সাতক্ষীরায় সরকারের রাজস্ব আয়ের সবচেয়ে বড় উৎস ভোমরা স্থলবন্দর। এই বন্দরকে অস্থিতিশীল সৃষ্টিকারীদের কোনভাবেই ছাড় দেয়া হবে না। রোববার (১২ মে) সকালে সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হুমায়ুন কবিরের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত জেলা আইন শৃঙ্খলা কমিটির সভায় বক্তারা এসব কথা বলেন।
জেলা আইন শৃঙ্খলা কমিটির সভায় বক্তব্য রাখেন, সাতক্ষীরা-১ আসনের সংসদ সদস্য ফিরোজ আহমেদ স্বপন, সাতক্ষীরা-২ আসনের সংসদ সদস্য মো. আশরাফুজ্জামান আশু, সংরক্ষিত নারী আসনের সংসদ সদস্য লায়লা পারভীন সেঁজুতি, জেলা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. সজীব খান, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা এ কে ফজলুল হক, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মো. নজরুল ইসলাম, জেলা বাস মিনিবাস মালিক সমিতির সভাপতি ও জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা অধ্যক্ষ আবু আহমেদ, সরকারি কলেজের উপাধ্যক্ষ আল মোস্তাসিম বিল্লাহ, সরকারী মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ বাসুদেব কুমার বসু, পৌরসভার ভারপ্রাপ্ত মেয়র কাজী ফিরোজ হাসান, সাতক্ষীরাস্থ বিজিবি ৩৩ ব্যাটালিয়নের অফিসার মাসুদ, জেলা তথ্য অফিসার মো. জাহারুল ইসলাম প্রমুখ।
সভায় জেলার সকল উপজেলার নির্বাহী অফিসার, র্যাব, জেলা কারাগার, পানি উন্নয়ন বোর্ড, জেলা প্রাণী সম্পদ অধিদপ্তর, জেলা আনসার ব্যাটালিয়ন, জেলা পুলিশিং কমিটি, জেলার বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় কর্মরতত সাংবাদিকবৃন্দসহ জেলার বিভিন্ন সরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
সভায় সাতক্ষীরা জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মো. নজরুল ইসলাম বলেন, ভোমরা স্থলবন্দরে অচলাবস্থা সৃষ্টির পাঁয়তারা চলছে। কোনভাবে সেটা করতে দেওয়া হবে না। তাদেরকে কঠোরভাবে দমন করা হবে। শহরের ভিতরের রাস্তাগুলো প্রশস্থ করতে যেয়ে ক্ষদ্র ব্যবসায়ীদের যাতে কোন ক্ষতি না হয় সেদিকটা আমলে নিতে হবে। ঈদের আগে তাদের উচ্ছেদ না করে তাদের কিছুটা সময় দেওয়া দরকার।
এমপি মো আশরাফুজ্জামান আশু বলেন, ভোমরা স্থলবন্দরকে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টিকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর হস্তে দমন করতে হবে। জেলায় চলমান বাকি উপজেলা পরিষদ নির্বাচনগুলো সঠিক ও সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে হবে। জেলার রাস্তাগুলোর স্থায়ীত্ব করতে ট্রাকে অতিরিক্ত লোড নিয়ন্ত্রণ করতে ট্রাফিক বিভাগকে আরো তৎপর হতে হবে। জেলার যেসকল প্রতিষ্ঠান নির্বাচন ছাড়াই চলছে সেসকল প্রতিষ্ঠানে অবিলম্বে নির্বাচনের দিনক্ষণ টিক করে দিতে হবে।
এমপি লায়লা পারভীন সেঁজুতি বলেন, সাতক্ষীরা জেলাকে ব্যান্ডিং করতে প্রবেশ পথে একটি দৃষ্টি-নন্দন গেট তৈরী করতে হবে। পৌর শহরের রাস্তা গুলোর যে বেহাল দশা তা থেকে রেহাই পেতে অবিলম্বে সংস্কার করার আহবান জানান।
সাতক্ষীরা-১ আসেনর ফিরোজ আহমেদ স্বপন এমপি বলেন, ভোমরা স্থলবন্দরে অস্থিতিসৃষ্টি কারী যেই হোক তাকে ছাড় দেওয়া হবে না। তাছাড়া স্থলবন্দরটির জিরো পয়েন্টে চাঁদাবাজি অবিলম্বে বন্ধ করতে প্রশাসনকে কঠোর থেকে কঠোর হওয়ার আহবান জানান।
তিনি আরো বলেন, জেলার বেতনা, মরিচ্চাপ, কপোতাক্ষ নদীগুলো বাঁচাতে টিআরএম বাস্তবায়ন করতে হবে। সরকার নদী বাঁচাতে খনন করছেন। কিন্তু যেনতেন ড্রেজার মেশিন দিয়ে খনন করা হচ্ছে। নদী খননের ড্রেজার মেশিন দিয়ে নদীগুলো খনন করতে হবে। অন্য কোন ড্রেজার মিশন দিয়ে নয়। তাহলে নদীগুলোর আবার তার হারানো যৌবন ফিরে পাবে। সরকারের গ্রাম হবে শহরের আওতায় গ্রামীণ সড়কগুলোকে টেকসই করতে আমাদের বাস্তবমূখী কাজ করতে হবে।
সভায় চলতি আম মৌসুমে ক্যালেন্ডার অনুযায়ী নিরাপদ আম সংগ্রহ ও পরিবহনে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া, শহরের প্রাণ সায়রের খালকে প্রবাহমান করতে সুইস গেটের সাথে সংযুক্ত করা, শহরে যানজট নিরসনে দিনের বেলায় ট্রাক চলাচল বন্ধের বিষয়টি জোর দেওয়া, শহরে যানজট সৃষ্টিকারী অনিবন্ধিত ইজিবাইকগুলো শহরের বাইরে চলাচলের জন্য নির্দেশ দেওয়া, জেলার স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীদের উপর নজর রাখা যাতে তারা মাদকে আসক্তি না হয়, নারীদের ইভটিজিংকারী বখাটেদের আইনের আওতায় আনাসহ জেলার বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কর্মকান্ডে সকলে সহযোগিতার আহবান জানান বক্তারা।
খুলনা গেজেট/এএজে