খুলনা, বাংলাদেশ | ১৭ আষাঢ়, ১৪৩১ | ১ জুলাই, ২০২৪

Breaking News

  এই দেশে আর কখনোই জঙ্গিবাদ ও মৌলবাদের উত্থান হবে না : র‌্যাব ডিজি
  ডিজেল, কেরোসিনের দাম কমলো এক টাকা। অপরিবর্তিত থাকছে পেট্রোল-অকটেন।

মাত্র ১০ হাজার টাকা চুক্তিতে স্ত্রীকে খুন করায় পরিমল

সাগর জাহিদুল

২০১৬ সালের ১৬ এপ্রিল। বেলা পৌনে ১১ টা। দিঘলিয়া মাঝিরগাতি বাজারে অনেক লোকের আনাগোনা। এরই মাঝে বাজারে শোনা যায় আত্রাই নদীর সংযোগ খালে অজ্ঞাত নারীর মস্তকবিহীন লাশ পড়ে রয়েছে। গ্রামের লোকজন লাশটি এক নজর দেখার জন্য ভিড় করতে শুরু করে। খবর পেয়ে পুলিশ সেখানে পৌঁছায়। সুরতহাল রির্পোট তৈরি করে ময়নাতদন্তের জন্য লাশ মর্গে প্রেরণ করে। লাশের পরিচয় সনাক্তের জন্য পুলিশ তৎপর। পরে জানা যায় লাশটি ওই এলাকার পরিমল বাইনের স্ত্রী মিনা পোদ্দারের। আর তার খুনী বাইরের কেউ নয়, খুনী তার স্বামী।

২০১৫ সালে মিনা পোদ্দারের বিয়ে হয় পরিমল বাইনের সাথে। মিনা তার চতুর্থ স্ত্রী। বৈবাহিক জীবনে তাদের সংসারে অশান্তি লেগেই থাকত। তাছাড়া এর পূর্বে স্বামীর তিনটা স্ত্রী রয়েছে, এটা জানতে পেরে আরও অশান্তি বেড়ে যায়। পরিমলের সাথে খারাপ ব্যবহার শুরু করে মিনা। একপর্যায়ে তাকে হত্যার পরিকল্পনা শুরু করে স্বামী। সে অনুযায়ী একজন ভাড়াটে খুনীর সন্ধানে নামে পরিমল। সন্ধানও পেয়ে যায় সে। খুনী আর কেউ না, দিঘলিয়ার পদ্মাবিলার শাহাজাহান শেখের ছেলে টিপু সুলতান। স্ত্রীকে হত্যার জন্য ১০ হাজার টাকা চুক্তি হয় খুনীর সাথে। পরিকল্পনা অনুযায়ী তাকে হত্যার দিনক্ষণও নির্ধারণ করে তারা দু’জন।

২০১৬ সালের ১৩ এপ্রিল রাতে পরিকল্পনা অনুযায়ী ভিকটিমকে নিয়ে তার স্বামী টিপু সুলতানের বাড়ি যায়। সেখানে কিছুক্ষণ অপেক্ষা করা হয়। কিছু বুঝে ওঠার আগে ধারালো দা দিয়ে টিপু পেছন থেকে ভিকটিমের গলায় কোপ দেয়। দেহ থেকে মাথা বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। ভিকটিমের ডান হাতের কব্জিও বিচ্ছিন্ন করা হয়। এরপর দু’জনই লাশটি নিয়ে দিঘলিয়া উপজেলার পদ্মবিল ও বামনডাঙ্গা বিলের আত্রাই নদীর সংযোগ খালের পানির মধ্যে ফেলে দেয়। হত্যাকান্ডের তিনদিন পর খবর পেয়ে পুলিশ লাশটি উদ্ধার করে। সুরতহাল রির্পোট তৈরির পর লাশ খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ময়নাতদন্তের জন্য প্রেরণ করা হয়।

লাশের পরিচয় জানতে মরিয়া হয়ে ওঠে পুলিশ। পরিবর্তন করা হয় একের পর এক তদন্ত কর্মকর্তাকে। ২৫ এপ্রিল ভিকটিমের বোন রীনা রানী পোদ্দার ও ভাই অমল কৃষ্ণ পোদ্দার বাগেরহাট চিতলমারী থানায় খোঁজ জানতে গেলে তারা শোনেন, দিঘলিয়ার একটি অজ্ঞাত মহিলার লাশ পাওয়া গেছে। পরে নিহতের কাপড় দেখে সনাক্ত করে এটা তাদের বোনের। এরপর ওই মাসের ৩০ তারিখে পরিমল বাইনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। মামলাটি সিআইডির কাছে হস্তান্তর করা হয়। মূল রহস্য উদঘাটন করতে তারা সক্ষম হয়। পরে জামিন নিয়ে পরিমল বাইন পালিয়ে যায়।

 

খুলনা গেজেট/এনএম




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!