লকডাউনে বন্ধ রয়েছে দূরপাল্লার গণপরিবহন। যাত্রীরা গন্তব্যে পৌঁছাতে স্বাস্থ্যঝুঁকি নিয়ে যাতায়াত করছেন মাইক্রো-মাহিন্দ্রায়। নিরুপায় হয়ে গুণতে হচ্ছে অতিরিক্ত ভাড়া ।
ঈদে ঢাকা থেকে খুলনায় এসেছিলেন অনেকে। ছুটি শেষে চাকরিতে ফিরতে খুলনা ছাড়ছেন তারা। গণপরিবহনে বিধিনিষেধ থাকায় ঢাকাগামী যাত্রীদের ভিড় বাড়ছে মাইক্রো স্ট্যান্ডগুলোতে।
খুলনার সোনাডাঙা বাসস্ট্যান্ড, রূপসা ঘাটের মাহিন্দ্রা ও ওপারের মাইক্রো স্ট্যান্ডের গাড়িগুলো ছাড়ছে মাওয়ার উদ্দেশ্যে।
শহরের ওপারে রূপসা ঘাটের মাইক্রো স্ট্যান্ডে ঈদের পরদিন থেকেই যাত্রীদের বাড়তি চাপ। লকডাউনের আগে মাওয়া ঘাটের ভাড়া ৩০০-৪৫০ টাকা ছিলো, এখন তা ৬০০ টাকা। দশ সিটের গাড়িতে আগে ১৪ জন যাত্রী নেওয়া হতো এখন নিচ্ছে ১১ জন।
অনেক যাত্রী বলছেন বাধ্য হয়েই বেশি ভাড়া ও স্বাস্থ্যঝুঁকি নিয়ে যাতায়াত করতে হচ্ছে। মাইক্রোবাস যাত্রী মৃন্ময় মল্লিক স্ত্রীকে সাথে নিয়ে যাচ্ছেন ঢাকায়। কথা হলে জানান, স্বাস্থ্যঝুঁকি রয়েছে জেনেও পেটের দায়ে এভাবে পাড়ি দিতে হচ্ছে।
মাওয়া ঘাটের আইউব আলী ও রূপসার মাইক্রো চালক মাসুম শেখ জানান, “মাওয়া থেকে ফিরতি পথে যাত্রী না থাকায় ভাড়া বাড়িয়েছেন তারা। সেইসাথে বিধি নিষেধ থাকায় রাস্তায় চলাচলে প্রশাসনকেও টাকা দিতে হচ্ছে।”
শহরের রূপসা বাসস্ট্যান্ডের মাহিন্দ্রাগুলো বাগেরহাট, গোপালগঞ্জ, বরিশালের বেকুটিয়া ঘাট, মাওয়া রুটে যাত্রী পরিবহন করছে। প্রতিটি মাহিন্দ্রায় পাঁচজন যাত্রী বহন করছে , সামাজিক দূরত্ব থাকছে উপেক্ষিত।
মাহিন্দ্রা চালক আজহারুল ইসলাম জানান, যাত্রী প্রতি বাগেরহাটে ১৫০, গোপালগঞ্জ ২৫০, বেকুটিয়া ৩০০ এবং মাওয়া ঘাটের জন্য ৭০০ টাকায় গ্রহণ করছেন তারা।
মাহিন্দার যাত্রী মোঃ আলাউদ্দীন জানান, ৩০০টাকা ভাড়া দিয়ে বরিশাল বেকুটিয়া যাচ্ছেন। স্বাস্থ্যবিধির বিষয়ে জিজ্ঞাসা করলে বলেন, চাইলেও মানার সুযোগ নেই। পরিবহন বন্ধ থাকায় একদিকে বেশি ভাড়া অন্যদিকে স্বাস্থ্যঝুঁকি নিয়ে বাড়ি ফিরতে হচ্ছে তাকে।
সোনাডাঙ্গা বাসস্ট্যান্ডে দুরপাল্লার বাস বন্ধ থাকলেও মাওয়ার যাত্রী পরিবহন করছে সেতু ডিলাক্স। আসনের অর্ধেক যাত্রীর পরিবর্তে সব আসনেই যাত্রী বহন করছে। ভাড়া নিচ্ছে ৫০০ টাকা। নাম প্রকাশ না করে গাড়ির হেলপার জানান, সবকিছু ম্যানেজ করেই গাড়ি চালাচ্ছেন তারা, যে কারণে ভাড়া বেশি।
জানা যায়, সকালে শুধু সেতু ডিলাক্স সড়কে চললেও সন্ধ্যার পরে অন্যান্য কোম্পানীর গাড়িগুলো খুলনা-মাওয়া রুটে চলাচল করে।
এদিকে সোনাডাঙ্গা থেকেও মাওয়া ঘাটে মাইক্রোযোগে যাত্রী পরিবহন চলছে। দেখা যায় জরুরী পত্রিকার সাইনবোর্ডে ঢাকা মেট্রো-চ ৫১-০৪৯৫ নাম্বারের মাইক্রোতে মাওয়ার উদ্দেশ্য যাত্রী তুলছে। প্রতি যাত্রী থেকে ৬০০ টাকা ভাড়া আদায় করা হচ্ছে।
সকালে এ এলাকায় মাওয়াগামী বাস ও মাইক্রোর হাঁকডাক সীমিত থাকলেও সন্ধ্যার পরে তা পুরোদমে চালু হয়। চিরচেনা রূপে ফিরে আসে সোনাডাঙ্গা বাসস্ট্যান্ড এলাকা।
তবে খুলনা থেকে অন্যান্য জেলার উদ্দেশ্যে ছেড়ে যাওয়া বাসগুলো বেঁধে দেওয়া নিয়মেই চলছে। খুলনা-কুষ্টিয়া রুটের বাসগুলো এখন চলছে রাজঘাট এলাকা পর্যন্ত, ভাড়া নিচ্ছে ৭০ টাকা। সাতক্ষীরাগামী বাসগুলো চলছে চুকনগর শুভাসুনি পর্যন্ত, ভাড়া নিচ্ছে ৯০ টাকা। এছাড়া বাগেরহাট ও টেকেরহাটের উদ্দেশ্যে বাস চলাচল করছে।
খুলনা গেজেট/ এস আই/ এস আই