মণিরামপুরে ইটভাটার বিষাক্ত ও তপ্ত ধোঁয়ায় কৃষকের ক্ষেতের পাটসহ প্রায় শত বিঘা জমির বিভিন্ন ধরনের ফসলের পাশাপাশি সবজির ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। উপজেলার আগরহাটি-মাঝ লাউড়ী মাঠে অবস্থিত ষ্টার ব্রিকস থেকে বিষাক্ত ও তপ্ত ধোঁয়ায় মাঠের কৃষকরা এমন ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছেন। এ ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্থ কৃষকরা দিশেহারা হয়ে পড়েছেন। কৃষকদের তিন ফসলী জমির মাঠে কিভাবে ইটভাটা স্থাপন করা হয়েছে তা নিয়ে সর্বমহলে প্রশ্ন উঠেছে।
স্থানীয় চাষী প্রতিবন্ধী আব্দুল গফুর কান্না জড়িত কন্ঠে বলেন, “তিনি প্রতিবন্ধী ভাতার টাকা জমিয়ে একখন্ড জমি লীজ নিয়ে পুঁইশাক ও ওলের চাষ করেছেন। কিন্তু ইঁভাটার গরম ও বিষাক্ত ধোঁয়ায় সব শেষ করে দিয়েছে।”
শুধু তিনি নন, রবিউল ইসলাম, কামরুল ইসলাম, পান্নুসহ প্রায় অর্ধশত কৃষকের ফসলের ক্ষতি হয়েছে। তারা জানান, “কিছুদিন আগে ওই ইটভাটার চিমনি দিয়ে হাওয়া বের হতে দেখা যায়। যা বাতাসের সাথে যে দিকে প্রবাহিত হয়েছে সেই দিকের পাটসহ অন্যান্য ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।” সুলতান নামের এক প্রান্তিক কৃষকসহ ক্ষতিগ্রস্থ অনেকেই বলেন, তারা প্রথমে ভেবেছিলেন পোকার আক্রমনে ফসলের পাতা শুকিয়ে যাচ্ছে। পোকা দমনে কীটনাশক ব্যবহার করেও কোন ফল পাননি। পরে জানতে পারেন ইটভাটার নির্গত বিষাক্ত ও তপ্ত ধোয়ায় এ ঘটনা ঘটেছে।
জানতে চাইলে, তিন ফসলী জমির মাঠে কিভাবে ইটভাটা স্থাপনের অনুমতি পেয়েছে এমন প্রশ্ন ছুড়ে দিয়ে মণিরামপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আবুল হাসান বলেন, “তিনি ক্ষতিগ্রস্থ কৃষকদের ফসলী ক্ষেত পরিদর্শন করবেন। ইটভাটা থেকে নির্গত বিষাক্ত ধোঁয়ায় থাকা কার্বনডাই অক্সাইড ও সালফার ডাই অক্সাইড পানির সাথে বিক্রিয়া করে এসিড হওয়ায় ফসলের এমন ক্ষতি হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারানা করা হচ্ছে।”
সরেজমিনে উক্ত ইটভাটায় গিয়ে কথা হয় ম্যানেজার ইকবাল হোসেনের সাথে। তিনি ফসলের তেমন ক্ষতি হয়নি দাবি করে বলেন, কিছু আমড়া গাছের ক্ষতি হলেও এখন নতুন পাতা গজিয়েছে। ভাটা মালিক আব্দুল খালেক দাবী করেন, তার ইটভাটা সপ্তাহ দু’য়েক আগে বন্ধ করা হয়েছে। তাছাড়া চিমনির গ্যাস ছাড়া হয়নি বলেও তিনি দাবি করেন।
জানতে চাইলে, উপজেলা নির্বাহী অফিসার সৈয়দ জাকির হাসান বলেন, এ ব্যাপারে তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা নেয়া হবে। এ ব্যাপারে জানতে, পরিবেশ অধিদপ্তর যশোরের উপ-পরিচালক সাঈদ আনোয়ারের মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তা বন্ধ পাওয়া যায়। যে কারনে তার বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।
খুলনা গেজেট/এমএইচবি