মার্স রোভার পারসিভারেন্স লাল গ্রহের বুকে রহস্যময় ডোনাট আকৃতির শিলা আবিষ্কার করেছে। নাসা অনুসারে ২০২০ সালের জুলাই মাসে লঞ্চ করা মার্স পারসিভারেন্স রোভারটি গ্রহের ২৮ মাইল-প্রশস্ত জেজেরো ক্রেটারে জীবনের লক্ষণ আছে কিনা তা অনুসন্ধান করে চলেছে। রোভারটি মঙ্গল মিশনের মাধ্যমে লাল গ্রহের বুক থেকে শিলা এবং মাটির রেগোলিথ বলা হয়) নমুনা সংগ্রহ করে চলেছে। নমুনা সংগ্রহের সময়েই মঙ্গলের বুকে ধরা পড়েছে রহস্যময় ‘ডোনাট’। আসলে মঙ্গল গ্রহের এই “ডোনাট” হল সুপারক্যাম রিমোট মাইক্রো-ইমেজার দ্বারা ক্যাপচার করা জেজেরো ক্রেটার ব-দ্বীপ থেকে প্রায় ১০০ মিটার দূরে অবস্থিত একটি বড় শিলা।
অ্যারিজোনার স্কুল অফ আর্থ অ্যান্ড স্পেস এক্সপ্লোরেশনের সহকারী গবেষণা বিজ্ঞানী জিম রাইস বলেছেন, গবেষক দল রোভারটিকে ডোনাট-আকৃতির শিলার কাছাকাছি যেতে দেয়নি, তাই এর সঠিক মাপ এবং উৎস অজানা। ১৪ জুন প্রথম পাথরটি বিজ্ঞানীদের নজরে আসে। এই শিলা কোথা থেকে এসেছে সে সম্পর্কে বিজ্ঞানীদের মধ্যে নানারকম অনুমান রয়েছে। রাইস বলছেন, “এটি একটি উল্কাপিন্ড হতে পারে, তবে সে ব্যাপারে আমি ১০০% নিশ্চিত নই।
এটি বলার কারণ হল, আমরা যে অঞ্চলে আছি সেখানে প্রচুর পাথর দেখতে পাচ্ছি যেগুলি বেশ ফাঁপা আকৃতির।
“এই অঞ্চলের সাধারণ শিলাগুলি হল পাললিক বেলেপাথর যা সম্ভবত কয়েক বিলিয়ন বছর পুরানো। বিজ্ঞানীদের অনুমান, এই পাথরগুলি নদী চ্যানেল নেরেটভা ভ্যালিস দ্বারা বন্যার মাধ্যমে হয়তো এসেছিলো। নদীপথ সম্ভবত অন্য এলাকা থেকে ডোনাট আকৃতির পাথর নিয়ে এসেছে বলে মনে করেন রাইস। শিলাটি ২৫ সেন্টিমিটার বড়, তবে ঠিক কতটা বড় তা অজানা।
তিনি আরও যোগ করেছেন যে আবহাওয়ার কারণে এটি ক্ষয়প্রাপ্ত হওয়ার আগে ডোনাট আকৃতির শিলাটি হয়তো আরো বড় ছিলো। বায়ু ধীরে ধীরে যে কোনও ছোট গর্ত বা গহ্বরকে বড় করতে পারে।
এসইটিআই ইনস্টিটিউটের একজন সিনিয়র গ্রহ বিজ্ঞানী প্যাসকেল লি বলেছেন, মঙ্গল গ্রহে উল্কাপাতের অতীত রেকর্ড দেখে তিনি মনে করেন শিলাটি একটি উল্কা হতে পারে। এই ক্ষেত্রে, মঙ্গল গ্রহের বায়ুমণ্ডল মারফত শিলাটি ক্ষয় পেয়ে ডোনাট আকৃতির রূপ নিয়ে থাকতে পারে। এটাও সম্ভব যে শিলাটি একটি বড় গ্রহাণুর প্রভাবে মঙ্গলের বুকে আছড়ে পড়তে পারে, যাকে ইজেক্টা ব্লক বলা হয়। ‘ডোনাট’ একমাত্র শিলা নয় যা লাল গ্রহে পাওয়া গেছে। ২০১৪ সালে, নাসার Opportunity রোভার একটি ছোট শিলা দেখেছিল যা বাইরের দিকে সাদা, ভেতরটা লাল রঙের অনেকটা জেলি ডোনাটের মতো।
সূত্র: ntd.com
খুলনা গেজেট/এমএম