খুলনা, বাংলাদেশ | ১৩ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ | ২৮ নভেম্বর, ২০২৪

Breaking News

  প্রয়োজনীয় সংস্কার শেষে নির্বাচনি রোডম্যাপ দেয়ার আহবান বিএনপির: মির্জা ফখরুল
  চলমান ইস্যুতে সবাইকে শান্ত থাকার আহবান প্রধান উপদেষ্টার: প্রেস সচিব
  ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুতে ৪ জনের মৃত্যু, হাসপাতালে ভর্তি ৮৮৮

মারপিটের পর কুয়েট শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে মামলা দিল প্রশাসন

নিজস্ব প্রতিবেদক

মোবাইল অ্যাপসে সরকারবিরোধী বার্তা আদান-প্রদান (চ্যাট) করায় খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট) সিএসই বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী জাহিদুর রহমানকে বেদম পিটিয়েছে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। পরে তার বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করা হয়। বর্তমানে তিনি খুলনা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের প্রিজন সেলে ভর্তি রয়েছেন।

সোমবার (১২ সেপ্টেম্বর) কুয়েটের সিকিউরিটি অফিসার মো. সাদেক হোসেন প্রামানিক (৩৫) খানজাহান আলী থানায় মামলা করেন।

এজাহারে তিনি উল্লেখ করেন, ‘১১ সেপ্টেম্বর রাত সাড়ে ১১টায় নিরাপত্তা প্রহরীর মাধ্যমে জানতে পারি জাহিদুর রহমানকে একই হলের শিক্ষার্থীরা জঙ্গি/সরকার বিরোধী আখ্যা দিয়ে মারধর করে প্রভোস্ট রুমে আটকে রেখেছে। ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে মোবাইল ফোন পর্যালোচনা করে জাহিদুর রহমান আরেক শিক্ষার্থীর সঙ্গে ব্যক্তিগত চ্যাটের মাধ্যমে সরকার বিরোধী ও মানহানিকর মিথ্যা ও আক্রমণাত্মক তথ্য আদান-প্রদান করার তথ্য পাওয়া যায়।’

জাহিদের স্বজনরা বলেন, গত রোববার (১১ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যা ৬টায় ড এম এ রশিদ হলের গেস্ট রুমে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা জাহিদকে ডেকে নিয়ে যায়। তাকে রাত ১১টা পর্যন্ত নির্মম ভাবে পেটানো হয়। ওই রাতেই পুলিশ তাকে বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাম্বুলেন্সে করে খুলনা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করে।

নগরীর খানজাহান আলী থানার ওসি কামাল হোসেন জানান, জাহিদুর রহমান এবং রেজওয়ান স্যামের বিরুদ্ধে ডিজিটাল ডিভাইজ দিয়ে আক্রমণাত্মক মানহানিকর তথ্য প্রকাশ করে কুয়েট ছাত্রদের মধ্যে অস্থিরতা বা বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে আইন-শৃঙ্খলার অবনতি চেষ্টার অভিযোগ রয়েছে। জাহিদুর কুয়েট এবং স্যাম ব্রাক বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র।

জানা গেছে, শিক্ষার্থী জাহিদুর রহমান ভোলা তজমুদ্দিন সোনাপুর গ্রামের আব্দুস সালামের ছেলে। মামলার অপর আসামি রেজওয়ান স্যাম (২১) ভোলার বোরহানউদ্দিন মুশির হাট গ্রামের বাসিন্দা।

এ ব্যাপারে কুয়েট ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সাদমান নাহিয়ান সেজান বলেন, ছেলেটি তাবলীগ জামাতের সঙ্গে জড়িত ছিলো। কিন্তু উগ্রবাদী বক্তব্য দেওয়ায় তাবলীগের লোকেরা ওদের সঙ্গে মিশতে নিষেধ করে দেয়। ঘটনার রাতে ওর মোবাইলে সরকার প্রধানের বিরুদ্ধে আপত্তিকর বক্তব্য পাওয়ায় সাধারণ ছাত্ররা মারধর করেছে বলে শুনেছি। সেখানে ছাত্রলীগের দু’একজন থাকতে পারে। তবে আমি ঘটনাস্থলে যাওয়ার পর আর মারধর হয়নি।

জাহিদের বড় ভাই নাঈম বলেন, আমার ভাইয়ের বিরুদ্ধে যেসব কথা বলা হচ্ছে তা সত্য নয়। আমার ভাইকে মিথ্যা মামলায় ফাঁসানো হচ্ছে। ও কোন সংগঠনের সাথে জড়িত না। তিনি বলেন, জাহিদুর এটা করেছে আমার বিশ্বাস হয় না। যদি করেও থাকে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্যাররা আছেন, হল প্রভোস্ট আছেন-তারা বিচার করবেন। এভাবে নির্মমভাবে পেটাবে কেন ?

কুয়েটের ড. এম এ রশিদ হলের প্রভোস্ট এম ডি হামিদুল ইসলাম বলেন, সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রীর দিল্লি সফর নিয়ে আপত্তিকর মন্তব্য করেছে জাহিদুর। এটা নজরে আসায় হলের ছাত্ররা তাকে জিজ্ঞাসাবাদের পর আমরা তাকে পুলিশে সোপর্দ করি। মারধরের প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আমার হাতে আসার পর কেউ মারধর করেনি। আগে কি হয়েছে জানি না।

কুয়েট উপাচার্য অধ্যাপক ড. মিহির রঞ্জন হালদার সমকালকে বলেন, ১১ সেপ্টেম্বর রাত ১১টার দিকে হল প্রভোস্ট আমাকে ফোন করে জানায়, এক ছাত্রকে জঙ্গি সন্দেহে আটক করা হয়েছে। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তাকে অন্য ছাত্ররা অল্প মারধর করেছে। আমি বিষয়টি পুলিশকে অবহিত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশনা দেই এবং তাৎক্ষণিক ছাত্র নেতাদের সতর্ক করেছি, যাই ঘটুক ছাত্রদের গায়ে যেন কেউ হাত না তোলে। ভবিষ্যতে হাত তুললে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

খুলনা গেজেট/এইচ




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!