‘যশোরের দুঃখ’ ভবদহ পাড়ের মানুষ জলাবদ্ধতার স্থায়ী সমাধানের দাবিতে রবিবার থেকে লাগাতার অবস্থান কর্মসূচিতে বসছেন। যশোরের জেলা প্রশাসক অফিস চত্বরে শত শত নারী-পুরুষ এই কর্মসূচিতে অংশ নিয়েছেন। তাদের দাবি পানি উন্নয়ন বোর্ড ও প্রভাবশালী রাজনীতিকদের ‘টাকা কামানোর মেশিন’ করা হয়েছে ভবদহকে। তাদের এ অপতৎপরতা বন্ধ করে এক দফা টিআরএম বাস্তবায়নের দাবিতে এ অবস্থান কর্মসূচিতে বসছেন।
দীর্ঘদিন ধরে ভবদহ এলাকার জলাবদ্ধতার স্থায়ী সমাধানের দাবিতে আন্দোলন করে আসছে ভবদহ পানি নিষ্কাশন সংগ্রাম কমিটি। রবিবার দুপুর ১২টা থেকে শুরু হাওয়া এ অবস্থান কর্মসূচি সফল করতে বেশ কিছুদিন ধরে তারা গ্রামে গ্রামে প্রচারণা চালিয়েছেন। করেছেন উঠান বৈঠক ও হাট সভা। রবিরার থেকে শুরু হওয়া এ কর্মসূচি প্রতিদিন সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত চলবে।
একই দাবিতে এর আগে গত ২ জানুয়ারি প্রধানমন্ত্রী বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করা হয়। ওইদিনই দাবি মানা না হলে লাগাতার এই অবস্থান কর্মসূচি পালনের ঘোষণা দেয়া হয়।
ভবদহ পানি নিষ্কাশন সংগ্রাম কমিটির নেতাদের দাবি, ভবদহ অঞ্চলকে মহাবিপর্যয়ের হাত থেকে রক্ষা করতে পানি উন্নয়ন বোর্ড প্রস্তাবিত ‘ভবদহ ও তৎসংলগ্ন বিল এলাকার জলাবদ্ধতা দূরীকরণ’ প্রকল্প বাতিল করতে হবে। একই সাথে মাঘী পূর্ণিমার আগে বিল কপালিয়ায় টিআরএম চালু করতে হবে। টিআরএম প্রকল্প গ্রহণ না করে ভবদহ স্লুইচ গেট থেকে প্রায় ৫০-৬০ কিলোমিটার নদী মেরে ফেলা হয়েছে। এক্ষেত্রে পানিসম্পদ মন্ত্রণালয় ও পানি উন্নয়ন বোর্ড সরকারের নদী বাঁচানোর গৃহীত নীতির বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে। তারা জনগণকে স্থায়ী জলাবদ্ধতায় জিম্মি করে অর্থ লোপাটের স্থায়ী পরিকল্পনা ফেঁদেছে। সেই পরিকল্পনার অংশ হিসাবে সহজ ও পরীক্ষিত সমাধান টিআরএম না করার জন্য জেদ ধরেছে।
ভবদহ পানি নিষ্কাশন সংগ্রাম কমিটির প্রধান উপদেষ্টা ইকবাল কবির জাহিদ বলেন, পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়, পানি উন্নয়ন বোর্ড, দুর্বৃত্ত রাজনৈতিক নেতাদের যোগসাজসে ভবদহবাসীকে ডুবিয়ে মারার একের পর এক ষড়যন্ত্র অব্যাহত রয়েছে। আমরা দাবি করছি আমডাঙ্গা খাল প্রশস্থ করে খনন, বিল কপালিয়ায় টিআরএম এবং পর্যায়ক্রমে বিলে বিলে টিআরএম চালু করে নদীর নাব্যতা রক্ষা ও জলাবদ্ধতার অবসান এবং উজানে পদ্মা-মাথাভাঙ্গা-ভৈরবের নদী সংযোগের সাথে মুক্তেশ্বরী নদীকে যুক্ত করে প্রবাহমান করা হোক। তা হলেই সমস্যার সমাধান হবে। কিন্তু ২০১৩ সাল থেকে প্রতিশ্রুতি ভঙ্গের মাধ্যমে ক্ষতিগ্রস্ত জনগণের সাথে অব্যাহত প্রতারণা করা হচ্ছে। এ জন্য দাবি আদায়ে আমরা এই লাগাতার অবস্থান কর্মসূচি পালন শুরু করেছি।
খুলনা গেজেট/এনএম