মণিরামপুরে মোটরসাইকেল ছিনতাই চেষ্টার অপবাদে মেধাবী কলেজ ছাত্র বোরহানুল কবীরকে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় জড়িতদের গ্রেফতার ও সর্বোচ্চ শাস্তির দাবীতে বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধন করেছে শিক্ষার্থীরা। সোমবার (৮ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে পৌর শহরে বিক্ষোভ মিছিল শেষে রাজগঞ্জ মোড়সহ উপজেলা নির্বাহী অফিসারের দপ্তরের সামনে যশোর-সাতক্ষীরা মহা-সড়কে শিক্ষার্থীরা মানববন্ধন কর্মসূচী পালন করে । এরপর উপজেলা নির্বাহী অফিসারের দপ্তরে স্মারকলিপি প্রদান করা হয়।
এছাড়া সন্ধ্যায় উপজেলা চত্ত্বরে অবস্থিত কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে মোমবাতি প্রজ্বলন কর্মসূচী পালন করে নিহত বোরহানুল কবীরের সহপাঠী মণিরামপুর সরকারি কলেজের শিক্ষার্থীরা।
বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধনে নেতৃত্বদানকারী নিহতের সহপাঠী নাহিদ ও তহিদুজ্জামান সজিব খুলনা গেজেট কে জানায়, “আমরা কোন দল বা গোষ্ঠীর নই, আমরা আজ রাজপথে নেমেছি প্রিয় বন্ধু বোরহানুল হত্যার ন্যায় বিচারের দাবীতে। সে কলেজের একজন মেধাবী ও শান্ত প্রকৃতির ছাত্র ছিল। আমরা জীবন থেকে আজ একজন প্রিয় বন্ধুকে হারালাম। এভাবে আর কোন বন্ধুকে হারাতে এবং কোন মায়ের বুক খালি হোক এটা আমরা দেখতে চাইনা।”
মানববন্ধন কর্মসূচী পালনকারী শিক্ষার্থীদের দাবী, গত শনিবার প্রকাশ্য দিবালোকে মোটরসাইকেল ছিনতাই চেষ্টার অপবাদে যারা মেধাবী কলেজ ছাত্র বোরহানুল কবীরকে দফায় দফায় অমানুষিক নির্যাতন চালিয়ে হত্যা করেছে তাদের মধ্যে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান শামসুল হক মন্টু পক্ষের লোকজনও জড়িত রয়েছে। ওই ইউপি চেয়ারম্যানের নির্দেশে মুমূর্ষ অবস্থায় বোরহানুলকে চিকিৎসা না করিয়ে পুলিশ তাকে ধরে নিয়ে রাজগঞ্জ পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের মধ্যে কয়েকঘন্টা আটক রাখে। এরপর তার পরিবারের লোকজন এম্বুলেন্সযোগে মণিরামপুর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আনার পর অবস্থার অবনতি হওয়ায় চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী নেয়া হয় যশোর আড়াই’শ শয্যা হাসপাতালে। সেখানেও তার অবস্থা খারাপ দেখে তাকে ঢাকায় রেফার করা হলে, পরের দিন ভোর রাতে ঢাকায় পৌঁছানোর পর তার মৃত্যু ঘটে। চিকিৎসকদের ধারণা অনুযায়ী প্রচুর রক্তক্ষরণে কলেজ ছাত্র বোরাহনুল কবীরের মৃত্যু ঘটেছে।
এদিকে, কলেজ ছাত্র বোরহানুল হত্যার ঘটনা জানতে চাইলে, রাজগঞ্জ পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ ইন্সপেক্টর শাহজান হোসেন বলেন, “মামলার প্রধান আসামী আটক নাইম হোসেনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য রিমান্ডের আবেদন করা হয়েছে। তাকে রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করলে বেরিয়ে আসবে কলেজ ছাত্র হত্যার ঘটনায় তার সাথে আর কারা জড়িত ছিল। এ হত্যাকান্ডের ব্যাপারে জড়িত কেউ ছাড় পাবেনা।”
খুলনা গেজেট/এমএইচবি