শিক্ষামন্ত্রী ডাঃ দীপু মনি এমপি বলেছেন, রাজনীতির মুখ্য উদ্দেশ্য হওয়া উচিৎ দেশসেবা, জনসেবা। রাজনীতি ভোগের নয়, ত্যাগের। সেই ত্যাগের সর্বোচ্চ নিদর্শন দেখিয়েছেন জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। এই দেশ ও জাতির প্রতি, মাটি ও মানুষের জন্য তিনি সর্বোচ্চ ত্যাগ স্বীকার করেছেন। তাঁর আদর্শ ও জীবন থেকে শিক্ষা ও দীক্ষা নিয়ে দেশকে ভালোবাসতে হবে, দেশের মানুষের জন্য কাজ করতে হবে। বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের দেশ গড়তে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে জ্ঞান চর্চার সাথে সোনার মানুষ তৈরির প্রতিষ্ঠানে পরিণত করতে হবে।
তিনি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস উদযাপন উপলক্ষে সন্ধ্যায় ওয়েবিনারে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় আয়োজিত আলোচনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন। তিনি আরও বলেন, বঙ্গবন্ধুর ঋণ আমরা কোনোদিন পরিশোধ করতে পারবো না। তবে আদর্শকে সামনে রেখে তাঁর স্বপ্ন বাস্তবায়ন করার লক্ষ্যে কাজ করাটাই হবে আমাদের জন্য পাথেয়। এজন্য সবচেয়ে জরুরি নতুন প্রজন্মের মধ্যে বঙ্গবন্ধুর আদর্শকে ছড়িয়ে দিয়ে তাদের মধ্যে মূল্যবোধ সৃষ্টি। বঙ্গবন্ধুর ওপর লেখা তিনটি বইসহ অসংখ্য বই, লেখা এখন সহজে পাওয়া যায়। এগুলো পড়লে বঙ্গবন্ধুকে অনুধাবন করা সহজ হবে, নতুন প্রজন্মের মানস গঠনে সহায়ক হবে।
শিক্ষামন্ত্রী দশই জানুয়ারি বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ ফেরাকে স্বাধীন দেশ ও জাতির জন্য উল্লেযোগ্য দিন হিসেবে আখ্যায়িত করে বলেন, আমাদের বিজয় এদিন সত্যিকার অর্থে পূর্ণতা পায়। বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণে যেমন দেশকে স্বাধীন করতে, সশস্ত্র সংগ্রামের প্রস্তুতি নিতে বহুমাত্রিক দিকনির্দেশনা ছিলো, ঠিক তেমনি দশ জানুয়ারির ভাষণে সদ্যস্বাধীন বাংলাদেশকে গড়ার জন্য ভবিষ্যৎ রূপরেখা ছিলো। তিনি তাঁর সেই স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়ার কাজ শুরু করেছিলেন। মাত্র সাড়ে তিন বছরের মধ্যে বিধ্বস্ত একটি স্বাধীন রাষ্ট্রের কাঠামো তিনি তৈরিতে সক্ষম হন। একটি পরিপূর্ণ ও আধুনিক রাষ্ট্রের সংবিধান তৈরি হয়, আইন পাস হয়। দেশের বিভিন্ন সেক্টর ব্যাপকভাবে পুনর্গঠনের মাধ্যমে এগিয়ে যেতে থাকে। এটা আজকের দিনে ভাবাই যায় না।
খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. মোহাম্মদ ফায়েক উজ্জামানের সভাপতিত্বে আলোচনা অনুষ্ঠানে মুখ্য আলোচক হিসেবে বক্তব্য রাখেন বঙ্গবন্ধুর একান্ত সচিব বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্ণর ড. মোহাম্মদ ফরাসউদ্দিন।
তিনি ১০ জানুয়ারির প্রেক্ষাপটসহ প্রত্যক্ষদর্শী হিসেবে বিভিন্ন ঘটনা তুলে ধরে বলেন বঙ্গবন্ধুর মতো এতো বড় ব্যক্তিত্ব, প্রজ্ঞাবান ও দূরদর্শী নেতৃত্ব ইতিহাসে বিরল। তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুর প্রকৃতবন্ধু এদেশের কৃষক শ্রমিক। যারা কোনো সুবিধার জন্য ধর্ণা ধরেন না, করোনা মহামারীতেও ঝুঁকি নিয়ে যারা উৎপাদন সচল রেখেছেন।
তিনি আরও বলেন একটি সুবিধাবাদী শ্রেণি দেশকে পিছিয়ে দিয়েছে। নানাখাতে দুর্নীতির মাধ্যমে দেশের হাজার হাজার কোটি টাকা লুট করেছে। এই লুটেরা শ্রেণি, সুবিধাবাদী শ্রেণির প্রতি সাবধান বাণী উচ্চারিত হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সে পরিবেশ সৃষ্টি করছেন। এই শ্রেণি রক্ষা পাবে না। জনগণের আদালতে তাদের বিচারের সম্মুখীন হতে হবে। তিনি বলেন দশই জানুয়ারি এ দেশ জাতির জন্য পূর্ণতা পায়। এ দিনটির গুরুত্ব অসীম।
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য প্রফেসর ড. মোসাম্মাৎ হোসনে আরা, ট্রেজারার প্রফেসর সাধন রঞ্জন ঘোষ। ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) প্রফেসর খান গোলাম কুদ্দুস।সূত্র : খবর বিজ্ঞপ্তি।
খুলনা গেজেট/কেএম