জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী এবং স্বাধীনতার ৫০ বছর পূর্তি উদযাপন উপলক্ষে সরকারের নানা উদ্যোগের মধ্যে ভূমিহীন ও অস্বচ্ছল মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য আবাসন নির্মাণ প্রকল্প সরকারের একটি মহতী উদ্যোগ।
প্রকল্পটির আওতায় সারাদেশে ৩০ হাজার অস্বচ্ছল বীরমুক্তিযোদ্ধা, বীরঙ্গনা শহীদ, প্রয়াত মুক্তিযোদ্ধাদের বিধবা স্ত্রী ও সন্তানদের সামাজিক মর্যাদা বৃদ্ধি ও আর্থসামাজিক উন্নয়নের জন্য প্রকল্পটি গ্রহণ করা হয়।
২০২১ সালের ১৬ মার্চ জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) প্রকল্পটি অনুমোদিত হয়। প্রকল্পের আওতায় দেশের ৬৪ জেলার সব উপজেলা ও মহানগরে প্রথম পর্যায়ে ৩০ হাজার বীর নিবাস তৈরীর কাজ চলমান রয়েছে। সম্পূর্ণ সরকারি অর্থায়নে প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হচ্ছে। এতে মোট খরচ হবে ৪ হাজার ১২২ কোটি ৯৮ লক্ষ ৮৪ হাজার টাকা। প্রতিটি বীর নিবাস তৈরীর জন্য ব্যয় ধরা হয়েছে ১৪ লক্ষ ১০ হাজার টাকা। ১ হাজার ৭৬৩ বর্গফুট আয়তনের প্রতিটি বীর নিবাস ভবনে থাকবে ২টি বেড রুম, ডাইনিং রুম, ১টি কিচেন ও ২ টি বাথরুম এবং বারান্দা। মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় কর্তৃক স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) প্রকল্পটির বাস্তবায়নকারী সংস্থা হিসেবে কাজ করছে।
জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ডাকে সাড়া দিয়ে যারা ৯ মাস যুদ্ধ করে ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর পৃথিবীর মানচিত্রে বাংলাদেশ নামে একটি পৃথক রাষ্ট্র সৃষ্টি করেছিলেন তারা বঙ্গবন্ধুর পৈশাচিক হত্যাকাণ্ডের পরে হয়ে পড়েছিলেন নিগৃহীত ও অবহেলার পাত্র।
বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ক্ষমতায় আসার পর বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সামাজিক মর্যাদা বৃদ্ধি ও অর্থনৈতিক অবস্থার উন্নতির জন্য বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করেন। এরই ধারাবাহিকতায় সরকার মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক মন্ত্রনালয় কর্তৃক মহান স্বাধীনতা সংগ্রামে ১৯৭১ সালে যারা মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছেন তাদের মধ্যে থেকে এখনো জীবিত কিন্তু ভূমিহীন ও অস্বচ্ছল মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য বাসস্থান নির্মাণ প্রকল্প গ্রহণ করা হয়। মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণকারী অসহায়-দুঃস্থ ভূমিহীন, অস্বচ্ছল মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য স্থায়ী বাসস্থান নির্মাণের জন্য প্রধানমন্ত্রীর এই উদ্যোগ গ্রহণ। এই প্রকল্পের মাধ্যমে মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য বাসস্থান নির্মাণ সামাজিক মর্যাদা বৃদ্ধি অর্থনৈতিক সেবা প্রদানসহ স্বাধীনতা যুদ্ধের স্মৃতি স্মরণ করে দেশপ্রেম জাগ্রত করা।
চলতি বছরের ৩০ জুনের মধ্যে প্রথম পর্যায়ে বীর নিবাস নির্মাণের কাজ শেষ হওয়ার কথা রয়েছে। এরপর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আনুষ্ঠানিকভাবে এগুলোর উদ্বোধন করবেন।
খুলনা গেজেট/ বি এম এস