মিথ্যে তথ্য দিয়ে মুক্তিযোদ্ধা কোটায় চাকুরি গ্রহণ করে সাতক্ষীরা সদর খাদ্য গুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ও খাদ্য পরিদর্শক হিসাবে কর্মরত আছেন এসএম আমিনুর রহমান বুলবুল। সর্বশেষ বীর মুক্তিযোদ্ধাদের যাচাই বাছাইকালে তার পিতা আব্দুল করিম একজন অমুক্তিযোদ্ধা হিসাবে প্রমাণিত হয়েছেন। এরপরও ভূয়া মুক্তিযোদ্ধার সনদে এখনো বহলতবিয়তে তিনি চাকরি করছেন। এবিষয়ে প্রতিকার চেয়ে জনৈক আবুল কালাম খ্যাদ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব বরাবর একটি অভিযোগ দাখিল করেছেন।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, যশোরের কেশবপুর উপজেলার পাঁচবাকাবশি গ্রামের এস এম আব্দুল কমির এর ছেলে এস এম আমিনুর রহমান বুলবুল মুক্তিযোদ্ধা কোটায় খাদ্য অধিদপ্তরের চাকুরীতে যোগদান করেছেন। অদ্যবধি তিনি মুক্তিযোদ্ধা কোটার সকল সুযোগ সুবিধা গ্রহণ করছেন। সম্প্রতি জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিলে কর্তৃক বীর মুক্তিযোদ্ধা যাচাই বাছাই এর সময় উপযুক্ত প্রমান দাখিল করতে না পারায় কমিটির চার সদস্য বীর মুক্তিযোদা কাজী রফিকুল ইসলাম (মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিল কর্তৃক মনোনিত সভাপতি) বীর মক্তিযোদ্ধা তৌতিদুরজ্জামান, (সংসদ সদস্য কর্তৃক মনোনিত সদস্য), বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. ফজলুর রহমান (জেলা প্রশাসক কর্তৃক মনোনিত সদস্য) ও কেশবপুর উপজেলা নির্বাহী আফিসার এস এম আরাফাত হোসেন এর যৌথ স্বাক্ষরে এস এম আমিনুর রহমান এর পিতা আব্দুল করিমকে মুক্তিযোদ্ধা নন মর্মে সুপারিশ করেছেন। এর প্রেক্ষিতে ২০১৯ সালের ২০ মে কেশবপুর উপজেলা কমান্ডার কর্তৃক আবেদনে ভুয়া মুক্তিযোদ্ধাদের নাম গেজেট থেকে বাদ দেওয়ার যে প্রস্তাব দেওয়া হয় তার ৪৭ নং ক্রমিকে আমিনুর রহমানের পিতা আব্দুল করিমের নাম দেখা যায়।
এছাড়া মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কেশবপুরের এক প্রত্যয়নে স্থানীয় রাজাকারের তালিকায় ৪নং ক্রমিকে আমিনূরের পিতা আব্দুল করিমের নাম রয়েছে। মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কেশবপুর অপর একটি পত্রে যে ১০ জন জাল সনদ ধারী বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলা হয় সেখানে ৪নং ক্রমিকে আমিনুর রহমানের পিতা আব্দুল করিমের নাম আছে। এছাড়া ইউনিয়ন ভিত্তিক রাজাকারের তালিকায় পাঁজিয়া ইউনিয়নে ১৩ নং ক্রমিকে আমিনুরের পিতা আব্দুল করিমের নাম রয়েছে। তার পরিপ্রেক্ষিতে ২৫/৩/২০২১ তারিখে মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রানালয় থেকে যে গেজেট প্রকাশ করা হয় তাতে আব্দুল করিমের নাম নেই। মুক্তিযোদ্ধাদের কেশবপুর উপজেলার পাঁজিয়া ইউনিয়নের তালিকার বিষয়টি নিয়ে সেই সময় কয়েকটি জাতীয় ও স্থানীয় পত্রিকায় খবর প্রকাশিত হয়। কাজেই মিথ্যা তথ্য দিয়ে ভূয়া মুক্তিযোদ্ধা সনদ অনুযায়ী চাকুরীতে প্রবেশ ও সুযোগ সুবিধা গ্রহণ নৈতিক অবঙ্খলন জনিত অন্যায়। এ সকল প্রমানাদী বিবেচনা করে এস এম আমিনুর রহমান বুলবুল এর গ্রহীত সকল সুযোগ সুবিধা ফেরত সহ তাকে সাময়ীক বরখাস্ত করে বিচারের আওতায় আনার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানানো হয়।
এবিষয় জানার জন্য সাতক্ষীরা সদর খাদ্য গুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ও খাদ্য পরিদর্শক এসএম আমিনুর রহমান বুলবুল এর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, বিষয়টি নিয়ে দুদকসহ বিভিন্ন সংস্থা তদন্ত করছে। আমার পিতার নামে আতউল গণি ওসমানি কর্তৃক ১০/২/১৯৭২ সালে স্বাক্ষরিত মুক্তিযোদ্ধার সনদ রয়েছে। এছাড়া উচ্চ আদালত থেকে এক রায়ে আমাদেরকে সব ধরনের সুযোগ সুবিধা দেওয়ার ব্যাপারে বলা আছে। আমার প্রতিপক্ষরা এনিয়ে অপপ্রচার চালাচ্ছে।
খুলনা গেজেট/এএজে