খুলনা, বাংলাদেশ | ৬ জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩১ | ২০ মে, ২০২৪

Breaking News

  হেলিকপ্টার দুর্ঘটনায় নিঁখোজ ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহীম রাইসি
  বাজারে থাকা এসএমসি প্লাসের সব ইলেক্ট্রোলাইট ড্রিংকস প্রত্যাহারের নির্দেশ, বাজারজাতকারীকে ১৬ লাক টাকা জরিমানা
পরিচালকের দাপট

খুলনা পাসপোর্ট অফিসে তুঘলকি কান্ড : বিঘ্নিত হচ্ছে জনস্বার্থ

নাফি ইসলাম

খুলনা বিভাগীয় পাসপোর্ট ও ভিসা অফিসের ভেতরে চলছে তুঘলকি কান্ড। পাসপোর্ট অফিসের ভেতরে আবেদনকারীদের হয়রানী বা কোন অনিয়মের খবর যাতে মিডিয়ায় প্রকাশিত হতে না পারে সে জন্য নানা পদক্ষেপ নিয়েছেন পরিচালক তৌফিকুল ইসলাম খান।

সম্প্রতি তিনি পাসপোর্ট অফিসের ভেতরে জনসাধারণ ও মিডিয়াকর্মী প্রবেশে নতুন নিয়ম চালু করেছেন।  এতে কোন আবেদনকারী আগের মত পাসপোর্ট অফিসের ভেতরে গিয়ে তথ্য সেবা নিতে পারছেন না। এছাড়া সরেজমিনে অফিসের ভেতরে দুর্নীতির চিত্র যেন সাংবাদিকরা প্রকাশ করতে না পারে সে জন্য তিনি মিডিয়াকর্মীদের পাসপোর্ট অফিসে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছেন। পরিচালকের দাবি, করোনার কারণে তিনি এমনটা করেছেন।

এদিকে, গ্রাহকরা পাসপোর্টের নানান সমস্যা নিয়ে প্রধান গেট থেকেই সমাধান না পেয়ে ফিরে যাচ্ছেন। মিডিয়া কর্মীরা পাসপোর্ট অফিসের ভেতরে প্রবেশ করতে চাইলে পরিচালকের অনুমতি লাগবে বলে প্রধান গেট থেকে জানানো হচ্ছে। এমনকি পরিচালকের সাথে সাক্ষাৎ করতে চাইলেও তিনি নানান অজুহাত দেখিয়ে ফোনেই কাজ সেরে নেয়ার পরামর্শ দিচ্ছেন।

সম্প্রতি খুলনার পরিচালক তৌফিকুল ইসলাম খানের বিরুদ্ধে দুর্নীতির খবর প্রকাশিত হওয়ায় দেশব্যাপী ব্যাপক সমালোচিত হচ্ছেন। খুলনায় বদলি হওয়ার আগে তিনি প্রধান কার্যালয়ে উপ-পরিচালক (অর্থ) হিসেবে কর্মরত ছিলেন। তৎকালীন সময়ে দেশের ২৯টি অফিস থেকে মাসোয়ারা নেয়ার অভিযোগ উঠেছে তার বিরুদ্ধে। যা গোয়েন্দা সংস্থা তদন্ত করছে।

এছাড়া তিনি খুলনায় যোগদানের পর গত বছরের ২ ডিসেম্বর পাসপোর্ট অফিসের ভিতরে অভিযান করে দুদক। এসময় আনসার সদস্য ফরমান সরদার ও রবিউল ইসলাম, উচ্চমান সহকারী হোসনে আরা খাতুন এবং নৈশপ্রহরী আজহারুল ইসলামের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণের সুপারিশ করে দুদক। এ ছাড়া বিভাগীয় পাসপোর্ট অফিসের পরিচালক তৌফিকুল ইসলাম খানের বিরুদ্ধে অসহযোগিতা ও ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণের অভিযোগ করেন দুদকের অভিযান পরিচালনা দলের সদস্যরা।

রবিবার (২১ সেপ্টেম্বর) বেলা ১১টায় নগরীর নূরনগরস্থ পাসপোর্ট অফিসের গিয়ে দেখা যায়, প্রধান গেটে সোহাগ নামে একজন আনসার ডিউটি করছেন। তিনি গ্রাহকদের কাছ থেকে ভিতরে যাওয়ার কারণ জেনে ভিতরের কর্মকর্তাদের সাথে ফোনে আলোচনা করার পরই তাদের ঢুকতে দিচ্ছেন। এখানে কোন সাংকেতিক বিষয় আছে কি না সেটা স্পষ্ট নয়।

এদিকে, পুলিশের পোশাকধারীরা কোন ধরণের যোগাযোগ না করেই পাসপোর্টের ফাইল নিয়েই ভেতরে যাচ্ছেন। খুলনায় পাসপোর্ট কার্যক্রমের সাথে কতিপয় পুলিশ সদস্যের সংশ্লিষ্টতা বহু বছর থেকেই চলে আসছে। কোন গ্রাহক পাসপোর্টের আবেদনের বিষয় জানতে বা তথ্য সেবা নিতেও ভেতরে যেতে পারছেন না। এমনকি মিডিয়া কর্মীর পরিচয় দিলেই তো আরও বিপদ। সরাসরি পরিচালক তৌফিকুল ইসলাম যদি অনুমতি দেয় তবেই তার ভেতরে যাওয়ার সুযোগ মিলবে, অন্যথায় নয়।

পাসপোর্টে গ্রাহক হয়রানি এবং দালালের খপ্পরে পড়ে বেশি টাকা দিয়ে পাসপোর্ট করার বিষয় নতুন নয়। প্রশাসনের চাপে পড়ে রাঘব বোয়ালরা প্রতিনিয়ত তাদের পদ্ধতি পরিবর্তন করে। কিছু দালাল চক্র কাজ করে পাসপোর্টের অফিসের বাইরে। যারা বিভিন্নভাবে গ্রাহকদের নিকট থেকে নানা কারণ দেখিয়ে টাকা নেয়। আর কিছু দালাল চক্র কাজ করে পাসপোর্টের অফিসের ভিতরে। তবে পুলিশ ও দুদকের অভিযানে পাসপোর্ট অফিসের ভেতরের তুলনায় বাইরের দালাল চক্রই বেশি আটক হয়।

এ বিষয়ে খুলনা বিভাগীয় পাসপোর্ট ও ভিসা অফিসের পরিচালক তৌফিকুল ইসলাম খানের সাথে মুঠোফোনে কথা বললে তিনি জানান, ভেতরে আসার সুযোগ নেই। কোন কিছু জানতে চাইলে ফোনে বলতে হবে। ভেতরে দালালদের অবস্থান অথবা গ্রাহকরা হয়রানি হচ্ছে কি না যেটা বোঝার উপায় কি এমন প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, দালাল বাইরে আছে কি না দেখেন। সরকার স্বাস্থ্যবিধি মেনে সবকিছু উন্মুক্ত করে দিলেও পাসপোর্টে অফিসে প্রবেশ অধিকার বিঘ্নিত করার বিষয়ে কোন মন্তব্য করেননি তিনি

খুলনা গেজেট/নাফি




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!