খুলনা, বাংলাদেশ | ১২ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ | ২৭ নভেম্বর, ২০২৪

Breaking News

  প্রয়োজনীয় সংস্কার শেষে নির্বাচনি রোডম্যাপ দেয়ার আহবান বিএনপির: মির্জা ফখরুল
  চলমান ইস্যুতে সবাইকে শান্ত থাকার আহবান প্রধান উপদেষ্টার: প্রেস সচিব
  ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুতে ৪ জনের মৃত্যু, হাসপাতালে ভর্তি ৮৮৮

মহসেনের তুলনায় সিত্রাংয়ে কম ধাক্কা খুলনার কৃষি অর্থনীতিতে

নিজস্ব প্রতিবেদক

আমন মৌসুমে শুরুতেই অনাবৃষ্টির মত বৈরি আবহাওয়ায় বড় ধরণের হোঁচট খায় খুলনার কৃষক। গত ১৫ বছরে দশটি প্রাকৃতিক দুর্যোগের মধ্যে মহসেন বড় আঘাত করে কৃষি অর্থনীতিতে। সে সময়ের ক্ষতির পরিমাণ ৫২ কোটি টাকা। সিত্রাংয়ে ক্ষতি হয়েছে স্বল্প। টাকার পরিমাণে ৫ কোটির মতো।

২০০৭ সাল থেকে গতকাল সোমবার পর্যন্ত দক্ষিণ জনপদে সিডর, আইলা, মহসেন, ফণি, নার্গিস, তিতলি, বুলবুল, আমফান, ইয়াস ও সিত্রাং নামক ঘূর্ণিঝড় আঘাত হানে। খুলনার কৃষি অর্থনীতিতে সবচেয়ে বড় আঘাত হয় ২০১৩ সালের ১৫ মে মহসেন নামক ঘূর্ণিঝড়ে। সে সময়ে ১৫-২৫ মে ৩১৮ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়। কৃষি সম্প্রসারণের প্রতিবেদন অনুযায়ী, জেলার পাইকগাছা, তেরখাদা, ডুমুরিয়া, দাকোপ ও বটিয়াঘাটা উপজেলায় তিল, তরমুজ, মুগডাল, ঢেড়স, মিষ্টি কুমড়া, পুইশাক ও ঝিঙে ক্ষতিগ্রস্থ হয়। জেলার ৪২ হাজার কৃষকের ৫২ কোটি ৩০ লাখ টাকা কৃষি পণ্যের ক্ষতি হয়।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর খুলনা জোনের অতিরিক্ত পরিচালক মোঃ হাফিজুর রহমান (ভারপ্রাপ্ত) তথ্য দিয়েছেন, এ পর্যন্ত ২ শতাংশ আমন ধান পেকেছে। বাকি ধানের থোড় বসেছে। শীতকালীন সবজির চারা তৈরি হচ্ছে। উচু জায়গা হওয়ায় ক্ষতির পরিমাণ কম।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর, খুলনার অতিরিক্ত উপ-পরিচালক, শস্য মোঃ মোসাদ্দেক হোসেন জানান, জেলায় সবচেয়ে বেশি আমন ধান ডুবেছে বটিয়াঘাটা উপজেলায়। এখানে প্রায় ১৫ হাজার হেক্টর জমির ধান পানির নিচে। ১৫ অক্টোবর থেকে শীতকালীন সবজির আবাদ শুরু হয়েছে। নিচু জমির কৃষি পণ্য ক্ষতিগ্রস্থ হয়।

ডুমুরিয়া উপজেলার কৃষি কর্মকর্তা ইনসাফ ইবনে আমিন তথ্য দিয়েছেন, উপজেলায় ২.৫০ হাজার হেক্টর জমির আমন ধান পানির নিচে। তিনি বলেন আটলিয়া, রঘুনাথপুর রুদাঘরা, সাহস, বরাতিয়া, খর্নিয়া, তালিকাপুর, মিকশিমিল, মাগুরঘোনা, আরসনগরে শীতকালে সবজি চাষীরা ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। এ উপজেলার ২০ হেক্টর জমির পেঁপে ও ২৩ হেক্টর জমির কলা আবাদ ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে।

ডুমুরিয়া উপজেলার খর্নিয়া গ্রামের চাষী আবু হানিফ মোড়ল ও তালিকাপুর গ্রামের চাষী কুমারেশ চন্দ্র মন্ডল তথ্য দিয়েছেন, অনাবৃষ্টিতে লাউ, চিচিঙ্গা, পটল, ও লাল শাকের ক্ষতি হয়। শোভনা গ্রামের কৃষাণী রিতা রাহা বলেছেন, অনাবৃষ্টিতে এ অঞ্চলের কৃষক ক্ষতিগ্রস্থ হয়। দত্ত ডাঙা গ্রামের কৃষক, ধর্ম দাশ মন্ডল, সৌরভ মন্ডল ও ঘোনাবান্দা গ্রামের কৃষক দেব প্রসাদ জানিয়েছেন, সিত্রাং’য়ে আমনের পাশাপাশি সীম, ফুলকপি, টমেটো ও মুলোর আবাদ ক্ষতিগ্রস্থ হয়।

বিভিন্ন এনজিও’র সূত্র বলছে, জেলায় সিত্রাংয়ের আঘাতে ৫ কোটি টাকা মূল্যের কৃষি পণ্যের ক্ষতি হয়েছে। আইলা, আমফান ও ইয়াসের তুলনায় এবার কৃষি অর্থনীতিতে ক্ষতি কম।

উল্লেখ্য, জেলায় ১৮ হাজার ৪৮৩ হেক্টর জমির আমন, সবজি, পেপে, কলা ও পান ক্ষেতে সিত্রাং আঘাত করে। এ মৌসুমে মহানগরীসহ ৯ উপজেলায় ৯৩ হাজার ১৮৫ হেক্টর জমিতে আমনের আবাদ হয়।




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!