খুলনার খানজাহান আলী থানার মশিয়ালী গ্রামের জিহাদ হত্যা মামলার রেজাউল শেখ ক্যাবলা (৪৫)কে আটক করেছে পিবিআই। তথ্য প্রযুক্তির মাধ্যমে খুলনার ডাকবাংলা থেকে সোমবার (৩১ জানুয়ারি) বেলা ১টায় আটক করা হয় তাকে।
খুলনা জেলা পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন(পিবিআই) এর ওসি মাহফুজ হোসেন ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, জিহাদ হত্যা মামলার ১৭ জন আসামির ভিতর ৯নং আসামি মশিয়ালী গ্রামের মৃত আজিজ শেখ এর ছেলে রেজাউল শেখ ক্যাবলা(৪৫)কে তথ্য প্রযুক্তির মাধ্যমে খুলনার ডাকবাংলা থেকে বেলা ১টায় আটক করা হয়েছে। বাকী আসামিদেরও আটকের ব্যপারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
এ মামলার বাদী নিহত জিহাদের চাচা নূর মোহাম্মাদ বলেন, ২০২০ সালের ১৬ জুলাই এলাকাবাসীর হামলায় আমার ভাইপো মশিয়ালী গ্রামের জিহাদ শেখ নিহত হয় এবং একই এলাকার আমার অপর ভাইপো মোঃ জাকারিয়া, মিল্টন ও জাফরিন এর বাড়িতে ভাংচুর, লুটপাটসহ অগ্নি সংযোগ করা হয়। ষড়যন্ত্রমুলকভাবে আমাদের গুলিতে তারা মারা গেছে বলে প্রচার করে এবং আমার পরিবারের ২২ জনের নামে মিথ্যা মামলা দায়ের করে। এ মামলায় আমার ভাইপোসহ কয়েকজন পুলিশের কাছে আটক হয়।
পরবর্তীতে গত বছরের ১২ ডিসেম্বর আমার ভাইপো জেল থেকে জামিনে আসার পর ৯ জানুয়ারী খানজাহান আলী থানায় মামলা দায়ের করতে গেলে থানা পুলিশ মামলা কোর্টে করার পরমার্শ দেন। সেই মোতাবেক ১১ জানুয়ারী বিজ্ঞ জুডিসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট এর আমলি আদালতে ১০৮ জনকে আসামী করে মামলা দায়ের করা হয়। মোঃ জাকারিয়া ১৬ জানুয়ারী বিজ্ঞ জুডিসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট এর আমলি আদালতে ১১০ থেকে ১৫ জনকে আসামি করে আরও একটি মামলা দায়ের করে । বর্তমানে মামলাটি তদন্তের দায়িত্বে পিবিআই এর উপর ন্যাস্ত করা হয়েছে বলেও তিনি জানান।
তিনি আরও বলেন, এলাকার সন্ত্রাসীদের ভয়ে ১৭ টি পরিবার নিয়ে আমরা এলাকায় যেতে পারছিনা। কনকনে শীতে রাস্তায় রাস্তায় চরম মানবেতর জীপন যাপন করছি। আমার ভাইপো জিহাদ হত্যা মামলার আসামিরা এবং বাড়িঘর লুটপাট ও অগ্নিসংযোগ কারীরা এখনও প্রশাসনের সামনে বুক ফুলিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে। অতিদ্রুত সকল আসামিদের গ্রেপ্তারপূর্বক দৃষ্টান্তমুলক শাস্তির দাবী জানান তিনি, সেই সাথে শান্তিপূর্ণভাবে এলাকায় বসবাস করার সুব্যবস্থা করতে স্থানীয় প্রতিনিধি ও প্রশাসনের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেন।
উল্লেখ্য, ২০২০ সালের ১৬ জুলাই রাতে নগরীর খানজাহান আলী থানার মশিয়ালীতে প্রভাবশালী জাকারিয়া-জাফরিনদের গুলিতে গ্রামের নজরুল ইসলাম, গোলাম রসুল ও সাইফুল ইসলাম নিহত হয়। এ সময় গুলিবিদ্ধ হয় আরও ১০ জন। পরে বিক্ষুব্ধ গ্রামবাসী জাকারিয়ার আত্মীয় জিহাদ নামে এক যুবককে পিটিয়ে হত্যা করে ও জাকারিয়াদের বাড়ি-ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে আগুন ধরিয়ে দেয়। এঘটনায় নিহত সাইফুল ইসলামের বাবা শহিদুল ইসলাম বাদী হয়ে খানজাহান আলী থানায় ২২জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতপরিচয় ১৫-১৬ জনকে আসামি করে মামলা দায়ের করেন যার নং-১২, তারিখ ১৮-৭-২০২০ইং।
খুলনা গেজেট/ এস আই