খুলনা, বাংলাদেশ | ২৮ আশ্বিন, ১৪৩১ | ১৩ অক্টোবর, ২০২৪

Breaking News

  বরিশাল শেরে ই বাংলা মেডিকেলে আগুন, নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে ফায়ার সার্ভিসের ৭ ইউনিট
  বিসর্জনে আজ শেষ হচ্ছে দুর্গোৎসব

পাইকারী ব্যবসায়ীদের বক্তব্যের প্রতিফলন নেই চালের বাজারে

নিজস্ব প্রতিবেদক

দিনমজুর আনারুলের বাড়ি কয়রা উপজেলার বামিয়া গ্রামে। এক সপ্তাহ আগেও মোটা চাল ৪৫ টাকায় কিনতেন। শুক্রবার (২৬ আগস্ট) বাজারে গিয়ে জানতে পারেন, চালের দাম বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫০ টাকা। অথচ তার দৈনিক পারিশ্রমিক বাড়েনি, এখনও ৫০০ টাকায় আছে। ফলে যে টাকা আয় করে তা দিয়ে সংসার চালাতে হিমসিম খাচ্ছে আনারুল।

আমেনা বেগম, খুলনার স্থানীয় একটি রাইস মিলের শ্রমিক হিসেবে কাজ করেন। তিনি বলেন, যেভাবে জিনিসপত্রের দাম বেড়ে চলেছে তাতে সংসার কুলিয়ে উঠতে পারছেন না। সামান্য সঞ্চয় ছিল, সেটা খরচ করা ছাড়া তার কোন উপায় ছিলনা। তবে সঞ্চয়ও শেষ হওয়ার পথে। এক সপ্তাহ ধরে বাজারে চালের দাম বেড়েছে ৫ টাকা। যার ফলে অতিরিক্ত ব্যয় মেটাতে তার নাভি:শ্বাস।

শুক্রবার (২৬ আগস্ট) খুলনার কয়েকটি বাজার ঘুরে দেখা গেছে, গরীবের চাল নামে পরিচিত স্বর্ণা মোটা চাল বিক্রি হচ্ছে ৫০ টাকা। যা এক সপ্তাহ আগেও বিক্রি হয়েছে ৪৫ টাকায়। বিভিন্ন ধরণের চিকন চালের ক্ষেত্রেও প্রায় একই অবস্থা। ভাল মানের চিকন চাল বিক্রি হচ্ছে ৬৮ টাকা, যা এক সপ্তাহ আগে বিক্রি হয়েছে ৬০ টাকায়। নাজিরশাইল চালের দাম এখন প্রতিকেজি ৭৫ টাকা, যা এক সপ্তাহ আগেও বিক্রি হয়েছে ৭০ টাকায়।

ব্যবসায়ীদের মিথ্যা প্রচারণা

গত এক সপ্তাহ ধরে বাজারে প্রতিকেজি চালে ৫ থেকে ১০ টাকা করে বৃদ্ধি পেয়েছে। খুচরা ব্যবসায়ীরা সঠিক কথা বললেও পাইকারী ব্যবসায়ীরা দাম বৃদ্ধির বিষয়টি অস্বীকার করেন। বড় বাজারের ব্যবসায়ী কুন্ডু ট্রেডাসের মালিক জয়দেব কুন্ডু বলেন, বাজারে চালের সরবরাহ ঠিক আছে, দাম কমতে শুরু করেছে। কিন্তু তার দোকান থেকে চাল নেওয়া একজন ক্রেতা বলেন, গত ২০ দিন আগে যে চাল ১৫৫০ টাকায় কিনেছেন বৃহস্পতিবার তাকে একই মানের একই পরিমাণ চাল তাকে ১৮০০ টাকায় কিনতে হয়েছে।

এ ব্যাপারে জানতে কাজী সোবহান রাইস মিলের মালিকের সাথে যোগাযোগ করা হলেও তিনিও একই উত্তর দেন। তিনি জানান, চালের দাম কমে গেছে। সরকারের ১৫ টাকা দরের চাল বিক্রির ঘোষণায় সব ধরণের চালের দাম কমে গেছে। তিনি আরও বলেন, চালের সরবরাহ বেড়ে গেছে কিন্তু বিক্রি নেই।

ব্যবসায়ীদের কথা-কাজের মিল নেই

খুচরা ব্যবসায়ী নান্টু বলেন, বড় বাজারের মোকামগুলোতে চালের সরবরাহ আছে। সেগুলো তারা মজুদ করে রেখেছে। সেখান থেকে তাদের জানানো হচ্ছে চলের সরবরাহ কম। জ্বালানি তেলের মূল্য বৃদ্ধির কারণ দেখিয়ে তারা চালের দাম বৃদ্ধি করেছে। চালের দাম বৃদ্ধির জন্য তিনি সিন্ডিকেটকে দায়ী করেছেন।

রূপসা বাজারের চাল ক্রেতা আলামিন বলেন, জ্বালানি তেলের দাম প্রতি লিটারে ৩৪ টাকা বেড়েছে। এ কারণে বড় বড় ব্যবসায়ীরা চলের দাম প্রতিকেজিতে ৫ টাকা করে বাড়িয়েছে। কিন্তু এ পরিমাণ দাম বাড়ানো অযৌক্তিক।

অপর একজন ক্রেতা বলেন, এমন কোন জিনিষ নেই যে তার মূল্য বাড়েনি। কিন্তু যাদের দেখার কথা তারা নিশ্চুপ থাকে। ফলে একের পর এক জিনিষের দাম বেড়েই চলেছে।

খুলনা গেজেট/এমএনএস




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!