেকটি ট্রলার আটক করতে না পারা পর্য়ন্ত তাকে ছাড়ছে না। ফিরে আসা জেলে জাহাঙ্গীর আলম ও অরাফাতের কাছ থেকে এতথ্য জানা গেছে।

বিষয়টি নিশ্চিত করে প্রতাপনগর ইউনিয়নের সাবেক মেম্বর গোলাম রসুল জানান, মাথাপিছু ২ লাখ ৮৫ হাজার টাকা নিয়ে অপহৃত ১৫ জেলের মধ্যে ১১জনকে ইতিমধ্যে মুক্তি দিয়েছে ডাকাতরা। এদের মধ্যে ৯জনকে বুধবার রাতে এবং চাকলা গ্রামের আরো দুইজনকে বৃহস্পতিবার রাতে ছেড়ে দেয়া ডাকাতরা। মুক্তিপনের টাকা পরিশোধের পরও প্রতাপনগরের চাকলা গ্রামের শাহাজান গাজী বাড়িতে ফিরতে পারছেন না তার ট্রলারের কারণে। ডাকাতরা অন্য আরেক ট্রলার আটক করার পর তাকে ছাড়বে বলে তার পরিবারের পক্ষ থেকে জানা গেছে।

অপহৃত চাকলা গ্রামের শাহাজান গাজীর স্ত্রী নাজমা খাতুন জানান, জেলে দলের সভাপতি আব্দুর রউফ মেম্বরের মাধ্যমে আমার স্বামীর টাকা পরিশোধ করা হয়েছে। কিন্তু এখনো পর্যন্ত তাকে ছাড়েনি। বাড়ি ফিরে আসা জেলে জাহাঙ্গীর আলম ও অরাফাতের মাধ্যমে জানতে পারলাম তাদের মুক্তির দুই দিন পর আমার স্বামীকে ছেড়ে দেওয়ার কথা। তবে তার ট্রলার থাকায় ডাকাতরা আরেকটি ট্রলার না ধরা পর্যন্ত তাকে ছাড়তে পারছে না।

বিষয়টি নিশ্চিত করে প্রতাপনগর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবু দাউদ ঢালী জানান, তার ইউনিয়নের ১০জন জেলে অপহৃত হয়েছিল। গতকাল পর্যস্ত ৯জন বাড়ি ফিরেছে। শাহাজান গাজী নামের একজন এখনো ফিরে আসেনি।

প্রসঙ্গতঃ গত ২৭ জানুয়ারি সকাল আনুমানিক ভোর ৬টার দকে সুন্দরবনের ডাকাত দয়াল বাহিনী সদস্যরা সুন্দরবনের দুবলার চরের নিরীহ জেলেদের উপর আক্রমণ করে। এসময় দুঃসাহসী জেলেরা নিজেদের আত্মরক্ষার্থে ডাকাতদেরকে প্রতিহতের চেষ্টা করে এবং একই সাথে দুবলার চরের কোস্টগার্ড স্টেশনে সাহায্য চেয়ে ফোন করে। ডাকাতদের সাথে জেলেদের হাতাহাতির একপর্যায়ে জেলেরা তিন ডাকাতকে জাল দিয়ে ধরে ফেলে। কিন্তু এসময় ডাকাতরা সেখান থেকে ১৫ জেলেকে ধরে নিয়ে যায়।

অপহৃত জেলেরা হলেন, সাতক্ষীরার আশাশুনি উপজেলার প্রতাপনগর ইউনিয়নের সুভদ্রাকাটি গ্রামের মো. দাউদ আলী সানার ছেলে অজাহারুল ইসলাম, চাকলা গ্রামের মো. মহিজুদ্দিন বিশ্বাসের ছেলে মো. জাহাঙ্গীর আলম, একই গ্রামের মো. নুরমান আলী সরদারের ছেলে অরাফাত হোসেন, শামছুর রহমান গাজীর ছেলে শাহাজান গাজী, রুইয়ারবিল গ্রামের জুলফিকার সরদারের ছেলে আলমগীর হোসেন, একই গ্রামের শহর আলী গাজীর ছেলে হাফিজুর রহমান, আব্দুল হক সানার ছেলে মো. শাহীনুর আলম, দিঘালারাইট গ্রামের মো. আবু দাউদ জদ্দারের ছেলে মো. রাসেল, শ্রীপুর গ্রামের মো. রুহুল আমিন ঢালির ছেলে মো. শাহাজান ঢালী ও দৃষ্টিনন্দন গ্রামের মো. আনিচ সরদারের ছেলে নুরে আলম এবং শ্যামনগর উপজেলার বন্যতলা গ্রামের আবু তালেব এর ছেলে শাহ আলম।

এছাড়া বাগেরহাট জেলার রামপাল থানার ইসলামাবাদ গ্রামের মো. মোস্তাহার সরদারের ছেলে মো. মতিয়ার সরদার, কাশিপুর গ্রামের খান হাসমত এর ছেলে খান রফিক, মংলা থানার চিলা গ্রামের বাদল বিশ্বাসের ছেলে নীথন বিশ্বাস এবং খুলনার পাইকগাছা উপজেলার কাশিমনগর গ্রামের মো. গফুর মোড়লের ছেলে মো. রিপন মোড়ল।

মাথাপিছু মাথাপিছু ২ লাখ ৮৫ হাজার টাকা মুক্তিপন নিয়ে অপহৃত ১৫ জেলের মধ্যে ১১জনকে ইতিমধ্যে মুক্তি দিয়েছে ডাকাতরা।

এবিষয় আশাশুনি থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) নোমান হোসেন জানান, প্রতাপনগর ইউনিয়নের ৯জন জেলে বাড়ি ফিরে এসছে আমি শুনেছি। কিন্তু পরিবারের পক্ষ থেকে কেউ আমাকে অবহিত করেনি।

খুলনা গেজেট/এএজে




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!