নড়াইলের লোহাগড়া সরকারি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের অদম্য মেধাবী শিক্ষার্থী ব্লাড ক্যান্সারকে জয় করে এবছর এসএসসি পরীক্ষায় জিপিএ-৫ ( গোল্ডেন এ প্লাস) প্রাপ্ত হয়েছেন। তার এ সাফল্যে খুশি অবিভাবক, স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষার্থী, সহপাঠী ও এলাকাবাসী। পিতৃহারা পুজা সরকার ২০১৮ সাল থেকে ব্লাড ক্যান্সারে আক্রান্ত। তবুও হাল ছাড়েননি, অদম্য ইচ্ছাশক্তি ও মনোবল নিয়ে চালিয়ে গেছেন তার লেখাপড়া। অদম্য মেধাবী শিক্ষার্থী পূজা সরকারের বাড়ি উপজেলার জয়পুর গ্রামে।
পুজা বলেন, আমার এ সাফল্য ও চলার পথ মসৃণ ছিল না, একদিকে চিকিৎসা আরেকদিকে লেখাপড়া চালিয়ে গেছি। সকল প্রকার চিকিৎসা ও লেখাপড়ার খরচ আমার স্কুলের শিক্ষক ও সহপাঠীরাই বহন করেছে। তারা আমাকে সাহস যুগিয়েছে দিয়েছে উৎসাহ অনুপ্রেরণা। বিশেষ করে আমার প্রধান শিক্ষক এস এম হায়াতুজ্জামান স্যার প্রতিদিনই আমার সার্বিক খোঁজ খবর নিতেন। লেখাপড়া চিকিৎসার জন্য সকল প্রকার সহযোগিতা করেছেন। আমার শিক্ষকদের সহযোগিতাই আমার এ সাফল্য। ভবিষ্যতে আমি ডাক্তার হয়ে মানুষের সেবা করতে চাই।
লোহাগড়া সরকারি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের সুযোগ্য প্রধান শিক্ষক এস এম হায়াতুজ্জামান বলেন, সকল শিক্ষক শিক্ষিকার অক্লান্ত পরিশ্রম ও শিক্ষক ছাত্র-ছাত্রীদের ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র টাকা দিয়ে পূজা সরকারকে সাহায্য করে তার লেখাপড়া ও চিকিৎসা চালিয়েছি। বিনা বেতনে ও শতভাগ ফ্রীতে প্রাইভেট পড়িয়েছেন শিক্ষকরা। সব সময় পূজাকে নিজের সন্তান মনে করে তাকে উৎসাহ দিয়েছি। ক্যান্সার জয় করে আজ সে এসএসসিতে বিজ্ঞান বিভাগ থেকে গোল্ডেন এ প্লাস পেয়ে বিদ্যালয় ও এলাকার মুখ উজ্জ্বল করেছে। পুজার মনোবল ও ইচ্ছাশক্তির কারণে আজ সে কাঙ্ক্ষিত ফলাফল করতে পেরেছে।
ফল প্রকাশের দিনেই পূজাকে অভিনন্দন জানাতে লোহাগড়া সরকারি পাইলট উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক এস এম হায়াতুজ্জামান ও অন্যান্য শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা তার বাড়িতে ফুলের তোড়া ও মিষ্টি নিয়ে শুভেচ্ছা জানান। এতে পূজা অত্যন্ত গর্বিত ও আনন্দিত এবং সে বলেন শিক্ষকের আশীর্বাদ আমাকে ভবিষ্যতে অনেক উচ্চ স্থানে পৌঁছে দিবে বলে আমি মনে করি। আর আমার শিক্ষক শিক্ষিকার অবদান ও ঋণ আমি কখনোই শোধ করতে পারবো না।
খুলনা গেজেট/এনএম