খুলনা মহানগরীর খানজাহান আলী সড়ক প্রশস্তকরণের কাজ শুরু করেছে সড়ক বিভাগ। রূপসা ঘাটের কাছে ৬০ ফুট সড়ক প্রশস্ত করে ৮০ ফুট করা হচ্ছে। কিন্তু সড়কের মাঝে থাকা পুরাতন বিদ্যুতের খুঁটি রেখেই চলছে কাজ। এতে প্রায় ২৫ কোটি টাকা ব্যয়ে সড়ক প্রশস্তকরণের সুফল নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে। এছাড়া দুর্ঘটনার ঝুঁকি থেকেই যাচ্ছে।
সড়ক বিভাগ থেকে জানা গেছে, দৌলতদিয়া-যশোর-খুলনা মহাসড়কের নগরীর ফেরিঘাট থেকে রূপসা ঘাট পর্যন্ত অংশ খানজাহান আলী সড়ক নামেই পরিচিত। নগরীর অন্যতম এই সড়ক দিয়ে প্রতিদিন ১০/১২ হাজার যানবাহন চলাচল করে। সড়কটি সরু হওয়ায় যানজট তৈরি হয়। এছাড়া রূপসা ঘাট এলাকা নিচু হওয়ায় প্রায়ই সড়কে পানি জমে থাকে। এ অবস্থায় সড়কের প্রায় ৩ কিলোমিটার (২,৯৪০ মিটার) অংশ প্রশস্তকরণ ও মজবুত করতে কাজ শুরু করেছে সড়ক বিভাগ। এর মধ্যে রূপসা ঘাট এলাকার ৩৪৭ মিটার সড়ক হবে কংক্রিটের। বাকি অংশ হবে কার্পেটিং বা বিটুমিনের। প্রকল্পে মোট ব্যয় হবে ২৫ কোটি ৫৫ লাখ টাকা। সড়কটি একেকটি অংশে একেক রকম প্রশস্ত হবে।
সরেজমিন দেখা গেছে, সড়কের রূপসা ঘাট এলাকায় সড়কের বর্তমান প্রস্থ ৬০ ফুট। দুই পাশে প্রশস্ত করে সড়ক ৮০ ফুটে উন্নীত করা হচ্ছে। সড়কের ওই অংশে ৩৪৭ মিটার অংশ প্রায় ১৯ ইঞ্চি কংক্রিটের ঢালাই দিয়ে উচু করা হচ্ছে। ইতোমধ্যে একপাশের ৮০ ভাগ কাজ শেষ হয়েছে।
দেখা গেছে, সড়কের মাঝে পুরাতন বিদ্যুতের খুঁটি রেখেই দেওয়া হচ্ছে ঢালাই। এরই মধ্যে ৬টি খুঁটি রেখেই ঢালাই দেওয়া হয়েছে। আরও ৮টি খুঁটি রেখেই সংস্কার করা হচ্ছে। প্রায় ১৯ ইঞ্চি পুরুত্বের ঢালাই ভেঙ্গে ভবিষ্যতে এই খুঁটি স্থানান্তর করা যাবে না। এতে প্রশস্ত করা বাকি অংশ দিয়ে যানবাহন চলাচল করতে পারবে না। করলেও দুর্ঘটনার শিকার হবে। সড়কের অন্যান্য অংশেও খুঁটি রেখেই প্রশস্ত করা হচ্ছে। কার্পেটিং করার পর এসব খুুঁটিও অপসারণ করা কষ্টকর হয়ে দাড়াবে। মোট কতটি খুঁটি সরাতে হবে এখনও সেই তালিকা তৈরি করতে পারেনি সড়ক বিভাগ।
সার্বিক বিষয় নিয়ে সড়ক বিভাগ খুলনার নির্বাহী প্রকৌশলী আনিসুজ্জামান মাসুদ বলেন, খুঁটি সরিয়ে নিতে ওজোপাডিকোতে চিঠি দেওয়া হয়েছে। নির্ধারিত সময়ে আমাদের প্রকল্পের কাজ শেষ করতে হবে।ওজোপাডিকোর কাছ থেকে সাড়া না পাওয়ায় বাধ্য হয়ে কয়েকটি খুঁটি রেখেই কাজ করতে হচ্ছে।
কাজের স্থানটি ওজোপাডিকোর বিক্রয় বিতরণ বিভাগ-১ এর আওতাধীন। ওই এলাকার দায়িত্বপ্রাপ্ত সহকারী প্রকৌশলী তারেক আহমেদ বলেন, আমাদের খুঁটির জায়গা দেখিয়ে দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে খুঁটি সরিয়ে দিচ্ছি। যেই স্থানে খুঁটি রেখে কাজ হচ্ছে, সেখানে খুঁটি স্থানান্তরের জায়গা দেখিয়ে দেওয়া হয়নি।
বৃহত্তর খুলনা উন্নয়ন সংগ্রাম সমন্বয় কমিটির সভাপতি শেখ আশরাফ উজ জামান বলেন, খুঁটি রেখে কাজ অর্থের অপচয় ছাড়া কিছুই না। এই অর্থ ব্যয়ের সুফল নগরবাসী তো পাবেই না, উল্টো দুর্ঘটনার ঝুঁকি বাড়বে।
ফেসবুকে সড়কটির ছবি দিয়ে একই ধরনের পোস্ট দিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করছেন খুলনা চেম্বারের পরিচালক ও জেলা আওয়ামী লীগের প্রচার সম্পাদক জোবায়ের আহমেদ খান। তিনি ফেসবুকে লেখিছেন, ‘খুটিগুলো অপসারণ না হলে রাস্তার উন্নয়ন হবে বটে কিন্তু দুর্ঘটনার ঝুঁকিও সৃষ্টি হবে’।
খুলনা গেজেট/ বি এম এস