খুলনা, বাংলাদেশ | ৪ আষাঢ়, ১৪৩১ | ১৮ জুন, ২০২৪

Breaking News

  চট্টগ্রামের ফটিকছড়িতে মহিষের তাণ্ডবে বৃদ্ধের মৃত্যু
  রাজধানীতে প্রাইভেট কার নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে নিহত ২

প্রধানমন্ত্রীর উপহারেই ঈদ কাটলো নূরজাহান বেগমের

দিঘলিয়া প্রতিনিধি

নুরজাহান বেগম। বয়স ৭০ এর কাছাকাছি। তার এখন স্থায়ী ঠিকানা খুলনার দিঘলিয়া ঈদগাঁহ সংলগ্ন ভৈরব নদীর পাড়ে ‘ভৈরব নগর’ আশ্রয় প্রকল্পে। স্বামী ওহেদ চৌকিদার ১৯৭১ সালে পাক হানাদার বাহিনীর হাতে শহীদ হন। মৃত্যুকালে তিনি স্ত্রী সন্তানের জন্য কিছুই রেখে যাননি। সেই থেকে শুরু তার সংগ্রামী জীবন। পরের বাড়ীতে থেকে, পরের কাজ করে, খেয়ে না খেয়ে দুই ছেলে মেয়ে নিয়ে কষ্টের জীবন কাটিয়েছেন। এভাবে কেটে গেছে দীর্ঘ ৫০ বছর। সর্বশেষ তিনি ভাড়া বাসায় থাকতেন উপজেলা সংলগ্ন দেয়াড়া মোল্যার মোড় এক বাড়িতে।

বুধবার ঈদের দিন বিকালে ‘ভৈরব নগর’ আশ্রয়ণ কেন্দ্রে ২০নং ঘরের বারান্দায় আপন মনে মসলা বাটতে দেখা যায় নুরজাহান বেগমকে। পাশে ছোট একটা পাত্রে কয়েক টুকরো মাংস। কি করছেন? উত্তরে জানালেন, ‘সকালে ইউএনও সাহেব আধা কেজির মতো মাংস, সেমাই, চিনি, চাল আর আলু দিয়ে গেছে। সে গুলো এখন রান্না করবো। আরেক জায়গা থেকে পাইছি কয়েক টুকরো কুরবানীর গোশত। তা আরেক দিন খাবো বলে এক জনের ফ্রিজে রাখিছি। এই যা ঈদের উপহার পালাম। মাঝে মধ্যে ইউএনও সাহেব কিছু ত্রাণ দিয়ে থাকে। শহীদ পরিবারের সদস্য হিসাবে দিয়াড়ার আবজাল বাঁচি থাকতি একবার উপজেলায় যায়ে ১টা প্লেট আর ১টা থালা দিছিলো। বছরে ১টা কম্বল পায়। ইউএনও সাহেব কইছে তোমাদের জন্য (শহীদ পরিবারের সদস্য হিসাবে) বড় পুরস্কার আসতিছে। কি পুরস্কার তা জানিনে। চেয়ারম্যান, মেম্বাররা আমাদের কোন খবর রাখে না’। নূরজাহান বেগম তাঁর ভ্যান চালক ছেলে হাবিব এবং হাবিবের স্ত্রীকে নিয়ে বসবাস করছেন এ আশ্রয়ণ কেন্দ্রে।

জীবনের শেষ পর্যায় এসে বিনামূল্য ঘর এবং জমি পেয়ে তিনি দারুণ উচ্ছ্বসিত। এ জন্য তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং দিঘলিয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসারের প্রতি কৃতজ্ঞা প্রকাশ করেছেন।

নূরজাহান বেগমের মতো আরো ২১ টি পরিবার স্বাচ্ছন্দ্যে বসবাস করছেন ‘ভৈরব নগর’ আশ্রয়ণ প্রকল্পে। ঈদের নামাজ শেষে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ মাহাবুবুল আলম দুঃস্থ, গরীব ও অসহায় মানুষদের জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ঈদ উপহার মাংস, সেমাই, চিনি, চাল আর আলুর প্যাকেট বিতরণ করেন দিঘলিয়া উপজেলায় ১ম পর্যায়ে মুজিববর্ষ উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রীর উপহার বিনামূল্য ঘর এবং জমি পাওয়া হাজীগ্রাম ‘আতাই’ এবং ‘ভৈরব নগর’ আশ্রয়ণ প্রকল্পে সুবিধাভোগী ৭০ টি পরিবারের মাঝে। প্রধানমন্ত্রীর ঈদ উপহার পেয়ে দারুণ উচ্ছ্বসিত এসব পরিবার।

প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ বিতরণের সময় ইউএনওর সঙ্গে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন দিঘলিয়া উপজেলা চেয়ারম্যান শেখ মারুফুল ইসলাম, উপজেলা সহকারী কমিনশার (ভূমি) মোঃ আলীমুজ্জামান, ভাইস চেয়ারম্যান মোঃ আলী রেজা বাচা, মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান মমতাজ শিরীন ময়না, স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন দিঘলিয়া উন্নয়ন সংস্থার সহ-সভাপতি মোঃ শাহাজান মোড়ল প্রমুখ।

 

খুলনা গেজেট/এনএম




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!