হঠাৎ করে বেড়ে যাওয়া পেঁয়াজের দাম কমতে শুরু করেছে। পাইকারী ও খুচরা বাজারে প্রতিকেজি পেঁয়াজের দাম ৮ থেকে ১০ টাকা পর্যন্ত কমেছে। তেলের বাজারে কোন সুখবর নেই। উচ্চমূল্যে স্থিতি রয়েছে চিনির বাজার। নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্য বৃদ্ধিতে বিপাকে মধ্যবিত্ত।
খুলনা নগরীর কয়েকটি বাজার ঘুরে জানা গেছে, মানভেদে প্রতিকেজি পেঁয়াজ এখন ৬০ থেকে ৭০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। যা গত সপ্তাহে বিক্রি হয়েছে ৮০ টাকায়। একই রয়েছে ভোজ্যতেলের বাজার দর। প্রতিটি এক লিটারের বোতল ১৫৫ টাকা ও খোলা সয়াবিন তেল ১৪৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। প্রতিকেজি চিনি ৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
নগরীর সোনাডাঙ্গাস্থ ট্রাক টার্মিনাল পাইকারী কাঁচা বাজারের ব্যবসায়ী মোঃ আব্দুল মালেক জানান, গত এক সপ্তাহের ব্যবধানে প্রতিকেজি পেঁয়াজের দাম ১০ টাকা করে কমে গিয়ে ৫২ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ভারতীয় পেঁয়াজের আমদানি শুল্ক কমিয়ে দেওয়ার কারণে চাষীরা তাদের ঘর থেকে মজুদ রাখা এ পণ্যটি বের করে দিচ্ছে। ফলে বাজারে পেঁয়াজের আমদানি বেড়েছে। যে কারণে পণ্যটির মূল্য কমে গিয়েছে। পূজার কারণে গত তিন দিন বর্ডার বন্ধ থাকায় বাজারে ভারতীয় পেঁয়াজ তেমন নেই। তবে বাজারে যে পরিমাণ পেঁয়াজ আসছে তাতে মনে হয় আগামী কয়েকদিনের মধ্যে এ পণ্যটি ক্রেতাদের হাতের নাগালের মধ্যে চলে আসবে বলে তিনি এ প্রতিবেদককে জানিয়েছেন।
ওই বাজারে অপর ব্যবসায়ী আবু সাইদ জানান, বাজার দর উঠতি দেখে তিনি অধিক পেঁয়াজ ক্রয় করেছিলেন। বাজারে ব্যাপক আমদানি হওয়ায় এ পণ্যটির দর কমতে থাকায় তিনি লসের সম্মুখীন হচ্ছেন বলে এ প্রতিবেদককে জানিয়েছেন।
নগরীর ময়লাপোতা মোড়ে কথা হয় খুচরা ব্যবসায়ী মোঃ আব্দুস সালামের সাথে। কাঁচামালের রেটের ধরা বাঁধা কোন নিয়ম নেই। সকালে এক দাম থাকে, বিকেলে এসে হয় আরও এক দাম। মাসের প্রথমদিকে পেঁয়াজের দাম বৃদ্ধির দিনেও তিনি লসে বিক্রি করেছেন, আর দাম কমে যাওয়ার সময়ও তিনি কম দামে বিক্রি করছেন। তাই পেঁয়াজ একটা নিদৃষ্ট দামে বিক্রি করা জন্য সংশ্লিষ্টদের প্রতি অনুরোধ জানিয়েছেন। না হলে তাদের মতো ছোট ব্যবসায়ীরা লসের পরিমাণ গুনতে গিয়ে এক সময় শেষ হয়ে যাবে বলে তিনি আরও জানিয়েছেন।
গত বছরের ডিসেম্বর মাসের শেষের দিকে আন্তর্জাতিক বাজারে দাম বৃদ্ধি অজুহাত দেখিয়ে ভোজ্য তেলে বাজার মূল্য বৃদ্ধি পেলেও উচ্চমূল্যে স্থিতিশীল রয়েছে এ পণ্যটির দাম। এ বছরও কমার লক্ষণ নেই বলে ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন।
নগরীর দোলখোলা মোড়ের খুচরা ব্যবসায়ী মোঃ আব্দুল হক জানান, মূল্য বৃদ্ধির কোন আশংকা নেই। সরকার পেঁয়াজ ও চিনির ওপর থেকে শুল্ককর কমাতে শুরু করেছে। আগামীকাল থেকে এ সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন হবে। তবে তেলের উপর থেকে কমানো হলে কমতে পারে এ পণ্যটির দামও। নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের দাম বাড়তি হওয়ার কারণে অনেকেই মালামাল কম ক্রয় করেছে। তার দোকানে প্রতিটি এক লিটারের বোতল সয়াবিন তেল ১৫৫ টাকায় ও প্রতি কেজি খোলা সয়াবিন তেল ১৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
টুটপাড়া এলাকার জোড়াকল বাজারের ব্যবসায়ী সেলিম জানান, গত দু’মাস ধরে চিনির দাম উর্ধমুখী রয়েছে। ৮৪ টাকা দরে প্রতিকেজি চিনি বিক্রি হচ্ছে তার দোকানে। বাজার থেকে বেশী দরে ক্রয় করে তাকে এ দামে বিক্রি করতে হচ্ছে বলে তিনি জানিয়েছেন এ প্রতিবেদককে।
খুলনা গেজেট/ এস আই