খুলনা, বাংলাদেশ | ১৯ আষাঢ়, ১৪৩১ | ৩ জুলাই, ২০২৪

Breaking News

  কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে কাভার্ডভ্যান নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে খাদে পড়ে চালক নিহত
  হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে সাড়ে ৪ কোটি টাকার স্বর্ণ উদ্ধার
খুলনার গাজী মেডিকেলেই রয়েছে ১৯৮ জন

বাংলাদেশে মেডিকেল শিক্ষায় আগ্রহ বাড়ছে ভারত-নেপালের শিক্ষার্থীদের

নিজস্ব প্রতিবেদক

বাংলাদেশে মেডিকেল শিক্ষা গ্রহণে ভারত ও নেপালের শিক্ষার্থীরা আগ্রহী হয়ে উঠছে। তাদের দেশের তুলনায় এখানকার মেডিকেল শিক্ষা ব্যবস্থা উন্নত ও খরচ তুলনামূলক কম হওয়ায় এ আগ্রহের প্রধান কারণ বলে জানা গেছে।

২০১১ সালে নগরীর সোনাডাঙ্গায় প্রতিষ্ঠিত হয় খুলনার প্রথম বেসরকারি গাজী মেডিকেল কলেজ। এর শিক্ষা কার্যক্রম শুরু হয় পরের বছর ২০১২ সালে। ৫ বছর মেয়াদী স্নাতক পর্যায়ের এম.বি.বি.এস. শিক্ষাক্রম চালু রয়েছে। ব্যাচেলর অব মেডিসিন, ব্যাচেলর অব সার্জারি (এমবিবিএস) ডিগ্রি কোর্সকে প্রথম, দ্বিতীয় এবং তৃতীয় পেশাদার পরীক্ষার নামে তিন ভাগে ভাগ করা হয়েছে। এখানে প্রতিবছর ৫০ জন বাংলাদেশী শিক্ষার্থীর সাথে ৩০-৫০ জন বিদেশী শিক্ষার্থী ভর্তি হয়ে থাকে।

বর্তমান কলেজে অধ্যয়নরত ৫ টি ব্যাচে ছাত্র-ছাত্রীর সংখ্যা ৪৫০ জনের অধিক। এর মধ্যে বিদেশী ছাত্র-ছাত্রী ১৯৮ জন। এদের মধ্যে ইন্ডিয়ান শিক্ষার্থী রয়েছে ১৯০ জন আর নেপালের ৮ জন। শিক্ষা কার্যক্রম শুরুর তিন বছর পর ২০১৫ সাল থেকে বিদেশী শিক্ষার্থীরা গাজী মেডিকেল কলেজে ভর্তি হতে শুরু করেন।

সূত্র জানায়, ২০১৫ সালে এখানে প্রথমে ৮ জন বিদেশী শিক্ষার্থী ভর্তি হয়। যারমধ্যে বর্তমানে ৭ জনই হাসপাতালে চিকিৎসক হিসাবে নিয়োজিত আছেন। ২০১৬ সালে ৩১ জন শিক্ষার্থী ভর্তি হয়েছিল, যারমধ্যে এখন ২১ জন ইন্টার্ণ করছেন। এরপর ২০১৭ সালে ৩৭ জন, ২০১৮ সালে ৫০ জন, ২০১৯ সালে ৪৬ জন এবং ২০২০ সালে ৩০ জন বিদেশী শিক্ষার্থী এই কলেজে ভর্তি হয়।

কলেজ সূত্রে জানা গেছে, অনেক শিক্ষার্থী এম.বি.বি.এস পাশ করে হাসপাতালে চিকিৎসক হিসাবে নিয়োজিত ও অনেকে কলেজের প্রভাষক হিসাবে দায়িত্ব পালন করছেন। তারা সার্বক্ষনিক ছাত্র-ছাত্রীদের সাথে বন্ধুসুলভ আচরণ করে তাদের পাঠদানে সাহায্যে করে থাকেন। প্রত্যেকটা ব্যাচের জন্য আলাদা আলাদাভাবে টিউটোরিয়ার ক্লাস রুম রয়েছে ও লেকচার ক্লাসের জন্য রয়েছে লেকচার গ্যালারী। প্রত্যেক বিভাগে রয়েছে অত্যাধুনিক ল্যাব সুবিধা।

কোভিড-১৯ এর প্রকোপের কারণে যেখানে সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ, সেখানে তারা অললাইন এর মাধ্যমে প্রত্যেক শিক্ষার্থীকে আলাদা আলাদা করে পাঠদান করে থাকেন ।

এ ব্যাপারে মাইক্রোবায়োলজী ও কমিউনিটি মেডিসিন বিভাগের প্রভাষক ডা. মিথুন বিশ্বাস ও ডা. শাহীন মোল্যা আফিফ খুলনা গেজেটকে বলেন, শুধু পাঠদানই নয়, তারা অললাইনে ক্লাস টেস্টসহ টার্ম পরীক্ষাগুলো নিচ্ছেন। এটা ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

তারা আরও বলেন, যদি কোন শিক্ষার্থী পরীক্ষাগুলির মধ্যে যে কোন একটিতে অকৃতকার্য হয়, তাহলে তাকে ছয় মাস পরে আবার সেই পরীক্ষা দিতে হবে। নিয়ম অনুসারে শিক্ষার্থীরা পুনরায় পরীক্ষার পাশাপাশি পরবর্তী শিক্ষাবর্ষের কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করতে পারে।

কলেজ থেকে সদ্য পাশ করা ইন্টার্ণ চিকিৎসক বিদেশী শিক্ষার্থী ডা. ইন্দ্রনীল খুলনা গেজেটকে বলেন, এই করোনা মহামারিতে তারা সার্বক্ষণিক রোগীদের সেবা দিয়ে যাচ্ছেন। এসময় চিকিৎসা সেবা একটু কষ্টকর হলেও তারা রোগীদের সেবা প্রদানে সর্বদা তৎপর রয়েছেন।

বিদেশী ছাত্রদের মধ্যে জি ০৫ ব্যাচের শিক্ষার্থী সৈয়দ আল-আরাফাত হেলাল জানান, কলেজের পাঠ দান পদ্ধতি খুবই ভালো। আমাদের প্রত্যেক শিক্ষক-শিক্ষিকা খুবই ভালোভাবে পাঠ দান করান। তিনি আরও বলেন, বিদেশী শিক্ষার্থীদের পাসপোর্টজনিতে কোনো সমস্যা হলে গুরুত্বসহকারে প্রতিষ্ঠানের প্রশাসনিক কর্মকর্তারা তা সমাধান করে থাকেন। এখানকার হোষ্টেল ব্যবস্থাও খুব ভালো। বিদেশী ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য ভিন্ন ভিন্ন হোষ্টেল রয়েছে বলে জানান তিনি। কলেজের সাথেই রয়েছে ৫০০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতাল এবং সুবিশাল একাডেমিক ভবন। যেখানে সকল সুযোগ সুবিধা রয়েছে।

করোনা মহামারিতে এখানকার সকল বিদেশী শিক্ষার্থী সুস্থ আছে। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা অনুযায়ী সকল বিদেশী শিক্ষার্থীকে করোনা ভ্যাকসিনের দুই ডোজ টিকা দেওয়া হয়েছে বলে জানান কলেজটির মাইক্রোবায়োলজী বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. আবু মো: মইনউদ্দিন আল-আমিন।

 

খুলনা গেজেট/এনএম




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!