তির-ধনুক হাতে জুটিবদ্ধ হয়ে আরচ্যারিতে সাফল্যের লক্ষ্যভেদ করেছেন দেশসেরা তিরন্দাজ রোমান সানা ও দিয়া সিদ্দিকী। আরচ্যারির পর তারা এবার জীবন জয়ের লক্ষ্যে গাঁটছড়া বেঁধেছেন। ভালোবাসার তির তাদের বাস্তব জীবনও এক করে দিয়েছে।
বুধবার (৫ জুলাই) দুপুরে নীলফামারী সদরের আশা কমিউনিটি সেন্টারে উভয় পরিবারের সদস্য ও আরচ্যারি ফেডারেশনের কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে জমকালো আয়োজনে তাদের বিয়ে সম্পন্ন হয়।
বাংলাদেশ আরচ্যারির প্রসঙ্গ উঠলেই খুলনার কয়রা উপজেলার সানা এবং নীলফামারী সদরের দিয়ার নাম স্বাভাবিকভাবেই এসে যায়। দুজনেই তির-ধনুক হাতে দেশ ও বিদেশের মাঠে একাধিকবার সফল হয়েছিলেন, ছড়িয়েছেন দেশের সুনাম। অনেকদিন ধরে দুজনের সম্পর্কের যে গুঞ্জন ছিল সেটি এবার পূর্ণতা পেয়েছে। কিছুদিন আগেই তারা বিয়ের পিঁড়িতে বসার ইঙ্গিত দিয়েছিলেন। বুধবার দুপুরে তা বাস্তবে রূপ নিলো।
নববধূ দিয়া সিদ্দিকী জানান, প্রথমে পরিচয়, তারপর বন্ধুত্ব। এরপর দু’পরিবারের সম্মতিতে আজকের এই বিয়ে। আগে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে জুটিবদ্ধ হয়ে খেলে যেমন দেশের সুনাম অর্জন করেছেন, বিয়ের পরেও তারা সেই ধারা অব্যাহত রাখবেন বলে দিয়া জানান।
রোমান সানা বলেন, বিয়ের পরও নিজেদের সর্বোচ্চটা দিয়ে আমরা আরচ্যারিকে এগিয়ে নিয়ে যাব। দিয়াকে আগে যেমন সার্পোট দিয়েছি, এখন আরও বেশি সার্পোট দিতে পারব। এতে করে শতভাগ উপকৃত হবে আমাদের দেশ।
উভয় পরিবারের সম্মতিক্রমে ৫ লাখ ১০১ টাকা দেনমোহর নির্ধারণের পাশাপাশি কনের স্বর্ণ বাবদ দু’লাখ টাকা নগদ পরিশোধ করে তাদের বিয়ে সম্পন্ন হয়। অনুষ্ঠানে উভয় পরিবারের আত্মীয়-স্বজন ও এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিরা ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ আরচ্যারি ফেডারেশনের সহ-সভাপতি আনিছুর রহমান দিপু, সাধারণ সম্পাদক কাজী রাজিব আহমেদ চপ্পল, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক কামরুল ইসলাম কিরণ, কোচ মাট্রিন ফেডথরিথ, ট্রেনার ফারুক ডালিসহ প্রমুখ।
খেলা ছাড়াও রোমান আনসারে ল্যান্স নায়েক পদে আছেন। দিয়া বিকেএসপির পাট চুকিয়ে এ বছরই যোগ দিয়েছেন আনসারে। নীলফামারী জেলা সদরে উকিলের মোড়ে দিয়াদের বাড়ি। তার বাবা নূর আলম সিদ্দিকী একটি বেসরকারি টেলিভিশনের নীলফামারী জেলা প্রতিনিধি। দিয়া খেলার মতো পড়াশোনাতেও সফল। এইচএসসিতে জিপিএ ফাইভ পেয়েছেন। ইতোমধ্যে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছেন। সুবিশাল ক্যারিয়ার সামনে রেখে আগেই জীবনের আরেকটি ইনিংস শুরু করলেন দিয়া।
ক্রীড়াঙ্গনে অনেক ডিসিপ্লিনেই ক্রীড়াবিদরা খেলা ছাপিয়ে বাস্তব জীবনেও জুটি গড়েছেন। আরচ্যারিতে এটি দ্বিতীয় জুটি। আগের জুটিটি রিকার্ভ-কম্পাউন্ড ইভেন্টের ছিল।
খুলনা গেজেট/কেডি