নড়াইলের সদরে মৃতপ্রায় চিত্রার ঘোড়াখালী থেকে গড়েরঘাট পর্যন্ত সাড়ে ১২ কিলোমিটার অংশ খননকাজ শেষ হয়েছে। এতে প্রাণ ফিরে পেয়েছে নদীটি। সবুজে ভরে গেছে নদীর চারপাশ।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, কালের পরিক্রমায় উজানের পানিপ্রবাহের স্বল্পতায় এ জনপদের মানুষের আশীর্বাদ ও প্রাণ-প্রাচুর্যে পরিপূর্ণ চিত্রা নদী ক্রমে শীর্ণ খালে পরিণত হয়। এতে কৃষিনির্ভর এ অঞ্চলের আর্থসামাজিক প্রেক্ষাপটে ব্যাপক নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। তবে খননকাজ শেষ হওয়ায় আবার যৌবন ফিরে পেয়েছে চিত্রা নদী।
জুড়ুলিয়া গ্রামের কৃষক আলিম শেখ জানান, শুষ্ক মৌসুমে চিত্রা নদীতে হাঁটুপানি থাকতো। এখন খননের ফলে পর্যাপ্ত পানি থাকছে। এতে অনেক মাছ পাওয়া যাচ্ছে। পণ্য পরিবহনে বিভিন্ন নৌযান যাতায়াত করতে পারছে। কৃষিতে ব্যাপক অবদান রাখছে আমাদের এ নদীর পানি।
পরিবেশবিদ এস এ মতিন জানান, নড়াইলের ঐতিহ্যের অন্যতম ধারক চিত্রা নদী জেলার উত্তর-পশ্চিম সীমান্তে গড়েরহাট দিয়ে নড়াইল জেলায় প্রবেশ করে। সেখান থেকে পূর্বদিকে প্রবাহিত হয়ে মাইজপাড়া ও শাহাবাদ ইউনিয়নের ভেতর দিয়ে ঘোড়াখালীর ত্রিমোহনায় নবগঙ্গা নদীর বিপুল জলরাশির সংস্পর্শে এ নদী দক্ষিণমুখী বয়ে গেছে।
মাইজপাড়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান জসিম উদ্দিন বলেন, পুনঃখননে জৌলুস ফিরেছে নড়াইলে বয়ে যাওয়া মৃতপ্রায় চিত্রা নদীতে। প্রস্থ ও গভীরতা বৃদ্ধি পাওয়ায় পানির প্রবাহও বেড়েছে এ নদীতে। কৃষি, মৎস্য ও নৌপথে যোগাযোগে ব্যাপক অবদান রাখছে নদীটি।
শাহাবাদ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান জিয়াউর রহমান বলেন, গড়েরহাট থেকে ঘোড়াখালী পর্যন্ত চিত্রার এ অংশ খনন করার ফলে চিত্রার যৌবন ফিরে এসেছে। এতে এলাকার আর্থসামাজিক অবস্থার ব্যাপক উন্নতি হতে শুরু করেছে।
পরিবেশবাদী যুব সংগঠন গ্রীন ভয়েস এর নড়াইলের সমন্বয়ক শরিফুজ্জামান বলেন, মৃতপ্রায় চিত্রা নদীটি পুনরায় তার যৌবন ফিরে পেয়েছে। এতে করে জীববৈচিত্র্যের উন্নয়ন ঘটেছে।
এ বিষয়ে নড়াইল পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী উজ্জ্বল কুমার সেন বলেন, এলাকাবাসীর দীর্ঘদিনের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে সংসদ সদস্য মাশরাফি বিন মুর্তজার প্রচেষ্টায় চিত্রা নদীর সাড়ে ১২ কিলোমিটার অংশ খনন করা হয়। এতে স্বরূপে ফিরেছে চিত্রা নদী।
খুলনা গেজেট/এনএম