খুলনা, বাংলাদেশ | ২৪ আশ্বিন, ১৪৩১ | ৯ অক্টোবর, ২০২৪

Breaking News

  ড. শেখ আব্দুল রশিদকে মন্ত্রিপরিষদ সচিব হিসেবে ২ বছরের চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ
  দেশে ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুতে ৫ জনের মৃত্যু, হাসপাতালে ভর্তি ৯৮১
  ছয় মামলায় সাবের হোসেনের জামিন, কারামুক্তিতে বাধা নেই
  বাংলাদেশী ৫ জেলেকে ধরে নিয়ে গেছে আরকান আর্মি

ভদ্রা নদীর ব্রীজটি পরিত্যক্ত ঘোষণার পরও চলছে ভারি যানবাহন, দুর্ঘটনার আশঙ্কা

গাজী আব্দুল কুদ্দুস, ডুমুরিয়া

২০১৮ সালে ডুমুরিয়ার চুকনগর ভদ্রা নদীর উপর নির্মিত ব্রীজটি তলদেশ থেকে মাঝ বরাবর ফাটল ধরে। এ ফাটলের কারণে সে সময় তৎকালীন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোঃ আশেক হাসান দুর্ঘটনা এড়াতে ব্রীজটি পরিত্যক্ত ঘোষণা করে এবং ব্রীজের দুই মাথায় মাঝ বরাবর পিলার দেয়াসহ সাইন বোর্ড টানিয়ে দেয়। কিন্তু সে সব এখন অতীত। বর্তমানে ব্রীজটি ভেঙে যেকোন মুহুর্তে বড় ধরণের দুর্ঘটনা ঘটার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।

এতে চুকনগরের সাথে শিল্পনগরী নওয়াপাড়ার যোগাযোগ ব্যবস্থা বিচ্ছিন্ন হওয়ার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। ফলে খুলনা ও সাতক্ষীরা জেলার ব্যবসায়ীদের সাথে যশোর জেলার ব্যবসায়ীদের (তিন জেলার মানুষের) যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়বে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এ কারণে চরম ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে উভয় জেলার ব্যবসায়ীসহ সাধারণ জনগণ।

১৯৮৮ সালে ইউএসএইড এর সহযোগীতায় আমেরিকান সরকারের অর্থায়নে বাংলাদেশ ত্রাণ ও দুর্যোগ মন্ত্রালয়ের অধীনে ডিজি রিলিফ ডিপারমেন্ট মাধ্যমে মাত্র ৫টন মালামাল বহন ক্ষমতা সম্পন্ন এই ব্রীজটি নির্মাণ করা হয়। প্রাথমিক পর্যায়ে ব্রীজটি ব্যবহারে উক্ত নিয়ম কানুন মানা হলেও শোলগাতিয়া ব্রীজটি নির্মাণের পর নওয়াপাড়া থেকে বড় বড় সার, সিমেন্ট, রড বোঝায় গাড়ী, বেনাপোল ও ভোমরা স্থল বন্দর থেকে বড় বড় পাথর বোঝায় গাড়ি, ক্লিংকার বাহী গাড়ী, পেয়াজ রসুন বোঝায় গাড়ী এর উপর দিয়ে চলাচল করছে। অর্থাৎ ৪০ থেকে ৫০ টন পর্যন্ত মালামালপূর্ণ গাড়ী এর উপর দিয়ে প্রতিনিয়ত চলাচল করছে। কিন্তু তারা অনেকেই জানে না যে ব্রীজটির তলদেশে ফাটল ধরেছে।

বর্তমানে ব্রীজটি চরম বিপদসীমা অতিক্রম করেছে। প্রচন্ড ঝুঁকি নিয়ে যানবাহন গুলো ব্রীজ পার হচ্ছে। ২০১৮ সালে ব্রীজের দুই মাথায় মাঝখানে বিপদ সীমার চিহৃ দিয়ে দুটি পিলার জমিয়ে দেয়া হয়েছিল। যাতে ভারী যানবাহন ব্রীজের উপর দিয়ে পার হতে না পারে। কারণ যে কোন সময় ব্রীজটির মুল অবকাঠামো ভেঙ্গে নদীতে পড়তে পারে বলে তাদের ধারণা। কিন্ত সময়ের ব্যবধানে বিপদ সীমার চিহৃ হারিয়ে গেছে।

এদিকে প্রায় ৩ বছর অতিবাহিত হলেও ব্রীজটি সংস্কারের কোন উদ্যোগ গ্রহণ না করায় শিল্পনগরী নওয়াপাড়ার সাথে যোগাযোগ ব্যবস্থা একেবারে বিচ্ছিন্ন হওয়ার শঙ্কায় এ অঞ্চলের ব্যবসায়ীদের মাঝে হতাশা বিরাজ করছে। তবে অনেকে ব্রীজটির নড়বড়ে অবস্থা অনুভব করে নিরুপায় হয়ে যশোর হয়ে অতিরিক্ত যানবাহন খরচ দিয়ে মালামাল আনা নেয়া করছেন। এতে তারা লাভের পরিবর্তে লোকসানের সম্মুখীন হচ্ছে। তবে এ অবস্থা চলতে থাকলে ব্রীজটি যে কোন মুহুর্তে ভেঙে পড়ে খুলনা ও সাতক্ষীরা জেলা মানুষের সাথে যশোর জেলার মানুষের যোগাযোগ ব্যবস্থা বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়বে।

এ ব্যাপারে বাংলাদেশ পানি কমিটির সভাপতি অধ্যক্ষ এবিএম শফিকুল ইসলাম বলেন, গত ৩ বছর আগে ব্রীজটির তলদেশ মাঝ বরাবর ফাটল ধরায় পানি উন্নয়ন বোর্ডের চিপ ইজ্ঞিনিয়ার নুরুল আলাকে ডেকে আমি এডে আনি। তখন আমি দাবি জানিয়েছিলাম ব্রীজটি সংস্কার করার জন্য। কিন্তু তারা এ বিষয়টি নিয়ে কোন কর্ণপাত না করায় আজ ব্রীজটি চলাচলে অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। তাই আমাদের দাবি এই ব্রীজটি খুলনা, যশোর ও সাতক্ষীরা এই ৩টি জেলার সংযোগস্থল হওয়ার একটি বড়, টেকসই ও মানসম্পন্ন ব্রীজ অনতিবিলম্বে করতে হবে।

স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান শেখ হেলাল উদ্দীন বলেন, ব্রীজটির তলদেশ থেকে ফাঁটলের বিষয়টি জানি। তাই উদ্ধর্তন কর্তপক্ষের কাছে আমাদের জোর দাবি যতদ্রুত সম্ভব ব্রীজটি ভেঙে নতুন একটি ব্রীজ তৈরি করা হোক।

 

খুলনা গেজেট/এনএম




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!