মাত্র তিনটি গাভি দিয়ে শুরু করে এখন বড় একটি ডেইরি ফার্মের (দুগ্ধ খামার) মালিক হয়েছেন পাইকগাছার মোহাম্মাদ আলী গাজী। ৩৮ বছর বয়সী এই যুবক বিদেশি জাতের গাভি পালন করে এখন স্বাবলম্বী। ব্যবস্থা করেছেন অন্য লোকদের কর্মসংস্থানেরও।
জানা যায়, ২০১৭ সালে এক লাখ ৫০ হাজার টাকা দিয়ে ৩টি বিদেশি জাতের গরু কেনেন মোহাম্মাদ আলী। সেই তিনটি গরু থেকে ৫ বছরের মাথায় তার নিজস্ব বাড়িতে গড়ে উঠেছে ‘মেসার্স লামিয়া ডেইরি ফার্ম’। ছোট বাচ্চাসহ তাঁর খামারে এখন ২৭টি গরু রয়েছে। এই খামার থেকে থেকে অনুপ্রেরণা পাচ্ছে এলাকার শত শত তরুণ-যুবক।
সরেজমিনে খামার ঘুরে দেখা যায়, ‘বাড়ির দুইটি শেডে ছোট বাচ্চাসহ রয়েছে গরুগুলো। গরুগুলোকে লালন-পালনের জন্য তিনজন, ঘাস কাটার জন্য ছয়জন এবং দুধ দহন ও বহনের জন্য রয়েছে একজন শ্রমিক। সব মিলিয়ে ১০ জন লোকের কর্মসংস্থান হয়েছে মোহাম্মাদ আলীর খামারে। তার বাড়ির প্রথম ও দ্বিতীয় শেড মিলে ৯টি দুধের গাভি রয়েছে। ছোট বাচ্চা রয়েছে ১২টি এবং বাকি ৬টি রয়েছে বাচ্চাসম্ভবা গাভি।
মোহাম্মাদ আলী গাজী বলেন, ‘খামারের ৯টি দুগ্ধজাত গাভি প্রতিদিন ১৩০ লিটার দুধ দেয়। দুধে ভেজাল না থাকার কারণে বাড়ি থেকে প্রায় ৬০ লিটার দুধ খুচরা বিক্রি হয়ে যায়। বাকি দুধ বিক্রয় কেন্দ্রে পাঠানো হয়। খামারের পাশাপাশি গরুর খাবারের জন্য ৮ বিঘা জমিতে চাষ করা হয়েছে নেপিয়ার এবং পাংচুং জাতের ঘাস এবং ২৫ বিঘা জমিতে চাষ করা হয়েছে ধান। ধান মাড়াইয়ের পর খড় (বিচুলি) পাই। প্রতিদিন শ্রমিকেরা জমি থেকে এসব ঘাস কেটে নিয়ে আসে। এরপর আধুনিক যন্ত্রের মাধ্যমে নির্দিষ্ট সাইজে এসব ঘাস কেটে গরুগুলোকে খাওয়ানো হয়।’
তিনি বলেন, ‘ঘাস ও খড়ের পাশাপাশি বাজার থেকে গমের ভুসি, কুড়া, ভুট্টার গুঁড়া, বুটের খোসা, খইল কিনে খাওয়ানো হচ্ছে। ২৭টি গরুর জন্য খাবার এবং ওষুধ মিলে প্রতিদিন ৬ হাজার ও মাসে প্রায় দুই লাখ টাকা খরচ হয়। সব মিলিয়ে বছরে ৫ লাখ টাকা লাভ হয়।’
মোহাম্মাদ আলী জানান, তাঁর খামারে থাকা গরুগুলোর মধ্যে রয়েছে ফ্রিজিয়ান, দো-আঁচড়া ও ইন্ডিয়ান মুন্ডি। ফ্রিজিয়ান ও দো-আঁচড়াসহ এক একটি গরুর দুইবার ২৮ কেজি পর্যন্ত দুধ দেয়। আমার ফার্মে সবচেয়ে দামি গরু রয়েছে ইন্ডিয়ান মুন্ডি জাত।’
তিনি আরও বলেন, উপজেলা প্রাণিসম্পদ কার্যালয়ের ভেটেরিনারি সার্জন পার্থ প্রতিম রায় নিয়মিত আমার খামার পরিদর্শন করে প্রয়োজনীয় পরামর্শ এবং গরুর বিভিন্ন রোগের ভ্যাকসিন প্রদান করে আসছে।
প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. বিষ্ণুপদ বিশ্বাস বলেন, আমার উপজেলায় দেশি ও বিদেশি জাতের নিবন্ধিত ৩০টি খামার রয়েছে।
খুলনা গেজেট/এনএম