দিনভর রোদ-বৃষ্টির লুকোচুরি। মেঘে ঢেকে যাওয়া আকাশের নিচে শুরু সকালের প্রথম সেশন হলো ঠিকঠাক। এরপর ঝুম বৃষ্টি। বন্ধ হয়ে গেল খেলা। পুরো এক সেশন ভেসে গেল আড়াই ঘণ্টার বৃষ্টিতে। শেষ বিকেলে দারুণ বল করলেন বাংলাদেশের বোলাররা। টার্ন, বাউন্স, সুইং; পাওয়া গেল সবই। বেশ কয়েক বার জাগল উইকেট পাওয়ার দারুণ সম্ভাবনা। কিন্তু পাওয়া গেল না একটির বেশি উইকেটের দেখা। আফসোস নিয়েই দিনশেষ করতে হলো বাংলাদেশকে।
বৃষ্টির পর খেলা শুরু হলে জমাট রক্ষণ শ্রীলঙ্কার দুই ব্যাটসম্যান অ্যাঞ্জেলো ম্যাথিউস আর ধনঞ্জয়া ডি সিলভার। তাদের ব্যাটিং কৌশলের কাছে অসহায় হয়ে পড়েন বাংলাদেশি বোলাররা। এরপর ৮১তম ওভারে নতুন বল পেয়ে যেন জ্বলে উঠলেন স্বাগতিক বোলাররা। সাকিব আল হাসান ফেরালেন ধনঞ্জয়াকে। রঙ হারানো দিনের শেষ বিকেলে পেসার এবাদত যেন গোলা ছুঁড়তে থাকেন। এতে প্রতিপক্ষ শিবিরে খানিক ভীতি ছড়িয়েছেন বাংলাদেশ দল।
জমে যাওয়া গ্যালারিতে হঠাত করেই আবার প্রাণের সঞ্চার। দিনের খেলা শেষের আগে অর্ধশতক করা ধনঞ্জয়াকে আউট করার পাশাপাশি বল হাতে ভীতি ছড়ানোর স্বস্তি নিয়ে তৃতীয় দিন শেষ করেছে স্বাগতিকরা। দিন শেষে ৫ উইকেট হারিয়ে স্কোর বোর্ডে ২৮২ রান জমা করেছে সফরকারীরা। প্রথম ইনিংসে বাংলাদেশ থেকে এখনো ৮৩ রানে পিছিয়ে তারা। ম্যাথিউস ৫৮ এবং দীনেশ চান্দিমাল ১০ রান নিয়ে বৃহস্পতিবার চতুর্থ দিনের খেলা শুরু করবেন।
প্রথম সেশনের খেলার শেষের আগে নামা বৃষ্টিতে ভেসে যায় ঢাকা টেস্টের তৃতীয় দিনের দ্বিতীয় সেশন। তৃতীয় ও শেষ সেশন শুরু হয় এক ঘণ্টা দেরিতে। এজন্য দিনের নির্ধারিত সময়ের পরেও অতিরিক্ত ৩০ মিনিট খেলা চালানোর সিদ্ধান্ত নেন ম্যাচ অফিশিয়ালরা।
বৃষ্টির পর খেলা শুরু হলে ১৫৫ রানে পিছিয়ে ৪ উইকেট হারিয়ে ২১০ রান নিয়ে আবার ব্যাটিংয়ে নামে লঙ্কানরা। যেখানে ম্যাথিউস ২৫ এবং ধনঞ্জয়া ৩০ রানে ব্যাটিং শুরু করেন। রক্ষণাত্মক কৌশলে ব্যাট করে পরে দুই ব্যাটম্যানই ব্যক্তিগত ফিফটি তুলে নেন। আগে এই মালফলক স্পর্শ করেন ধনঞ্জয়া। ৯০ বলে নিজের টেস্ট ক্যারিয়ারের দশম ফিফটি স্পর্শ করেন তিনি।
এরপর একই পথে হাঁটেন ম্যাথিউস। ধনঞ্জয়া যে ওভারে অর্ধশতক করেন, তার পরের ওভারে সাকিবকে ছক্কায় উড়িয়ে পঞ্চাশে পা রাখেন তিনি। ১২৫ বল খেলে টেস্ট ক্যারিয়ারের ৩৮তম ফিফটি পূর্ণ করেন ম্যাথিউস, বাংলাদেশের বিপক্ষে দ্বিতীয়। তবে টিকতে পারেননি ধনঞ্জয়া। সাকিবের বলে লেগ বিফোরের ফাঁদে পড়ে ফেরেন।
ইনিংসের ৮৮তম ওভারের পঞ্চম বলটি ঝুলিয়ে দেন সাকিব। পা বাড়িয়ে ডিফেন্স করেন ধনঞ্জয়া। কিন্তু বাঁহাতি স্পিন টার্ন করে বেরিয়ে যাওয়ায় ঠিকমতো খেলতে পারেননি ব্যাটে। ব্যাটের গা ঘেঁষে বল জমা পড়ে কিপার লিটন কুমার দাসের গ্লাভসে। আবেদন করেন ফিল্ডাররা। সাড়া দেননি আম্পায়ার। শেষ মুহূর্তে রিভিউ নেয় বাংলাদেশ। রিপ্লেতে দেখা যায়, বল হালকা ব্যাট স্পর্শ করেছে। উল্লাসে মাতে দল। ৫৮ রানে ফেরেন ধনঞ্জয়া। ভাঙে ১০২ রানের জুটি।
শেষ বিকেলে বাংলাদেশি বোলাররা ভীতি ছড়ালেও উইকেটের দেখা পাননি। দিন শেষে ৫ উইকেট হারিয়ে স্কোর বোর্ডে ২৮২ রান জমা করেছে সফরকারীরা। প্রথম ইনিংসে বাংলাদেশ থেকে এখনো ৮৩ রানে পিছিয়ে তারা। ম্যাথিউস ৫৮ এবং দীনেশ চান্দিমাল ১০ রান নিয়ে বৃহস্পতিবার চতুর্থ দিনের খেলা শুরু করবেন।
খুলনা গেজেট/এমএম