খুলনা অঞ্চলে দাবদাহ বয়ে যাচ্ছে বেশ কয়েকদিন ধরে। আর এই দাবদাহের মাত্রা দিন দিন বেড়েই চলেছে। আজ ফের এই অঞ্চলে তাপমাত্রা পৌছেছে ৪২ ডিগ্রিতে। বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল) বিকেল ৩টায় দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের সীমান্তবর্তী জেলা চুয়াডাঙ্গা এবং যশোরে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৪২ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
এদিকে তীব্র দাবদাহে শ্রমিক, দিনমজুর, রিকশা-ভ্যানচালকরা অস্থির হয়ে পড়েছেন। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে রাস্তা-ঘাটে লোকজনের চলাচল সীমিত হয়ে পড়ছে। সবচেয়ে বেশি বিপাকে পড়েছেন কৃষক ও খেটে খাওয়া মানুষ। শহরের বেশ কিছু সড়কের পিচ গলে যেতে দেখা গেছে। প্রয়োজনীয় কাজ ছাড়া বাইরে না যেতে চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সতর্ক করা হচ্ছে। তীব্র দাবদাহে নগরীর ফুলবাড়িগেট এলাকায় গলে যাচ্ছে পিচ।
খুলনা আবহাওয়া অফিসের ইনচার্জ সিনিয়র আবহাওয়াবিদ আমিরুল আজাদ জানান, খুলনা বিভাগের মধ্যে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা বিরাজ করছে যশোর ও চুয়াডাঙ্গায়। এ দুটি জেলায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৪২.২ ডিগ্রি। এছাড়া খুলনায় ৪১.৩ ডিগ্রি, কুষ্টিয়ার কুমারখালীতে ৪১.২ ডিগ্রি, সাতক্ষীরায় ৪০ দশমিক ৫ ডিগ্রি, মোংলা ৪০ ডিগ্রি এবং কয়রায় ৪০.২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আর পাবনার ইশ্বরদীতে ৪১.৫ ডিগ্রি এবং রাজশাহীতে ৪১.৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে।
নগরীর শিববাড়ি মোড়ে দাড়িয়ে থাকা ব্যাংক কর্মকর্তা শহিদুল হারেজ (৫২) বলেন, তীব্র গরমে মধ্যে আমরা অফিসিয়াল ড্রেস পারতে পারছি না। যতক্ষণ বাইরে থাকি ততক্ষণ তো ঠান্ডা পানি ও স্যালাইন খেয়ে ক্লান্তি দূর করার চেষ্টা করছি। তারপর কাজ শেষে বাসায় ফিরে যতটা পারছি নিজেকে সুস্থ থাকার জন্য ঠান্ডা জাতীয় খাবার খাচ্ছি।
চুয়াডাঙ্গার প্রথম শ্রেণির আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জামিনুর রহমান বলেন, আজ চুয়াডাঙ্গায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৪২ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আজ থেকে জেলায় অতি তীব্র তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। পুরো এপ্রিল মাসজুড়ে তাপপ্রবাহ থাকতে পারে।
চলমান দাবদাহে ফসল রক্ষায় কৃষকদের পরামর্শ দিয়ে চুয়াডাঙ্গা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক বিভাস চন্দ্র সাহা বলেন, বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তর থেকে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী আগামী আরও কিছু দিন তীব্র দাবদাহ অব্যাহত থাকতে পারে। এ সময় বৃষ্টিপাত হওয়ার সম্ভাবনা খুবই কম। এমতাবস্থায় ফল বিভাগ, উদ্যানতত্ত্ব গবেষণা কেন্দ্র, বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট কর্তৃক চাষিদের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
চুয়াডাঙ্গার জেলা প্রশাসক ড. কিসিঞ্জার চাকমা বলেন, স্বাস্থ্য বিভাগের পরামর্শক্রমে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে তথ্য অফিসের সহায়তায় জেলার সব স্থানে মাইকিং করে জনসাধারণকে সতর্ক করা হচ্ছে। তারা যেন অতি প্রয়োজন ছাড়া ঘর থেকে বের না হয়।
খুলনা গেজেট/এমএম