খুলনা, বাংলাদেশ | ৫ জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩১ | ১৯ মে, ২০২৪

Breaking News

  নুসেইরাত শরণার্থী শিবিরে ইসরায়েলি হামলা, নিহত ১৭
পরিচয় আড়াল করতে চুল ছোট ও রঙ পরিবর্তন

বোরকা পরে নৌকায় ইছামতি নদী পাড়ি দেয়ার চেষ্টা করে সাহেদ

সাতক্ষীরা প্রতিনিধি

করোনা পরীক্ষায় জালিয়াতির ঘটনায় অবশেষে গ্রেপ্তার হলেন রিজেন্ট গ্রুপের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ সাহেদ। বুধবার (১৫ জুলাই) ভোর ৫টা ১০ মিনিটে সাতক্ষীরার দেবহাটা উপজেলার কোমরপুর সীমান্তের লাবণ্যবতী নদীর ব্রীজ এলাকা থেকে একটি অবৈধ অস্ত্রসহ তাকে গ্রেফতার করা হয়। পরিচয় আড়াল করতে, চুল ছোট ও রঙ পরিবর্তন করে সাহেদ। বোরকা পরে নৌকায় ইছামতি নদী পাড়ি দেয়ার চেষ্টা করে। শাহেদকে হেলিকপ্টার ঢাকায় নেয়ার আগে সাতক্ষীরা স্টেডিয়ামে সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে এ তথ্য জানান র‌্যাব কর্মকর্তা কর্নেল তোফায়েল।

তিনি জানান, করোনা পরীক্ষার ভুয়া রিপোর্ট দেওয়াসহ নানা ভয়াবহ প্রতারণার দায়ে অভিযুক্ত প্রধান পলাতক আসামি রিজেন্ট হাসপাতালের চেয়ারম্যান সাহেদ করিমকে অস্ত্রসহ গ্রেফতার করা হয়েছে। বোরকা পরে নারীর ছদ্ববেশ নিয়ে চোরাচালানী ও ঘাট মালিকদের সহযোগিতায় সে একটি নৌকায় করে সীমান্ত নদী ইছামিত পার হয়ে ভারতে যাওয়ার চেষ্টা করছিল। এজন্য নৌকার অপেক্ষায় সে সাতক্ষীরার দেবহাটা উপজেলার কোমরপুর সীমান্তের লাবণ্যবতী নদীর ব্রীজ এলাকায় অবস্থান করছিল। তার অবস্থান নিশ্চিত হয়ে র‌্যাবের গোয়েন্দা পরিচালক লেফটেন্যান্ট কর্নেল সারওয়ার বিন কাশেম এর নেতৃত্বে র‌্যাব সদস্যরা অভিযান চালিয়ে বোরকা পরা অবস্থায় ভোর ৫টা ১০ মিনিটে তাকে গ্রেফতার করে। এসময় তার কাছ থেকে তিন রাউন্ড গুলিসহ একটি পিস্তল একটি ম্যাগজিন উদ্ধার করা হয়। র‌্যাবের উপস্থিতি টের পেয়ে সাহেদকে সীমান্তের ইছামতি নদী পার করাতে আসা নৌকার মাঝি ও অন্যরা পালিয়ে যায়।

তিনি আরো বলেন, গ্রেফতার এড়াতে ঘন ঘন অবস্থান পরিবর্তন করছিলেন সাহেদ করিম। একই সাথে চুল কালো করে চেহারার পরিবর্তন আনতে গোফও কেটে ফেলেন তিনি। সীমান্ত পথে সাহেদ করিমকে পালানোয় সহযোগিতাকারীদের খুঁঁজছে র‌্যাব। এরই মধ্যে বাচ্চু দালাল নামে একজনের নাম উঠে এসেছে। যিনি বর্ডার ক্রসিংয়ে মানুষকে সহযোগিতা করে থাকেন। পরে তাকে হেলিকপ্টার যোগে ঢাকায় নেওয়া হয়।

প্রসঙ্গত, করোনায় আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসার নামে প্রতারণা এবং ‘করোনা উপসর্গ নিয়ে হাসপাতালে আসা এবং বাড়িতে থাকা রোগীদের করোনার নমুনা সংগ্রহ করে ভুয়া রিপোর্ট দেয়ার অভিযোগে ৬ জুলাই র‌্যাবের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সারোয়ার আলমের প্রথমে উত্তরার ১১ নম্বর সেক্টরের ১৭ নম্বর সড়কে অবস্থিত রিজেন্ট হাসপাতালে অভিযান চালায়। সেখান থেকে ৮ জনকে আটকের পর র‌্যাবের দলটি মিরপুরে রিজেন্টের অন্য শাখায় অভিযান পরিচালনা করে।

পরদিন উত্তরা পশ্চিম থানায় র‌্যাব বাদী হয়ে সাহেদ করিমকে এক নম্বর আসামি করে মামলা করে। এরপর থেকে সাহেদ পলাতক ছিলেন। সাহেদকে গ্রেফতারে দেশের বিভিন্ন সীমান্ত নজরদারিতে রাখে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। সাহেদ করিমকে ধরতে মঙ্গলবার সকাল থেকে সাতক্ষীরায় পুলিশ-বিজিবিসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ব্যাপক তৎপরতা শুরু করেছে। সে যাতে কোন ভাবেই সাতক্ষীরা সীমান্ত দিয়ে ভারতে পালিয়ে যেতে না পারে, সেজন্য জেলাব্যাপী চলে চিরুনি অভিযান। এসময় জেলা পুলিশ সীমান্তে যাওয়ার পথে বিভিন্ন গাড়ী তল্লাশী চালায়। একই সাথে সীমান্ত রক্ষী বাহিনী বিজিবির পক্ষে সীমান্তে টহল জোরদার করা হয়। গোয়েন্দা নজরদারিও জোরদার করা হয়। তল্লাশী করা হয় সন্দেহজনক মাইক্রো-প্রাইভেট। কোন ভাবেই যাতে সাহেদ ভারতে পালিয়ে যেতে না পারে সে জন্য জোরালো অভিযান চালানো হয়। অবশেষে র‌্যাব সাতক্ষীরার দেবহাটা উপজেলার কোমরপুর সীমান্ত থেকে সাহেদকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়।

খুলনা গেজেট/এমএম




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!