খুলনা, বাংলাদেশ | ৫ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ | ২০ নভেম্বর, ২০২৪

Breaking News

  গোপালগঞ্জ বঙ্গবন্ধু বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রক্টর নিয়োগ নিয়ে ছাত্রদের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া
  ৭ দিনের জন্য আন্দোলন স্থগিত করেছেন তিতুমীর কলেজের শিক্ষার্থীরা
  ইউনাইটেড হাসপাতালের চেয়ারম্যানসহ ৪ জনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা
  ৪০তম ব্যাচের ক্যাডেট এসআইদের সমাপনী কুচকাওয়াজ স্থগিত
রাজাকার ঘাঁটিতে প্রথম ফায়ার করেন জহুরুল হক খোকা

বীর মুক্তিযোদ্ধা আবু জাফরের স্মৃতিচারণে কপিলমুনি যুদ্ধ

কাজী মোতাহার রহমান

খুলনা জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কামান্ডার মোঃ আবু জাফর ঐতিহাসিক কপিলমুনি যুদ্ধে অংশ নেন। তিনি খুলনা নগরীর হাজী মহসীন রোডের অধিবাসী। স্বাধীনতার পর ৪৯ বছর পর্যন্ত মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি, বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ প্রমাণাদি, মুক্তিযোদ্ধাদের ছবি, যুদ্ধের বিবরণ ও রাজাকারদের তালিকা সংরক্ষণ করেন। শহীদ মুক্তিযোদ্ধা, যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা এবং যেসব মুক্তিযোদ্ধার স্বাভাবিক মৃত্যু হয়েছে তাদের পরিবার-পরিজনকে নানান তথ্য দিয়ে আজও সাহায্য-সহযোগিতা করেন। প্রতিদিন বীর মুক্তিযোদ্ধা ও মুক্তিযোদ্ধাদের পরিবাররা সহযোগিতার জন্য তার স্মরণাপন্ন হন।

কপিলমুনি যুদ্ধের স্মৃতিচারণ করতে যেয়ে তিনি বলেন, বৃহত্তর খুলনা মুজিববাহিনীর প্রধান শেখ কামরুজ্জামান টুকুর নেতৃত্বে পাইকগাছা থানার হাতিয়ারডাঙ্গায় বিএলএফ সদর দপ্তরে অবস্থান করতাম। কপিলমুনি রাজাকার ক্যাম্পের সদস্যরা স্থানীয় জনগণের ওপর নির্যাতন ও তাদের সম্পদ লুটপাট করে। বীর মুক্তিযোদ্ধাদের তিনি জানান, কপিলমুনি বিনোদ বিহারী সাধুর বাড়িতে রাজাকার ক্যাম্প অত্যন্ত শক্তিশালী দুর্গ। মুজিববাহিনীর প্রধান রাজাকার ক্যাম্প আক্রমণের সিদ্ধান্ত নিলেন। পরামর্শ করলেন নৌ-বাহিনী কমান্ডো লে: গাজী রহমত উল্লাহ দাদু (বীর প্রতীক), স ম বাবর আলী, অধ্যক্ষ আবুল কালাম আজাদ ও মোড়ল আব্দুস সালামের সাথে। বিএলএফ’র হেড কোয়ার্টারে ভারী অস্ত্রের মধ্যে একটি আরসিএল ছিল।

যোদ্ধারা বিএলএফ প্রধানকে জানান, আরও দু’টি আরসিএল প্রয়োজন। বীর মুক্তিযোদ্ধা ও কামান্ডারদের কপিলমুনি রাজাকার ক্যাম্প আক্রমণের জন্য নির্দেশনা দিয়ে বিএলএফ প্রধান কামরুজ্জামান টুকু ভারী অস্ত্রের জন্য সীমান্ত অতিক্রম করে বশিরহাট চলে যান। তিনি যুদ্ধ চলাকালীন সময় কপিলমুনি উপস্থিত হন। যুদ্ধের প্রধান অধিনায়ক গাজী রহমত উল্লাহ দাদু মুক্তিযোদ্ধাদের জানান, রাজাকার ক্যাম্পের চারিদিক থেকে আক্রমণ করতে হবে। মুক্তিযোদ্ধাদের একটি বড় দল ৭ ডিসেম্বর প্রথম প্রহরে তালা থানার কানাইদিয়া গ্রামের ওপর দিয়ে কপিলমুনি পৌঁছে যান। দক্ষিণ দিকে নিরাপত্তার জন্য থাকেন খুলনার কাস্টমঘাটের অধিবাসী ছাত্রলীগ নেতা শেখ আব্দুল কাইয়ুম। রাজাকাররা মুক্তিযোদ্ধাদের উপস্থিতি টের পেয়ে যায়।

কপিলমুনি যুদ্ধে রাজাকারদের ঘাঁটিতে আরসিএল নামক ভারী অস্ত্র দিয়ে প্রথম ও দ্বিতীয় ফায়ারটি করেন হাজী মহসীন রোডের অধিবাসী জহুরুল হক খোকা। তিনি এই যুদ্ধে আহত হন। আজও সেই ক্ষত বয়ে বেড়াচ্ছেন। দক্ষিণাঞ্চলের মুক্তিযোদ্ধাদের বড় একটি অংশ কপিলমুনি যুদ্ধে অংশ নেন। ৮ ডিসেম্বর দিনভর যুদ্ধ চলে। ৯ ডিসেম্বর রাজাকাররা আত্মসমর্পণ করে। এ যুদ্ধে বীর মুক্তিযোদ্ধা রূপসা উপজেলার মুছাব্বরপুর গ্রামের আনোয়ার হোসেন আনু ও সাতক্ষীরা আশাশুনির গোয়ালডাঙ্গার মো: আনোয়ার উদ্দিন গাজী শহীদ হন।

খুলনা গেজেট / এমএম




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!