দিঘলিয়াবাসীর বহু আকাঙ্ক্ষিত ভৈরব সেতুর এপ্রোচ রোড অথবা পিলার বসানোর জন্য ভাঙা হতে পারে ৭৫ বছর আগে স্থাপিত আরডিএন মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় এবং সেই সাথে ভাঙ্গা হতে পারে উপজেলা রিসোর্স সেন্টারটিও।
আরডিএন মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টি প্রস্তাবিত ভৈরব ব্রিজের পূর্বপাশ অর্থাৎ নগরঘাট খেয়াঘাট পার হয়ে দিঘলিয়া উপজেলা পরিষদ যেতে রাস্তার ডান দিকে দেয়াড়ায় অবস্থিত। ১৯৪৬ সালে বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠিত হয়। বর্তমানে সাড়ে ৪শ’ ছাত্র/ছাত্রী পড়াশুনা করছে। অন্যদিকে একই বিদ্যালয়ের সাথে অবস্থিত প্রাথমিক শিক্ষা উন্নয়ন কর্মসূচী-২ (পিইডিপি-২) এর আওতায় ২০০৮ সালে দিঘলিয়া উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষকদের প্রশিক্ষণের জন্য উপজেলা রিসোর্স সেন্টারটি নির্মিত হয়।
খুলনা সড়ক ও জনপদ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ আনিসুজ্জামান মাসুদ মুঠোফোনে এ প্রতিবেদককে বলেন, “আমাদের চেষ্টা ছিলো বিদ্যলয়টি রেখে এপ্রোচ রোড করার। কিন্ত সর্বশেষ বিদ্যালয়টি ভেঙ্গে এপ্রোচ রোড তৈরির জন্য লে-আউট দিতে হচ্ছে। আগামী ২/১ সপ্তাহের মধ্যে আমরা সওজ থেকে জমি অধিগ্রহণের প্রস্তাবনা খুলনা জেলা প্রশাসকের এল এ শাখায় জমা দিবো। বিষয়টি নিয়ে আমরা গত ২৫ ফেব্রুয়ারি বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ মাহাবুবুল আলম, উপজেলা চেয়ারম্যান শেখ মারুফুল ইসলাম, উপজেলা শিক্ষা অফিসার শাহানাজ বেগমের সঙ্গে আলোচনা করেছি।
এব্যাপারে দিঘলিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ মাহাবুবুল আলম এ প্রতিবেদককে বলেন, “সরকারি প্রতিষ্ঠানটিকে না ভেঙ্গে সওজ পার্শ্ববর্তী ব্যক্তিমালিকানাধীন জমির উপর দিয়ে এপ্রোচ রোড অথবা পিলার বসাতে পারে। সে ক্ষেত্রে এপ্রোচ রোডের সৌন্দর্য কিংবা বিশেষ কোন ক্ষতি হবে বলে আমি মনে করি না।” তিনি আরও বলেন, “বিদ্যালয়টিকে অক্ষত রেখে এপ্রোচ রোড কিংবা পিলার রাস্তার বাম দিক দিয়ে করা যায় কি না এ ব্যাপারে আমি সওজের নির্বাহী প্রকৌশলীর সঙ্গে কথা বলবো।”
বিশ্বস্ত সূত্রে জানা যায়, প্রতিষ্ঠানটি ভাঙ্গা পড়লে সে ক্ষেত্রে বিকল্প উপায় হিসাবে বিদ্যালয়ের ছাত্র/ছাত্রীদের পার্শ্ববর্তী আয়তুন্নেছা মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ে স্থানান্তর এবং রিসোর্স সেন্টারের কার্যক্রম উপজেলা পরিষদে স্থানান্তর হওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে।
দিঘলিয়া উপজেলা চেয়ারম্যান শেখ মারুফুল ইসলাম বলেন, “উপজেলা সদরের ঐতিহ্যবাহী এবং পুরানো এই বিদ্যালয়টিকে না ভেঙ্গে অক্ষত রেখে বিকল্প উপায়ে কিভাবে সেতুর এপ্রোচ সড়ক তৈরি করা যায় সে ব্যাপারে আমি এবং উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। ইতিমধ্যে আমরা বিষয়টি নিয়ে সওজের নির্বাহী প্রকৌশলীর সংগে কথা বলেছি। প্রয়োজন হলে আবারও কথা বলবো।”
আরডিএন মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনে দেয়াড়া ইউনাইটেড ক্লাব মাঠ প্রাঙ্গণে ভৈরব সেতুর ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ‘ওয়াহিদ কনস্ট্রাকশন’ অফিস বেজক্যাম্প প্লাস স্টক ইয়ার্ড নির্মাণ করেছে। ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান ওই ক্লাব কর্তৃপক্ষের সঙ্গে মাঠটি ব্যবহারের জন্য ৫ বছর মেয়াদী চুক্তি করেছে।
এদিকে ঐতিহ্যবাহী এবং পুরানো এই বিদ্যালয়টি ভাঙ্গার সংবাদে বিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা হতাশা প্রকাশ করেছেন। এছাড়া বিদ্যালয়টি ভাঙ্গার সংবাদে এলাকাবাসীর মধ্যেও মিশ্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে।
খুলনা গেজেট/এনএম