খুলনা, বাংলাদেশ | ৪ মাঘ, ১৪৩১ | ১৮ জানুয়ারি, ২০২৫

Breaking News

  বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের সাবেক প্রধান মাসুদ বিশ্বাস গ্রেপ্তার

বাবাকে দাফন দিয়ে ফেরার পথে শুনলেন মায়ের মৃত্যু সংবাদ

নিজস্ব প্রতিবেদক

করোনার উপসর্গ নিয়ে খুলনা মহানগরীর মিয়াপাড়া প্রধান সড়কের নিজ বাসায় চিকিৎসা নিচ্ছিলেন সৈয়দ আজাদ আলী (৭৮)। স্ত্রী শামীম আরা বেগম (৬৫) করোনা আক্রান্ত হয়ে খুলনা জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন। তাদের মধ্যে বুধবার দিবাগত রাত ৩টার দিকে সৈয়দ আজাদ আলী করোনার উপসর্গ নিয়ে নিজ বাসায় মারা যান। অপরদিকে তার স্ত্রী শামীম আরা বেগম হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বৃহস্পতিবার বিকেল ৩টার দিকে মারা যান।

বাবার মৃত্যুর খবরটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন মায়ের কাছে গোপন রাখেন সন্তানরা। চলে জানাজা ও দাফনের প্রস্তুতি। বৃহস্পতিবার (৮ জুলাই ) বাদ জোহর মিয়াপাড়া কেন্দ্রীয় জামে মসজিদে শেখ আজাদ আলীর জানাজা শেষে টুটপাড়া কবরস্থানে দাফন সম্পন্ন হয়। দাফন শেষে বাড়ি ফেরার পর হাসপাতাল থেকে ফোন আসে মাও ইন্তেকাল করেছেন। বাদ মাগরিব একই মসজিদে শামীম আরা বেগমের জানাজা নামাজ অনুষ্ঠিত হয়। রাতে তাকেও টুটপাড়া কবরস্থানে দাফন করা হয়।

পরিবার থেকে জানা গেছে, সৈয়দ আজাদ আলী ও শামীম আরা বেগমের এক ছেলে ও এক মেয়ে। বাবা-মায়ের সঙ্গে থাকতেন ছেলে জুলফিকার আলী। মেয়ের বিয়ে হয়েছে। বাবা-মা মারা যাওয়ার পর জুলফিকার আলী দুই শিশু সন্তানকে নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন। ইতোমধ্যে সব ধরনের উপসর্গ দেখা দিয়েছে এক শিশুর শরীরে। প্রয়াত বাবা-মায়ের রুহের মাগফেরাত এবং পরিবারের শিশুদের রোগমুক্তি কামনায় সবার কাছে দোয়া চেয়েছে পরিবারটি।

নিহত সৈয়দ আজাদ আলী ও শামীম আরা দম্পতির ছেলে জুলফিকার আলী জানান, বাবা-মা দুইজনের শরীরেই করোনার উপসর্গ ছিল। পরে শারীরিক অবস্থা অবনতি হওয়ায় মাকে ৬ জুলাই খুলনা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানেই চিকিৎসা চলছিল তার। তবে বাবা হাসপাতালে যেতে রাজি হননি। এর মধ্যে মায়ের করোনা শনাক্ত হয়।

সৈয়দ আজাদ আলীর শ্যালক খান জাহান আলী বলেন, জুলফিকারের বাবার মৃত্যুর খবরটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আমার বোনের কাছে গোপন রাখা হয়। বুধবার বাদ জোহর মিয়াপাড়া কেন্দ্রীয় জামে মসজিদে আজাদ আলীর জানাজা শেষে নগরীর টুটপাড়া কবরস্থানে দাফন সম্পন্ন হয়। দাফন শেষে বাড়ি ফেরার পর হাসপাতাল থেকে ফোন আসে আমার বোনও ইন্তেকাল করেছে। বাদ মাগরিব একই মসজিদে তার জানাজা নামাজ অনুষ্ঠিত হয়। রাতে তাকেও টুটপাড়া কবরস্থানে দাফন করা হয়।

তিনি বলেন, আমার বোন-ভগ্নিপতির দুই ছেলে-মেয়ে। এদের মধ্যে আমার ভাগ্নে জুলফিকারের ছোট দুই শিশু সন্তান রয়েছে। তাদের একজনের শরীরেও করোনার উপসর্গ দেখা দিয়েছে। এ নিয়ে পুরো পরিবারটি আতঙ্কের মধ্যে সময় কাটাচ্ছে।

এমন হৃদয় বিদারক অনেক ঘটনা ঘটছে প্রাণঘাতি করোনাভাইরাসের প্রকোপে। খুলনা জেলাসহ গোটা বিভাগে করোনার প্রকোপ বেড়েছে। হাসপাতালে ধারণক্ষমতার বাইরে রোগী ভর্তি রয়েছে। গত তিনদিন দৈনিক ৫০ জনের ওপরে মানুষের প্রাণ কেড়ে নিয়েছে এই ভাইরাসে। সর্বশেষ শুক্রবার (১০ জুলাই) খুলনায় ২৩ জনসহ বিভাগে ৭১ জনের মৃত্যু হয়েছে।

 

খুলনা গেজেট/এমএইচবি




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!