কল্পকাহিনির ভক্ত না হলে জেমস ডুহানকে মনে রাখার কথা নয়। ১৯৬৬ থেকে ১৯৬৯ সাল পর্যন্ত প্রচারিত ‘স্টার ট্রেক’ টিভি সিরিজে প্রধান প্রকৌশলী মন্টগোমারি স্কটের ভূমিকায় অভিনয় করেছিলেন তিনি। ২০০৫ সালে ৮৫ বছর বয়সে মারা যান এই অভিনেতা। ব্রিটিশ পত্রিকা ‘দ্য টাইমস’ সম্প্রতি জানিয়েছে, সবার অগোচরে ১২ বছর আগেই মহাকাশে পাঠানো হয় তাঁর মৃতদেহের ছাই, যা এখনো পৃথিবীর চারপাশে চক্কর দিচ্ছে।
আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনে যাওয়ার ইচ্ছা ছিল জেমস ডুহানের। মৃত্যুর পর পরিবারের লোকজন তাঁর সে ইচ্ছা পূরণের চেষ্টাও করেছিলেন। তবে আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনে জেমসের মৃতদেহের ছাই পাঠানোর আবেদন নাকচ করে দেওয়া হয়।
পরে জেমসের ইচ্ছা পূরণে এগিয়ে আসেন ব্যক্তি উদ্যোগে মহাকাশ স্টেশন ভ্রমণে যাওয়া রিচার্ড গ্যারিয়ট। তিনি গোপনে জেমসের ছাই মহাকাশ স্টেশনের কলাম্বাস মডিউলে ঢুকিয়ে দেন। গ্যারিয়ট জানিয়েছেন, তিনি ডুহানের লেমিনেট করা ছবি আর কিছু ছাই কলাম্বাসের মেঝের নিচে লুকিয়ে রেখে আসেন। তবে সে ঘটনার উল্লেখ কারও কাছে করেননি। কেবল তিনি আর ডুহানের পরিবারের সদস্যরা জানতেন।
ব্রিটিশ পত্রিকা ‘দ্য টাইমস’কে গ্যারিয়ট বলেন, ‘এটা সম্পূর্ণ গোপন রাখা হয়েছিল। ডুহানের মৃতদেহের ছাই মহাকাশ স্টেশনে যাওয়ার ব্যাপারে তাঁর পরিবার বেশ সন্তুষ্ট ছিল। তবে সমস্যা হলো, আমরা কেউই সে বিষয়ে দীর্ঘদিন মুখ খুলতে পারিনি। বলতে পারছি এত দিন পর এসে।’
ডুহানের ছাই মহাকাশে পাঠানোর উদ্যোগ সেবারই প্রথম নয়। তাঁর মৃতদেহের ছাইয়ের কিছুটা ২০০৮ সালে স্পেসএক্সের ফ্যালকন ১ রকেটে করে মহাকাশে পাঠানোর চেষ্টা করা হয়েছিল। তবে উড্ডয়নের খানিক পরই সে অভিযান ব্যর্থ হয়। তবে ২০১২ সালে একটি পাত্রে ডুহানের ছাইসহ স্পেসএক্স ফ্যালকন ৯ রকেট যায় মহাকাশে।
‘দ্য টাইমস’-এর নিবন্ধটি প্রকাশিত হয় গত ২৫ ডিসেম্বর। সে সময় পর্যন্ত মহাকাশে প্রায় ১৭০ কোটি মাইল পাড়ি দেয় ডুহানের ছাই। পৃথিবীকে প্রদক্ষিণ করে প্রায় ৭০ হাজার বার।
সেই ১৯৬৬ সালে শুরু হয় মন্টগোমারি স্কটের যাত্রা। আজ এত বছর পরও স্কট ছুটছেন দুর্দান্ত গতিতে। আর তাই ‘চোরাচালানি’র জন্য ডুহানের ছেলে ক্রিসের কাছ থেকে উল্টো ধন্যবাদ পেয়েছেন গ্যারিয়ট।
খুলনা গেজেট/কেএম