করোনাভাইরাসের সংক্রমণের উর্দ্ধগতি রোধকল্পে দ্বিতীয় ধাপে ৬ ফেব্রুয়ারি থেকে ২০ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত স্কুল, কলেজ ও সমপর্যায়ের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখার সরকারি নির্দেশনা থাকলেও সেগুলোকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে অভিনব পন্থায় খুলনার পাইকগাছায় চলছে রমরমা কোচিং (ব্যাচ ও টিউশন) বাণিজ্য। তবে করোনা কালের বিবেচনায় কোমলমতি শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যত বিবেচনায় দু এক ব্যতীত এ ব্যাপারে উদাসীন অভিভাবকদের একটি বড় অংশ।
প্রতিবেদনকালে সরেজমিনে উপজেলা সদর থেকে শুরু করে নতুন বাজার, মানিকতলা, আগড়ঘাটা, গোপালপুর, বাঁকাসহ কপিলমুনির বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের আশপাশের তথা প্রায় সকল কোচিং সেন্টারগুলোর মূল ফটকে তালা ঝুলিয়ে কিংবা ভেতর থেকে দরজা বন্ধ করে সেন্টারগুলোর ভেতরে নূন্যতম সামাজিক দূরত্ব না মেনেই মাস্ক বিহীন গাদাগাদি করে শিক্ষার্থীদের বসিয়ে চলছে পাঠদান কার্যক্রম। একটি ব্যাচ শেষের আগেই আবার বাইরে অপেক্ষা করছে দেখা গেছে পরবর্তী ব্যাচের শিক্ষার্থীদের। অনেক শিক্ষকরাই আবার নির্ধারিত সেন্টার বন্ধ রেখে নিজেদের কিংবা শিক্ষার্থীদের বাড়িতেই ব্যাচ শুরু করেছে।
নাম না প্রকাশের শর্তে কোচিং সেন্টার গুলোর আশপাশের স্থানীয় কয়েকজন এ প্রতিনিধিকে জানান, সকালের শুরু থেকেই গভীর রাত পর্যন্ত সরকারি নিষেধাজ্ঞার তোয়াক্কা না করেই সেগুলোতে দফায় দফায় চলছে রমরমা কোচিং বাণিজ্য। যার ফলে মহামারি করোনা সংক্রমণের উর্দ্ধগতি রোধে সরকারি নির্দেশনা সফল না হয়ে মাঝ পথেই মুখ থুবড়ে পড়ছে। এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণে দ্রুত প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন তারা।
অভিভাবকদের সচেতন একাংশ মনে করেন, সরকারি নির্দেশনা বলবৎ থাকাবস্থায় শুধুমাত্র কোমলমতি শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যৎ বিবেচনা না করে অবশ্যই কোচিং সেন্টারগুলোর পরিচালকদের সেগুলো বন্ধ রাখা উচিত। পাশাপাশি এ ব্যাপারে অভিভাবকদেরকেও উদাসীন মনোভাব না প্রকাশ করে সচেতন হওয়া প্রয়োজন বলেও মনে করেন তারা।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোছাঃ মমতাজ বেগম জানান, সরকারি নির্দেশনা মানাতে ইতোমধ্যে উপজেলার জনগুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন এলাকায় প্রশাসনের পক্ষ থেকে সর্বসাধারণকে বিভিন্ন সচেতনতামূলক নির্দেশনার পাশাশি সরকারি নির্দেশনা মানাতে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করাসহ জরিমানাও করা হচ্ছে। আর সরকারি নিষেধাজ্ঞা চলাকালীন কাউকে কোচিং পরিচালনাকালে পাওয়া গেলে তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলেও জানান তিনি।
সর্বশেষ উপজেলাব্যাপী লাইসেন্স বিহীন কোচিং পরিচালনা, সরকারি নির্দেশনা বলবৎ থাকাবস্থায় সেগুলোর তোয়াক্কা না করে কোচিং ও কিন্ডারগার্টেন স্কুলে পাঠদান কার্যক্রম চালু রাখা প্রতিরোধে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনার পাশাপাশি কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের জরুরি হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন সচেতন অভিবাবকরাসহ স্থানীয় সচেতন মহল।
খুলনা গেজেট/এনএম