খুলনা, বাংলাদেশ | ৬ জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩১ | ২০ মে, ২০২৪

Breaking News

  হেলিকপ্টার দুর্ঘটনায় নিঁখোজ ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহীম রাইসি
  বাজারে থাকা এসএমসি প্লাসের সব ইলেক্ট্রোলাইট ড্রিংকস প্রত্যাহারের নির্দেশ, বাজারজাতকারীকে ১৬ লাক টাকা জরিমানা
দুই সোর্সের সাত বছরের কারাদন্ড

পুলিশ হেফাজতে জনি হত্যা মামলায় এসআই জাহিদসহ ৩ জনের যাবজ্জীবন

গেজেট ডেস্ক

রাজধানীর পল্লবী থানা পুলিশ হেফজতে ইশতিয়াক হোসেন জনি নামে এক যুবককে হত্যা মামলায় তৎকালিন এস আই জাহিদ, এএসআই রাশেদুল ইসলাম, কামরুজ্জামান মিন্টুকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছে আদালত। একই সাথে পুলিশের সোর্স রাশেদ ও সুমনকে সাতবছরের কারাদণ্ডাদেশ দিয়েছে আদালত। এসআই জাহিদ ও সোর্স সুমনের উপস্থিতিতে এই আদেশ দেয়া হয়। পুলিশ হেফাজতে নির্যাতন ও প্রতিকার আইনে এটিই দেশের প্রথম কোনো হত্যা মামলার রায়।

বুধবার (৯ সেপ্টেম্বর) দুপুরে মহানগর দায়রা জজ আদালতের বিচারক কে এম ইমরুল কায়েশ এ রায় ঘোষণা করেন।

এএসআই রাশেদুল ইসলাম পলাতক থাকলেও বাকিরা জামিনে রয়েছে। এ মামলায় ২৪ জন আদালতে সাক্ষ্য দিয়েছেন। টানা ১০ কার্যদিবস যুক্তিতর্ক শেষে রায়ের এই দিন ঠিক করা হয়।

রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী (পিপি) তাপস কুমার পাল গণমাধ্যমে বলেন, ‘আজ দুপুরে রায় ঘোষণার সময় আসামিদের আদালতে আনা হলেও এজলাসে তোলা হয়নি। দুপুরে বিচারক রায় ঘোষণা করেন।’

তিনি আরো বলেন, ‘এ মামলায় পল্লবী থানার সাবেক এসআই জাহিদুর রহমান জাহিদ, এএসআই রাশেদুল ও কামরুজ্জামান মিন্টুকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও এক লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। জরিমানার টাকা দিতে ব্যর্থ হলে আরো ছয় মাস অতিরিক্ত কারাভোগের নির্দেশ দেন আদালত।’

আইনজীবী তাপস কুমার পাল আরো বলেন, ‘এ ছাড়া এ মামলায় পুলিশের সোর্স সুমন ও রাশেদকে সাত বছরের কারাদণ্ড এবং ২০ হাজার টাকা জরিমানা করেছেন।’

ইশতিয়াক হোসেন জনি। ছবি : সংগৃহীত।

মামলার নথি থেকে জানা যায়, ২০১৪ সালের ৭ আগস্ট তৎকালীন ঢাকা মহানগর দায়রা জজ জহুরুল হকের আদালতে নির্যাতন ও হেফাজতে মৃত্যুর অভিযোগ এনে নিহত জনির ছোট ভাই ইমতিয়াজ হোসেন রকি পল্লবী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জিয়াউর রহমানসহ আটজনের বিরুদ্ধে একটি নালিশি মামলা করেন। পরে বিচারক মামলাটি আমলে নিয়ে বিচার বিভাগীয় তদন্তের নির্দেশ দেন।

নির্দেশ অনুযায়ী, ঢাকা মহানগর হাকিম মারুফ হোসেন এ মামলার তদন্ত শেষ করেন। পরবর্তী সময়ে তিনি ২০১৫ সালের ১৭ ফেব্রুয়ারি পাঁচজনকে অভিযুক্ত ও পাঁচজনকে অব্যাহতির সুপারিশ করে ঢাকার মহানগর দায়রা জজ আদালতে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন। তদন্তকালে পুলিশের সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) রাশেদুল ও কামরুজ্জামান মিন্টুকে নতুন করে আসামি হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করা হয়।

অব্যাহতির সুপারিশ করা পাঁচ আসামি হলেন, পল্লবী থানার ওসি জিয়াউর রহমান, এসআই আবদুল বাতেন, রাশেদ ও শোভন কুমার সাহা ও কনস্টেবল নজরুল।

অন্যদিকে অভিযুক্ত পাঁচ আসামি হলেন, পল্লবী থানার এসআই জাহিদুর রহমান জাহিদ, এএসআই রাশেদুল ও কামরুজ্জামান মিন্টু, সোর্স সুমন ও রাশেদ।

এ প্রতিবেদন ২০১৫ সালের ১৩ জুলাই ঢাকা মহানগর দায়রা জজ কামরুল হোসেন মোল্লা আমলে নিয়ে পল্লবী থানার এএসআই রাশেদুল ও কামরুজ্জামান মিন্টু, পুলিশের সোর্স সুমন ও রাশেদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন।

মামলার এজাহার থেকে জানা যায়, ২০১৪ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি মিরপুর ১১ নম্বর সেকশনে জনির প্রতিবেশী সাদেকের ছেলের গায়ে হলুদ অনুষ্ঠান চলাকালে পুলিশের সোর্স সুমন অনুষ্ঠানে মেয়েদের সঙ্গে অশালীন আচরণ করেন। এ সময় জনি ও তাঁর ভাই পুলিশের সোর্স সুমনকে চলে যেতে অনুরোধ করেন। সোর্স সুমন ওই দিন চলে গেলেও পরদিন এসে আবার আগের মতো আচরণ করতে থাকেন। তখন জনি ও তাঁর ভাই তাঁকে আবারও চলে যেতে বললে সোর্স সুমন পুলিশকে ফোন করে তাঁদের ধরে নিয়ে যেতে বলেন।

দুই ভাইকে ধরে নিয়ে যাওয়ার সময় এলাকার লোকজন পুলিশকে ধাওয়া দিলে পুলিশ পাল্টা গুলি ছুড়তে থাকে।

জনি ও তাঁর ভাইকে থানায় নিয়ে অমানবিক নির্যাতন করা হয়। পরে তাঁদের ছেড়ে দেয় পুলিশ। জনির অবস্থা খারাপ হলে তাঁকে ন্যাশনাল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। অবস্থা আরো খারাপ হলে জনির মা তাঁকে ঢাকা মেডিকেল কলেজে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

 

খুলনা গেজেট / এমএম




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!