নতুন বছরের দু’মাস পার হতে চলল। অথচ এ সময়ে নগরীর অনেক বিদ্যালয় তাদের শিক্ষার্থীদের হাতে সব বই তুলে দিতে পারেনি। ফলে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে ব্যাহত হচ্ছে পাঠদান কর্মসূচি । অনেকেই শিক্ষা কার্যক্রম থেকে পিছিয়ে পড়ছে। যথাসময়ে পাঠ্যপুস্তক হাতে না আসায় উদ্বিগ্ন অভিভাবকরাও।
জাঁকজমক অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে প্রতিবছরের প্রথমদিন বই বিতরণ করা হয়। কিন্তু অতিমারি করোনার কারণে গত দু’বছর সে আয়োজনে ভাটা পড়েছে। ধাপে ধাপে শিক্ষার্থীদের হাতে তুলে দেওয়া হচ্ছে বই। প্রাথমিক পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের বই দেওয়া সম্ভব হলেও মাধ্যমিক পর্যায়ে কয়েকটি শ্রেণির শিক্ষার্থীরা এখনও সব বই পায়নি বলে জানা গেছে। বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে বই সংকট এর মূল কারণ।
খুলনা সেন্ট যোসেফস বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আলফ্রেড রনজিত মন্ডল বলেন, প্রাথমিক শিক্ষার্থীদের হাতে বছরের শুরুতে বই তুলে দেওয়া হয়েছে। অষ্টম শ্রেণির কিছু বই বাকী ছিল। সেগুলো দু’দিন আগে আনা হয়েছে। কিন্ত নবম শ্রেণির বাণিজ্য বিভাগে তিনটি এবং হিন্দু ও খ্রিষ্টান ধর্ম বই এখনও হাতে পায়নি। হাতে পেলে সেগুলো শিক্ষার্থীদের মাঝে বিতরণ করা হবে।
খুলনা নৌ-বহিনী স্কুলের এক অভিভাবক জানান, নবম শ্রেণির শিক্ষার্থীরা বাংলা, ইংরেজী, গণিত ও ইসলাম ধর্ম বই পায়নি। যথাসময়ে বই হাতে না পাওয়ায় তিনি বেশ উদ্বিগ্ন।
সরকারি মডেল মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আবুল হোসেন শেখ বলেন, বই নেওয়ার জন্য জেলা শিক্ষা অফিস থেকে মেইল দেয়। যে বইগুলো পাওয়া যায়নি সে ব্যাপারে দু’মাস পার হলেও এখনও কোন মেইল পায়নি এ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। তিনিও বাণিজ্য শাখার তিনটি বই না পাওয়ার কথা স্বীকার করেছেন। বইগুলো শিক্ষার্থীরা যথাসময়ে না পেলে তাদের শিক্ষা কার্যক্রম ব্যাহত হবে। এ পর্যন্ত পাঁচ ধাপে তারা বই পেয়েছেন বলে জানান। মার্চ মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহে বাকী বইগুলো বিদ্যালয়ে আসবে বলে তিনি জানান।
উদয়ন খুলনা জিলা স্কুলের প্রধান শিক্ষক শেখ মাকসুমুল হাকিম শাহিন জানান, শিক্ষার্থীদের সমস্যা হচ্ছে। শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা করার জন্য অনেক সময় শিক্ষার্থীরা বই ফটোকপি করে নিচ্ছে। আগামী মাসে বই পাওয়া যাবে বলে তিনি জানান।
সেন্ট যোসেফস উচ্চ বিদ্যালয়ে কথা হয় এক অভিভাবকের সাথে। তিনি বলেন, নতুন বই না পেলে ছেলে মেয়েরা পড়তে চায়না। পাঠ্যপুস্তক যথা সময়ে না আসলে ছেলে মেয়েরা লেখাপড়ায় পিছিয়ে পড়বে। অতি দ্রুত শিক্ষার্থীরা যেন বই পায় সেজন্য তিনি যথাযথ কর্তৃপক্ষের প্রতি অনুরোধ করেছেন।
তবে জেলা শিক্ষা অফিসার খন্দকার রুহুল আমিন খুলনা গেজেটের কাছে বলেছেন উল্টো কথা। বই পায়নি এমন কোন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সম্পর্ক তার জানা নেই। কি কারণে তারা বই পায়নি তার সঠিক কারণ তিনি জানার চেষ্টা করবেন এবং সেব্যাপারে ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন বলে জানিয়েছেন।
খুলনা গেজেট/ টি আই