খুলনা, বাংলাদেশ | ৫ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ | ২০ নভেম্বর, ২০২৪

Breaking News

  ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুতে ৫ জনের মৃত্যু, হাসপাতালে ভর্তি ১০৩৪
  যাত্রাবাড়িতে ব্যাটারিচালিত অটো রিকশাচালকদের সড়ক অবরোধ, সংঘর্ষে দুই পুলিশ আহত
  জুলাই গণহত্যা : ৮ পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে এক মাসে তদন্ত শেষ করার নির্দেশ
ইউনিভার্সাল পিরিয়ডিক রিভিউ

বিচারহীনতায় ভেঙে পড়েছে জন-আস্থা, জবাবদিহিতা বিরল

গেজেট ডেস্ক

বাংলাদেশে মাত্রাতিরিক্ত বলপ্রয়োগ, বিচারবহির্ভূত হত্যা ও জোরপূর্বক গুম করার ধারাবাহিকতা নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনারের কার্যালয় (ওএইচসিএইচআর)। সেই সঙ্গে ইউনিভার্সাল পিরিয়ডিক রিভিউ (ইউপিআর) ওয়ার্কিং গ্রুপ একটি পক্ষপাতমুক্ত, স্বাধীন এবং বিশেষায়িত প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠার সুপারিশ করেছে, যারা আন্তর্জাতিক মান অনুযায়ী গুম ও বিচারবহির্ভূত হত্যার অভিযোগগুলো তদন্তে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেবে। কেননা সংস্থাটির তৈরি সারসংকলনে বাংলাদেশের বিচারব্যবস্থার প্রতি জনগণের আস্থা ভেঙে পড়ার পর্যবেক্ষণ দেওয়া হয়েছে।

সোমবার (১৩ নভেম্বর) জাতিসংঘের ইউনিভার্সাল পিরিয়ডিক রিভিউতে (ইউপিআর) বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি সম্পর্কে এ তথ্য উঠে এসেছে।

নির্যাতনবিরোধী এবং মানবাধিকার কমিটি সুপারিশ করেছে- বাংলাদেশ রাষ্ট্রীয় ব্যক্তিদের দ্বারা বল প্রয়োগ সীমিত করার জন্য তার আইন যেন সংশোধন করে, আন্তর্জাতিক মানগুলো অন্তর্ভুক্ত করে। যেন নিশ্চিত করে- বল প্রয়োগ, অস্বীকৃত আটক, গুম এবং হেফাজতে মৃত্যুর সমস্ত অভিযোগ একটি স্বাধীন সংস্থা দ্বারা তাত্ক্ষণিকভাবে এবং সম্পূর্ণভাবে তদন্ত করা হয়। অপরাধীদের সমস্ত ক্ষতিপূরণ এবং ভুক্তভোগীদের জন্য একটি কার্যকর অভিযোগের ব্যবস্থা যেন করা হয়। আইনে একটি স্বতন্ত্র অপরাধ হিসাবে জোরপূর্বক গুম নিষিদ্ধ করার কথা বলা হয়েছে।

জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনার, অর্থনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক অধিকার বিষয়ক কমিটি এবং নির্যাতনবিরোধী কমিটিও জোরপূর্বক গুম থেকে সকল ব্যক্তিকে রক্ষার জন্য আন্তর্জাতিক কনভেনশন অনুমোদনের পরামর্শ দিয়েছে।

মানবাধিকার বিষয়ক এই সারসংক্ষেপে ১৮টি সংগঠনকে জেএস১৮ বা জয়েন্ট স্টেটমেন্ট১৮ নামে পরিচয় দেওয়া হয়েছে। একই রকম অন্য সংগঠনগুলোকে সংক্ষিপ্ত আকারে প্রকাশ করা হয়েছে। জেএস১৮ বলেছে, নির্বাহী বিভাগ থেকে বাংলাদেশের বিচার বিভাগের স্বাধীনতায় ঘাটতি আছে। কারণ, বিচারক নিয়োগ এবং তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার বিষয়টি নিয়ন্ত্রণ করে আইন মন্ত্রণালয়। এর ফলে জবাবদিহিতা এবং স্বচ্ছতায় ঘাটতি থেকে যায়।

একই মানবাধিকার বিষয়ক সংগঠনগুলো বলেছে, রাজনৈতিক এজেন্ডা বাস্তবায়নে জাতীয় মানবাধিকার কমিশন, নির্বাচন কমিশন, দুদক, আইন প্রয়োগকারী এজেন্সিগুলো এবং বিচারবিভাগসহ রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলোকে ব্যবহার করছে সরকার। জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের গঠন এবং এর কার্যকারিতার নিয়ন্ত্রণকারী কাঠামো প্যারিস প্রিন্সিপালের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ নয় বলেও সারসংক্ষেপে উঠে এসেছে। নির্বাচন প্রক্রিয়া স্বচ্ছ ও অংশগ্রহণমূলক করার জন্য নাগরিক সংগঠনগুলোর দাবি থাকলেও তা উপেক্ষা করছে সরকার।

বিচারবহির্ভূত হত্যা, নিরাপত্তা হেফাজতে মৃত্যুর বিষয়ে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল, নিউ ইয়র্ক ভিত্তিক হিউম্যান রাইটস ফাউন্ডেশন, জেএস১৮ উল্লেখ করেছে, এসব ঘটনায় জড়িত আইন প্রয়োগকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর পরিণতি ভোগ করার ঘটনা বিরল। নিরাপত্তা হেফাজতে মৃত্যুকে আত্মহত্যা বলে মিথ্যাভাবে চালিয়ে দেওয়া হয়। এসব ক্ষেত্রে নিরপেক্ষ তদন্ত ও জবাবদিহিতা দাবি করা হয়েছে।

গত ইউপিআর পর্যালোচনার সময় থেকে বাংলাদেশে বহু নির্যাতনে এবং নিরাপত্তা হেফাজতে মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। জাতীয় মানবাধিকার কমিশন আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোর বিরুদ্ধে তদন্তের ক্ষেত্রে তাদের সীমিত কর্তৃত্বের বিষয় স্বীকার করেছে। এ বিষয়ে তদন্ত করতে একটি নিরপেক্ষ মেকানিজম প্রতিষ্ঠার সুপারিশ করা হয়েছে।

খুলনা গেজেট/ এএজে




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!