খুলনা, বাংলাদেশ | ১২ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ | ২৭ নভেম্বর, ২০২৪

Breaking News

  প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে যমুনায় বিএনপির ৫ সদস্যের প্রতিনিধি দল
  ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুতে ৪ জনের মৃত্যু, হাসপাতালে ভর্তি ৮৮৮
  মার্কিন দূতাবাসে ফিঙ্গারপ্রিন্ট দিয়ে বাসায় ফিরেছেন খালেদা জিয়া
  ধর্মকে কেন্দ্র করে দেশে এমন উন্মাদনা দেখতে চাই না : মির্জা ফখরুল

মধ‌্যবিত্তের হাঁসফাঁস, যা‌চ্ছে টি‌সি‌বি‌তে

‌নিজস্ব প্রতি‌বেদক

দুপুর ২ টা বেজে ৩০ মিনিট। নগরীর নাজিরঘাট মসজিদ রোড। একটি ট্রাক ঘিরে কয়েক শ’ মানুষের জটলা দেখা যায়। সেখানে গিয়ে দেখা যায় সুলভ মূল্যে ট্রাক থেকে মানুষের কাছে তেল, চিনি ও ডাল বিক্রি করা হচ্ছে। সময়ের সঙ্গে লাইনে মানুষের সংখ্যা বাড়ছিল। সেখানে নিম্ন আয়ের মানুষের সঙ্গে মধ্যবিত্তের উপস্থিতিও ছিল লক্ষণীয়।

করোনা পরবর্তী সময়ে মানুষের আয় রোজগার কমে গেছে। অনেকেই সাংসার চালাতো না পেরে পরিবারের সদস্যদের গ্রামের বাড়িতে পাঠিয়ে দিচ্ছে। নগরীর বিভিন্ন এলাকায় ঝুলছে বাসাবাড়ি ভাড়া দেওয়ার বিজ্ঞাপন।

নাজিরঘাট মসজিদ রোডে টিসিবির পণ্য কিনতে আসা পারভেজ জানান, তিনি বসুপাড়া বাঁশতলা এলাকার বাসিন্দা। করোনা পূর্ববর্তী সময়ে তিনি একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কাজ করতেন। সংসারও বেশ ভালই চলছিল। কিন্তু মহামারী করোনা তার সব আয়ের পথ বন্ধ করে দিয়েছে। চাকরী চলে যাওয়ার পর জোড়াতালি দিয়ে চলছে সংসার। নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য কিনতে গিয়ে হিমশিম খাচ্ছেন।

তিনি আরও বলেন, বাজারে পণ্যের দাম যে হারে বেড়েছে তাতে টিসিবিই একমাত্র ভরসা। স্থানীয় কাউন্সিলরের মাধ্যমে একটি কার্ড পেয়েছিলেন। সে কার্ডের মাধ্যমে তিনি আজ পণ্য তুলতে পেরেছেন।

তিনি জানান, বাজারে কয়েক দফা বেড়েছে চিনির দাম। টিসিবি থেকে প্রতিকেজি চিনি ৫৫ টাকা, ডাল ৬৫ টাকা ও সয়াবিন তেল দু’লিটারের বোতল ২২০ টাকায় কিনতে পেরেছেন। একই পরিমাণ পণ্য কিনতে গেলে তাকে আরও দ্বিগুণ টাকা গুণতে হতো।

সোনাডাঙ্গা সেকেন্ড ফেজে কথা হয় স্থানীয় একটি স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা নিলুফা ইয়াছমিনের সাথে। তিনি বলেন, ২০২০ সালের মার্চের শেষের দিকে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো বন্ধ হয়ে যায়। কিন্তু বন্ধ হয়নি আনুসঙ্গিক খরচ। সরকারের উচিত ছিল আমাদের কথা চিন্তা করা। করোনাকালীন আমাদের কেউ কোন খোঁজ নেয়নি। করোনা পরবর্তী সময়ে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম হু হু করে বেড়ে যায়। আয়ের সাথে ব্যায়ের কোন মিল নেই।

তিনি আরও বলেন, নিম্ন আয়ের মানুষের কান্না অনেকে শুনতে পান। মধ্যম আয়ের মানুষেরা গুমরে মরে। আমাদের মতো মানুষকে দেখার মতো কেউ নেই। টিসিবি’র পণ্য কেনার কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, বাজার থেকে ১ কেজি চিনি কিনতে তার ১১০ টাকা লাগত। সেখানে তিনি অর্ধেক দামে কিনতে পেরেছেন। তেল দু’ লিটার কিনতে ডবল খরচ হতো কিন্তু সেখানে অর্ধেক দামে তেল কিনতে পেরেছেন। এতেই তিনি বেশ খুশি।

মিস্ত্রীপাড়া বাজারে কথা হয় শ্রমিক আনারুলের সাথে। তিনি জানান, আয় বাড়নি। বাড়ির মালিক বাড়িয়েছে বাসাবাড়ির ভাড়া। সংসার চালাতে গিয়ে হিমশিম খেতে হয়। উপায়ন্তু না দেখে পরিবারের সদস্যদের তিনি গ্রামের বাড়ি কয়রায় পাঠিয়ে দিয়েছেন। তিনি স্বল্প মূল্যে টিসিবির পণ্য কিনেছেন। সেগুলো বাড়ি পাঠিয়ে দেবেন বলে এ প্রতিবেদককে জানিয়েছে।

টিসিবি খুলনার আঞ্চলিক প্রধান রবিউল মোর্শেদ বলেন, কেসিসি ৩১ টি ওয়ার্ডে ২০ হাজার ৩৫০ জনের মধ্যে সুলভ মূল্যে পণ্য বিক্রি করা হয়েছে। করোনাকালীন যারা নগদের মাধ্যমে ২৫শ’ টাকা পেয়েছিলেন তাদের মধ্যে এ পণ্য বিক্রি করা হয়েছে। ২৫শ’ টাকা প্রাপ্তদের অনেকেই এ পণ্য তোলার সংবাদ পান না। তখন উপস্থিত সাধারণ মানুষের মাঝে এগুলো বিক্রি করা হয়। তিনি বলেন, রোববার কেসিসি এলাকায় বিক্রি শেষ করা হয়েছে। এরপর থেকে উপজেলা পর্যায়ে বিক্রি করা হবে।

খুলনা গে‌জেট/ টি আই




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!