খুলনা সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আলহাজ্ব তালুকদার আব্দুল খালেক বলেছেন, জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব থেকে পৃথিবীকে রক্ষায় বিশ্ব নেতাদের ঐক্যবদ্ধভাবে এগিয়ে আসতে হবে। যে দাবিটি সম্প্রতি কপ সম্মেলনে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তুলে ধরেছেন।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের অতীতের কোন সরকার প্রধান এভাবে কপ সম্মেলনে গিয়ে দাবিনামা তুলে ধরেননি। অর্থাৎ বর্তমান সরকার বিশ্ব নেতাদের সাথে ঐক্যবদ্ধ হয়ে জলবায়ু পরিবর্তনের হাত থেকে রক্ষায় বলিষ্ট ভূমিকা রাখছে। সিটি মেয়র আজ রোববার সকালে নগরীর রূপসাস্থ কারিতাস মিলনায়তনে উপকূলীয় শিশুদের জলবায়ু সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এসব কথা বলেন।
তিনি আরও বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে বিশ্বের ঝুঁকিপূর্ণ দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশ অন্যতম। আর বাংলাদেশের মধ্যে সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিপূর্ণ উপকূলীয় এলাকা। বাংলাদেশের দক্ষিণে যেমন সমুদ্রের কারণে প্রাকৃতিক দুর্যোগের ঝুঁকি অনেকটা বেশি তেমনি সুন্দরবনের কারণে আমরা অনেক ক্ষতি থেকে রক্ষা পাই। এজন্য তিনি সুন্দরবন রক্ষার মধ্যদিয়ে দুর্যোগ মোকাবেলায় সকলকে এগিয়ে আসার আহবান জানান। তবে এসব দাবির ব্যাপারে সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের পাশাপাশি আগামী দিনের ভবিষ্যৎ শিশুদের অনেক ভূমিকা পালনের সুযোগ রয়েছে। এজন্য শিশুদের নিয়ে সম্মেলনের আয়োজন করে জেজেএস একটি দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে।
জেজেএস’র চেয়ারপার্সন জাকিয়া আক্তার হোসেনের সভাপতিত্বে এবং নির্বাহী পরিচালক এটিএম জাকির হোসেনের সঞ্চালনায় এসময় বিশেষ অতিথি ছিলেন, পরিবেশ অধিদপ্তর, খুলনার উপ-পরিচালক এমডি এমদাদুল হক, খুলনা প্রেসক্লাবের সভাপতি এসএম জাহিদ হোসেন, কনসার্ণ ওয়ার্ড ওয়াইডের কান্ট্রি ডিরেক্টর ফিওনা ম্যাকলিসেট।
সম্মেলনে শিশুদের জন্য ১০ দফা দাবিনামা পেশ করেন শিশু প্রতিনিধি বৈশাখী সরকার। পরে সিটি মেয়রের কাছে শিশু প্রতিনিধি বৈশাখী সরকার ও সাজ্জাদ হোসেন দাবিনামা পেশ করেন। দাবিনামায় উপকূলীয় বন্যা দুর্গত শিশুদের সুরক্ষায়, সরকারি-বেসরকারি দপ্তরের পদক্ষেপ, দুর্যোগের ফলে শিশুদের শিক্ষা ও বিনোদন ব্যহত হয়, স্বাভাবিক বিকাশ বাধাগ্রস্থ হওয়ার ফলে কর্তৃপক্ষকে নজর দেয়ার আহবান, শিশুবান্ধব আশ্রয়কেন্দ্র তৈরী, উপকূলের প্রতি সরকারের নজরদারি, জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষতিপূরনে কর্তৃপক্ষের প্রতিশ্রুতির বাস্তবায়ন, ধনী দেশে পরিমিত ব্যবহার নিশ্চিত ও উপকূলীয় দেশ রক্ষাসহ ১০ দফার বাস্তবায়ন দাবি করা হয়।
সভাপতির বক্তব্যে জাগ্রত যুব সংঘ (জেজেএস) এর চেয়ারপার্সন জাকিয়া আক্তার হোসেনের বলেন “আজকের বিশ্বে হতাশার কোনো অভাব নেই। যেমন, জলবায়ু পরিবর্তন, মহামারি, দারির্দ্য ও অসমতা, ক্রমবর্ধমান অবিশ্বাস এবং ক্রমবর্ধমান জাতীয়তাবাদ হতাশার কারণ হতে পারে। তবে এখানে আশাবাদী হওয়ারও একটি কারণ আছে শিশুরা বয়স্কদের বিবর্ণ দৃষ্টিতে আজকের বিশ্বকে দেখতে চায় না। শিশুরা তাদের পুরোনো প্রজন্মের তুলনায় আশাবাদী, অনেক বেশি বিশ্বমুখী এবং বিশ্বকে একটি ভালো স্থানে পরিণত করতে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ”।
সম্মেলনে জলবায়ু সংক্রান্ত বিভিন্ন বিষয়ে প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন, ডিজাস্টার ফোরাম ফাউন্ডেশনের সদস্য সচিব গওহর নাইম ওয়ারা, ম্যাক্স ফাউন্ডেশনের আঞ্চলিক ব্যবস্থাপক শেখ বাবুল, কুয়েটের প্রফেসর ড. তরিকুল ইসলাম, দৈনিক কালের কন্ঠের খুলনা ব্যুরো প্রধান গৌরাঙ্গ নন্দী, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ বিজ্ঞান ডিসিপ্লিনের প্রফেসর ড. আতিকুল ইসলাম, কনসার্ন ওয়ার্ল্ড ওয়াড’র দক্ষিণ কোরিয়ার কান্ট্রি ডিরেক্টর সরজ দাস, খুবি’র প্রফেসর ড. নাজমুস সাদাত, কুয়েট’র প্রফেসর ড. মোস্তফা সারোয়ার, খুবি’র পরিবেশ বিজ্ঞান ডিসিপ্লিনের প্রসেফর ড. দিলিপ কুমার দত্ত, কেএনএইচ’র কান্ট্রি ডিরেক্টর শুভময় হক, কনসার্ন ওয়ার্ল্ড ওয়াইড-এর প্রকল্প সমন্বয়কারী এমরানুল হক, দৈনিক পূর্বাঞ্চলের স্টাফ রিপোর্টার এইচ এম আলাউদ্দিন, শিশু প্রতিনিধি সুইটি, লামিয়া আক্তার, রকিবুল ইসলাম নয়ন।
খুলনা গেজেট/ এস আই