বাংলাদেশে বিভ্রান্তিমুলক তথ্য, মিথ্যা খবর ও গুজব সংক্রান্ত বর্তমান পরিস্থিতি বিশ্লেষণ করার লক্ষ্যে খুলনায় “কনফ্রন্টিং মিসইনফরমেশন ইন বাংলাদেশ” শীর্ষক সংলাপ অনুষ্ঠিত হয়েছে।
বুধবার (২২ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে মার্কিন স্টেট ডিপার্টমেন্টের সহযোগিতায় গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর গভর্ন্যান্স স্টাডিজ (সিজিএস) এই সংলাপের আয়োজন করে। সংলাপে দেশের বিভিন্ন গনমাধ্যমের সম্পাদক ও সাংবাদিক, ফ্যাক্ট-চেকার এবং সোশ্যাল মিডিয়া ইনফ্লুয়েন্সাররা অংশগ্রহণ করেন।
সংলাপের সঞ্চালনা করেন সিজিএসের নির্বাহী পরিচালক জিল্লুর রহমান।
সংলাপের উন্মুক্ত আলোচনা পর্বে, দেশে সাংবাদিকতার বিভিন্ন সমস্যার বিষয়গুলো উঠে আসে এবং এর ফলে বিভ্রান্তিমুলক তথ্য, মিথ্যা খবর ও গুজব ছড়িয়ে পড়ার দিকটিও আলোচনা করা হয়। আলোচিত সমস্যাগুলোর মধ্যে রয়েছে তথ্য সংগ্রহে বাঁধা দেয়া বা তথ্য না দেয়া, সরকারের স্বদিচ্ছার অভাব ও ভুল তথ্য প্রদান, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের ভয়, রিপোর্টারদের নিয়মিত কাজের চাপ ও তার ফলে মানসম্পন্ন সংবাদের ঘাটতি, পর্যাপ্ত রিসোর্সের অভাব, প্রভাবশালী ব্যক্তিদের মালিকানাধীন মিডিয়া হাউজ ও তাদের নিজস্ব এজেন্ডা বাস্তবায়ন ইত্যাদি।
এছাড়াও, সংবাদ মাধ্যমে নির্ভুল তথ্য যাচাইয়ের জন্য ফ্যাক্ট-চেকারদের সাথে সমন্বয় ও কিভাবে তথ্য যাচাই করা যায় সে সম্পর্কেও আলোচনা করা হয়।
আলোচনায় খুলনা প্রেসক্লাবের সভাপতি এবং আজকের তথ্য’র সম্পাদক এস এম নজরুল ইসলাম বলেন, “ভুল তথ্য ছড়ানোর ক্ষেত্রে মিডিয়া সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। ফেসবুক সহ অন্যান্য অনলাইন সংবাদ মাধ্যমগুলোর কোনো দায়বদ্ধতা নেই। যার ফলে পৃথিবী যত ডিজিটালাইজড হচ্ছে, ফেক নিউজ তত বাড়ছে।
তিনি আরও বলেন, “যেকোনো তথ্যের উৎস কখনও প্রকাশ করা যাবে না। যেহেতু সংবাদ সংগ্রহের ক্ষেত্রে এ ধরনের বিভিন্ন উৎসের উপর নির্ভর করতে হয়, তা প্রকাশিত হলে পরবর্তীতে সে উৎস থেকে আর কোনো তথ্য পাওয়া সম্ভব হবে না।
এজেন্সি ফ্রান্স প্রেস (এএফপি)’র ফ্যাক্ট চেক এডিটর কদরুদ্দীন শিশির বলেন, ‘যেকোনো তথ্যের জন্য রাষ্ট্রীয় বা ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানের পাশাপাশি অনলাইন এখন একটি গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম হিসেবে কাজ করে। এছাড়াও গণমাধ্যম থেকে সাধারণ মানুষ যেসব তথ্য পায়, তার বেশিরভাগই রাজনীতিবিদ, গবেষক এবং ব্যবসায়িক গোষ্ঠি দ্বারা নিয়ন্ত্রিত।’
তিনি আরও বলেন, ‘অনুবাদের গড়মিল এবং ভুল ছবির মাধ্যমেও ভুল তথ্য ছড়ায়।’
সংলাপের শেষ পর্বে গণমাধ্যমকর্মীরা একটি জরিপে অংশগ্রহণ করেন এবং নিজেদের মধ্যে আলোচনা করে সংবাদ মাধ্যমে ভুল ও বিভ্রান্তমূলক তথ্য উপস্থাপন রোধে কার্যকরি ব্যবস্থার বিভিন্ন উপায় তুলে ধরেন।
“কনফ্রন্টিং মিসইনফরমেশন ইন বাংলাদেশ” সিজিএস’র বিষয়ের উপর ধারাবাহিক কার্যক্রমের দ্বিতীয় আয়োজন এবং এর পরে ঢাকায় ও ঢাকার বাইরে এমন আলোচনা ও প্রশিক্ষণ আয়োজিত হবে।
খুলনা গেজেট/এমএম