খুলনা, বাংলাদেশ | ২৮ আশ্বিন, ১৪৩১ | ১৩ অক্টোবর, ২০২৪

Breaking News

  বরিশাল শেরে ই বাংলা মেডিকেলে আগুন, নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে ফায়ার সার্ভিসের ৮ ইউনিট
  বিসর্জনে আজ শেষ হচ্ছে দুর্গোৎসব

প্রশাসনের অভিযানের পরও খুলনায় ডিমের দাম কমেনি!

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রশাসনের অভিযানের পরও খুলনার বাজারে ডিমের দাম তেমন কমেনি। বরং জ্বালানী তেলের দাম বৃদ্ধির দোহাই দিয়ে বাড়ানো দামকে আরও বৃদ্ধির নানা অজুহাত দাড় করাতে ব্যস্ত এ খাতের ব্যবসায়ীরা।

খুলনার বাজারে এক হালি ডিমের মূল্য এখন ৪৬- ৪৮ টাকা। যা ১৫ দিন আগেও বিক্রি হয়েছে ৩২ টাকায়। ডিমের দাম বৃদ্ধিতে ক্রেতারা প্রচন্ড ক্ষুব্ধ। অনেকেই তাদের খাদ্য তালিকা থেকে বাদ দিয়েছে এ আইটেমকে।

ক্রেতারা বলছেন, মাছ-মাংসের ঊর্ধ্বমুখী দামের কারণে নিম্ন ও মধ্যবিত্ত পরিবারের নিত্যদিনের খাবারের তালিকায় জায়গা নিয়েছিল ডিম। কিন্তু সেই ডিমের দামও এখন আকাশ চুম্বি। প্রতি পিস ফার্মের মুরগির ডিম ১১ থেকে ১২ টাকার কমে বাজারে পাওয়া যাচ্ছে না। যা আগে ৮ টাকা বিক্রি হতো। অর্থাৎ ৯৬ টাকা ডজনে বিক্রি হওয়া ডিম খুচরা বাজারে এখন বিক্রি হচ্ছে ১৩৮ টাকায়।

নিউ মার্কেটের ডিম ব্যবসায়ী মুরাদ হাসান বলেন, বর্তমানে ডিমের সরবরাহ কম। গরমের কারণে ডিমের উৎপাদন কমে গেছে। এক হাজার মুরগী প্রতিদিন ৮০০ ডিম দিচ্ছে। এক হাজার ডিমের অর্ডার দিলে সাড়ে ৬০০ ডিম পাওয়া যাচ্ছে। মাঝে মধ্যে অর্ধেকের কম আসছে।

তিনি আরও বলেন, ডিমের সরবরাহ খরচসহ রোববার প্রতি পিচ লাল ডিম ১০ টাকা ১০ পয়সায় আর সাদা ডিম সাড়ে ৯ টাকায় কিনেছি।

তিনি জানান, সব খরচসহ প্রতিটি লাল ডিম সাড়ে ১১ টাকা ও সাদা ডিম সাড়ে ৯ টাকায় বিক্রি করা হচ্ছ। সহসাই ডিমের দাম কমছে না। আগামীতে আরও বাড়তে পারে বলেও তিনি মন্তব্য করেছেন।

খুলনা পোল্ট্রি ফিস ফিড শিল্প মালিক সমিতির মহাসচিব ও খুলনা বিভাগীয় সমন্বয়কারী এস এম সোহরাব হোসেন খুলনা গেজেটকে বলেন, প্রতি ডিমে উৎপাদন খরচ বেড়ে বর্তমানে খরচ হয় সাড়ে ৮ টাকা। পরিবহন খরচ বেড়েছে দ্বিগুণ। রাশিয়া ইউক্রেন যুদ্ধের পর খাবারের দাম বেড়েছে। তাছাড়া ফার্মের মুরগীর খাবার দেশের বাইরে থেকে আমদানি করতে হয়। ২২ টাকার খাবার ৩৮ টাকা আর ৪৫ টাকার খাবার ৬৫ টাকায় কিনতে হচ্ছে। বেড়েছে কিষাণের মূল্য আর ভ্যাকসিনের দাম। তাছাড়া ১০ টাকার মুরগীর বাচ্চা ৪৮ টাকায় কিনতে হচ্ছে।

ডিমের দাম বৃদ্ধির জন্য তিনি বহুজাতিক কোম্পানীকে দায়ী করেছেন। এরা এ ব্যবসার ৫৫ থেকে ৬০ ভাগ নিয়ন্ত্রণ করছে। তারা ১০০ ভাগ নিয়ন্ত্রণ করতে চায়। তারা দেশের বাইরে থেকে ডিম ও মাংস আমদানি করতে চায়। যা ডিম ও মাংসের মূল্য বৃদ্ধির অন্যতম কারণ।

ময়লাপোতা সান্ধ্য বাজারের ক্রেতা সাকিব হোসেন বলেন, ব্যবসায়ীরা জ্বালানী তেলের মূল্য বৃদ্ধির কারণ দেখিয়ে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম বাড়িয়েছে। একটি ডিমের উৎপাদন খরচ সাড়ে ৮ টাকা আর পরিবহন খরচ বেড়েছে ৮ পয়সা। তাহলে একটি ডিমের দাম ৮ টাকা ৫৮ পয়সা পড়ে। দোকানির খরচ এক টাকা হলে সেখানে এক পিচ ডিমের দাম ৯ টাকা ৫৮ পয়সা পড়ে। এ যেন পুকুর চুরি বলে তিনি মনে করেন।

এ কথা বলার সময় পাশে দাড়ানো বেসরকারি একজন কর্মকর্তা বলেন, কোন জিনিসের দাম একবার বাড়ালে তা আর কমতে চায়না। আর যাদের দেখার কথা তারা দেখেন না।

তবে গত কয়েকদিন ডিমের দোকানে ভোক্তা অধিকারের পক্ষ থেকে অভিযান চালিয়ে কিছু ব্যবসায়ীকে জরিমানা করা হলেও তার কোন প্রভাব মূলত: বাজারে পড়েনি। বরং দাম আরও বাড়ানোর পায়তারা করছে ব্যবসায়ীরা। আর এ জন্য এ খাতের নানা সংকটের কথা এখন তারা প্রচার করছে।খু

খুলনা জেলা উন্নয়ন সমন্বয় কমিটির আগস্ট মাসের সভায় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক শিকদার শাহীনুর রহমান জানান, মোবাইলকোর্টের মাধ্যমে জুলাই মাসে অভিযান পরিচালনায় ২২টি প্রতিষ্ঠানকে এক লাখ ৮৮ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে।

এদিকে ডিমের দাম অস্বাভাবিক হারে বাড়ানোর কারসাজিতে জড়িতদের শাস্তি দাবি করেছে দেশের ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআই। নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যসামগ্রীর বাজার ও মূল্য পরিস্থিতি বিষয়ে সোমবার নিজস্ব কার্যালয়ে আয়োজিত মতবিনিময় সভায় সংগঠনটির নেতারা এ দাবি জানিয়েছেন।




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!