প্রচন্ড শীতের কারণে চৌগাছা এলাকার খেটে খাওয়া মানুষেরা এক প্রকার অসহায় হয়ে পড়েছেন। শীতের কারণে সময়মত বাড়ি থেকে বের হতে না পারায় অনেকেই কাজ পাচ্ছেনা আবার কাজ বন্ধ হয়ে গেছে অনেকের। উপজেলার বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ছাত্র ছাত্রীর উপস্থিতিও কম হয়ে গেছে।
পোষের দিন যত যাচ্ছে ততই যেন শীত জেঁকে বসতে শুরু করেছে। গত কয়েক দিন ধরে রাত-দিন সমানে শীত পড়তে শুরু করেছে। সকাল ১০ টার আগে সূর্যের আলোর দেখা মিলছেনা। একদিকে প্রচন্ড শীত অন্যদিকে ঘন কুয়াশা সব মিলিয়ে কষ্টেই কাটছে চৌগাছাবাসির দিন। শীতে দিন আনা দিন খাওয়া মানুষেরা সময় মত বাড়ি থেকে বের হতে পারছেন না। যার কারণে দিনের কাজও তারা করতে পারছেনা। ফলে খেটে খাওয়া ওই সব মানুষেরা বেশ কষ্টে দিন পার করছেন। ঘরে কিংবা বাইরে সর্বত্রই সমানভাবে ঠান্ডা অনুভুত হচ্ছে। চৌগাছা উপজেলা সদরের ব্যবসায়ীরা শীত উপেক্ষা করে বাজারে এসে দোকান খুলে বসলেও বেশি সময় দোকানে বসতে পারছেন না। ব্যবসায়ীরা দোকানের সামনেই কাগজে আগুন ধরিয়ে শীত নিবারনের চেষ্টা করছেন।
গ্রামাঞ্চলে শীতের প্রকোপ আরও বেশি বলে খবর পাওয়া গেছে। উপজেলার আড়পাড়া গ্রামের কামারুল ইসলাম, কান্দি গ্রামের আব্দুর রাজ্জাক, পেটভরা গ্রামের আব্দুল গনি জানান, দিনের বেলায় শীতের প্রকোপ কিছুটা কম থাকলেও সন্ধ্যা হতে না হতেই শীত যেন জড়িয়ে ধরছে। মাঠের স্বাভাবিক কাজকর্ম হচ্ছে না। বাড়িতে পালন করা পশু পাখিরাও শীতে কাহিল হয়ে পড়েছে। বর্তমান সময় হচ্ছে ইরি ধানের চারা তৈরীর উপযুক্ত সময়, কিন্তু প্রচন্ড শীতের কারণে ধানের চারার বেশ ক্ষতি হচ্ছে। এছাড়া মাঠে উঠতি ফসলও স্থির হয়ে আছে, স্বাভাবিক বৃদ্ধি পাচ্ছেনা।
বুধবার সকাল ৯ টার সময় চৌগাছা পৌর এলাকার পুরাতন উত্তরণ সিনেমা হলেও সামনে বেশ কিছু মানুষকে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায়। তারা সকলেই রাজমিস্ত্রির সহকারীর কাজ করেন। গত তিন দিনের প্রচন্ড শীতে তাদের কাজ বইছেনা, তাই পরিবার নিয়ে তারা বেশ কষ্টে আছেন। এসময় কথা হয় উপজেলার বল্লভপুর গ্রামের মতিয়ার রহমান, পেটভরা গ্রামের মজনু মোল্লা, সাদিপুর গ্রামের আরিফুল ইসলাম, টেংগুরপুর গ্রামের সাহেব আলীর সাথে। তারা জানান, শীতকে উপেক্ষা করে কাজের সন্ধানে চৌগাছায় ছুটে আসি, কিন্তু কাজ না পেয়ে বাড়িতে ফিরে যাচ্ছি। গত তিন দিন ধরে কাজ না পেয়ে পরিবার নিয়ে বেশ কষ্টে আছেন বলে তারা জানান।
সকাল সাড়ে ৯ টার দিকে চৌগাছা মেইন বাসষ্টান্ডের সড়কের পাশে কাগজে আগুন দিয়ে শীত নিবারণের চেষ্টা করতে দেখা যায় কয়েকজন ব্যবসায়ীর। এ সময় ব্যবসায়ী আরিফ হোসেন, মোহন আলী, ইউছুপ আলী, বাবলুর রহমান জানান, শীতের ফলে বাড়ি থেকে বের হওয়ায় কষ্টদায়ক। তারপরও যেহেতু ব্যবসা করি তাই বাজারে এসে দোকান খুলে বসি। বাইরে এসে কাগজে আগুন দিয়ে শীত নিবারণের চেষ্টা করছি।
এদিকে প্রচন্ড শীতে স্কুলে শিক্ষার্থীদের উপস্থিতিও কমে গেছে বলে খবর পাওয়া গেছে। প্রতিভা এডাস স্কুলের ইনচার্জ রোজী মাহমুদ, সবুজ কুঁড়ি আইডিয়াল স্কুলের অধ্যক্ষ শফিকুল আজম মিল্টন, বেলা প্রি ক্যাডট স্কুলের সিনিয়র শিক্ষক সাফিয়া সুলতানা জানান, শীতে অভিবাকরাই বাসা থেকে বের হতে পারছেনা। ফলে স্কুলে শিক্ষার্থীদের উপস্থিতিও কমে গেছে।