মহাবিশ্বের সীমা কোথায় মানুষ জানে না। তবে মানুষ হতাশ হয়নি। যুগের পর যুগ ধরে মানুষ ঠিকই খুঁজে ফিরেছে মহাবিশ্বের প্রান্তসীমা। গ্যালিলিওর টেলিস্কোপ দিয়ে মহাবিশ্বে যে চোখ বুলিয়ে দেখার শুরু। তার থেকে মানুষের দৃষ্টিসীমা আজ অনেক দূরে প্রসারিত। শুধু গ্রহ নক্ষত্রই নয়, এখনকার বিজ্ঞানীরা খুঁজে ফেরেন আমাদের আকাশগঙ্গার মতোই দূরের কোনো ছায়াপথ।
সায়েন্স অ্যালার্টের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এবার জোতির্বিদরা বিশাল এক ছায়াপথের সন্ধান পেয়েছেন। নতুন আবিষ্কৃত এ ছায়াপথটি ১ কোটি ৩০ লাখ (৫ মেগাপারস) আলোকবর্ষ (আলো বছরে যে দূরত্ব অতিক্রম করে) পর্যন্ত বিস্তৃত। আমাদের পৃথিবী যে ছায়াপথে আছে, তার নাম আকাশগঙ্গা। এটি মাত্র এক লাখ আলোকবর্ষ পর্যন্ত বিস্তৃত। সে হিসাবে নতুন আবিষ্কৃত এ ছায়াপথটি আমাদের ছায়াপথের থেকেও ১৬ গুণ বড়। এখন পর্যন্ত বিজ্ঞানীদের পর্যবেক্ষণে ধরা পড়া এটিই সবচেয়ে বড় ছায়াপথ।
বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, নতুন এই আবিষ্কৃত ছায়াপথটির নাম রাখা হয়েছে গ্রিক পুরাণের আকাশ দেবতা অ্যালসিওনিয়াসের নামানুসারে এ ছায়াপথের নামকরণ করা হয়েছে।
ছায়াপথটির দূরত্ব আমাদের পৃথিবী থেকে ৩০০ কোটি আলোকবর্ষ দূরে। লো ফ্রিকোয়েন্সি অ্যারে (লোফার) নেটওয়ার্ক ও ওয়াইড-ফিল্ড ইনফ্রারেড সার্ভে এক্সপ্লোরার (ওয়াইজ) টেলিস্কোপের মাধ্যমে অ্যালসিওনিয়াসের সন্ধান পাওয়া যায়। বর্তমান প্রযুক্তি প্রায় ৪ হাজার ৫০০ কোটি আলোকবর্ষ দূর পর্যন্ত পর্যবেক্ষণ করতে সক্ষম।
নতুন আবিষ্কৃত ছায়াপথটির ভর ২০০ থেকে ২৮০ বিলিয়ন সৌরভর। এর মধ্যে রয়েছে বিশালাকৃতির ব্ল্যাকহোল। যার ভর ২০০ থেকে ৬০০ মিলিয়ন সৌরভর।
তবে অ্যালসিওনিয়াস কীভাবে এত বড় ছায়াপথে পরিণত হয়েছে তা এখনও অজানা। এ-সংক্রান্ত কয়েকটি প্রস্তাব এরই মধ্যে করা হয়েছে, তার একটি হলো অন্যান্য গ্যালাক্সির তুলনায় এর ভেতরের পরিবেশের উপাদানের ঘনত্ব তুলনামূলক অন্য গ্যালাক্সির তুলনায় কম। এ ছাড়া এর মাঝেই সুপার ম্যাসিভ ব্ল্যাকহোলের ভূমিকা থাকতে পারে কিংবা এর বিস্তৃত নাক্ষত্রিক বিন্যাস ও সংখ্যার প্রভাবও থাকতে পারে।
খুলনা গেজেট/ এস আই