বর্তমান বিশ্বে মানুষ সম্পূর্ণ প্রযুক্তিনির্ভর। সকালে দিন শুরুর পর রাতে ঘুমানের আগ পর্যন্ত বিভিন্ন ইলেকট্রনিক ডিভাইস ব্যবহার করেন সবাই।
কিন্তু বিশ্বে এমন একটি জায়গা রয়েছে যেখানে কোনো ইলেকট্রিক ডিভাইস কাজ করে না। শুনতে অবাক লাগলেও, মেক্সিকোর চিহুয়াহুয়ান মরুভূমিতে এমন একটি রহস্যময় স্থান রয়েছে। এটিকে মাপিমির সংরক্ষিত অঞ্চল হিসেবেও ধরা হয়। স্থানটি ‘জোন অব সাইলেন্স’ নামে পরিচিত।
রহস্যময় এই জায়গা অনেকটা বারমুডা ট্রায়াঙ্গেলের মতো। নির্দিষ্ট স্থানে যাওয়ার পর আর কোনো ইলেকট্রনিক ডিভাইস স্বাভাবিকভাবে কাজ করে না। রেডিও সিগন্যাল পাওয়া যায় না। এছাড়া কম্পাসের কাঁটাও অস্বাভাবিকভাবে দিক পরিবর্তন করে। স্থানীয়দের মাঝে এ নিয়ে বিভিন্ন কল্পকাহিনি প্রচলিত আছে। কিন্তু আজ পর্যন্ত কেউ এর প্রকৃত রহস্য উন্মোচন করতে পারেননি।
১৯৩৮ সালে এই স্থানে একটি উল্কাপাত হয়। সেই সময় স্থানটি সবার নজরে আসে। এরপর ১৯৫৪ সালে সেখানে দ্বিতীয়বার উল্কাপাত হয়। তখন থেকেই স্থানটি ঘিরে অস্বাভাবিক বিষয়গুলো ঘটতে থাকে।
জায়গাটির নাম ‘জোন অব সাইলেন্স’ রাখা হয় ১৯৬৬ সালে। মেক্সিকোর রাষ্ট্রায়ত্ত্ব তেল প্রতিষ্ঠান পেমেক্স-এর পক্ষ থেকে সেই স্থানে অভিযান চালোনা হয়। দলপ্রধান অগাস্টো হ্যারি সেখানে গিয়ে যখন রেডিওর সিগন্যাল পাচ্ছিলেন না তখন তিনি স্থানটির নাম ‘জোন অব সাইলেন্স’ দেন।
১৯৭০ সালে ‘অ্যাথেনা’ নামে একটি মিসাইল উটাহর গ্রিন রিভার থেকে নিউ মেক্সিকোর হোয়াইট স্যান্ডে নিক্ষেপের জন্য প্রস্তুত করা হয়। কিন্তু মাসিপির জোন অব সাইলেন্সে এসে এটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলে। বিজ্ঞানীরা যখন সেখানে যান, দেখতে পান— কম্পাস ও জিপিএস অস্বাভাবিকভাবে কাজ করছে ফলে মিসাইলটি দিকভ্রান্ত হয়েছে।
জানা যায়, বারমুডা ট্রায়াঙ্গল আর জোন অব সাইলেন্স একই অক্ষাংশে অবস্থিত। প্রতিনিয়ত অদ্ভুত সব ঘটনার কারণে বিশ্বের অন্যতম রহস্যময় স্থানের তালিকায় রয়েছে এটি। তবে রহস্য উন্মোচনে গবেষণা চালিয়ে যাচ্ছেন গবেষকরা। সব দেখেশুনে তারা জায়গাটিকে নতুন আরেকটি বারমুডা ট্রায়াঙ্গেল বলছেন!
খুলনা গেজেট/কেএম