জ্বালানি তেলের দাম বাড়ানোর প্রতিবাদে সারাদেশের ন্যায় খুলনায়ও চলছে পরিবহন ধর্মঘট। সকাল থেকে দুরপাল্লার উদ্দেশ্যে খুলনা থেকে কোন গাড়ি ছেড়ে যায়নি বা খুলনার পথে কোন পরিবহন আসেনি। না জেনে অনেকেই বাস টার্মিনালে এসে আবার ফিরে যাচ্ছেন। ফলে ভোগান্তিতে পড়েছেন সাধারণ যাত্রীরা।
খুলনা মোটর শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি কাজী মো: নুরুল ইসলাম বেবী জানান, সকাল ছয়টা থেকে শুরু হয়েছে পরিবহন ধর্মঘট। পরিবহন মালিক সমিতির পক্ষ থেকে এ ধর্মঘট ডাকা হয়েছে। ডিজেলের দাম প্রতি লিটারে ১৫ টাকা করে বাড়ানো হয়েছে। কিন্তু বাসভাড়া বাড়ানো হয়নি। তেলের দামের অনুপাতে বাসভাড়া না বাড়ানোর কারণে অনেকেরই গাড়িভাড়া উঠবেনা। যে কারণে পরিবহন মালিকেরা স্বেচ্ছায় এ পরিবহন ধর্মঘটের ডাক দিয়েছেন। বিভাগীয় মোটর শ্রমিকেরা এ ধর্মঘটের সমর্থন জানিয়েছেন বলে তিনি এ প্রতিবেদককে জানিয়েছেন।
পাইকগাছা রুটের গাড়ি চালক মো: ফারুক হোসেন জানান, পাইকগাছা থেকে তিনি বৃহস্পতিবার সকালে খুলনায় এসেছেন। এখনও যেতে পারেনি। সেদিনের খোরাক বাবদ দু’শ টাকা তিনি পেয়েছেন। এর মধ্যে চার বেলা খেয়েছেন তাও এক বেলার খাবার বাকিতে খেয়েছেন। বর্তমান ভাড়ায় ১৯ শ ৫০ টাকার তেল নিলে তিনি পাইকগাছা থেকে যেতে ও আসতে পারতেন। এখন আসা যাওয়া করতে তার ২৬ শ টাকার তেল লাগবে। গাড়িভাড়া বাড়িয়ে দিলে এ সমস্যার সৃষ্টি হতো না। এখন কিভাবে তিনি বাড়ি ফিরে যাবেন তা চিন্তা করে পারছেন না।
মদিনা পরিবহনের চালক যুবায়ের জানান, তেলের দাম বৃদ্ধি করা হলেও পরিবহন ভাড়া বাড়ায়নি সরকার। বৃহস্পতিবার অনেক যাত্রীর সাথে বাকবিতন্ডা হয়েছে। ভাড়া যেটা আছে সেটা নিয়ে রওনা হলে তেলের টাকা উঠবেনা। কম টাকা দিলে পরিবহন মালিকেরা তা নিতে চাইবেনা। আমরা বেতন পাবনা। বেতন না পেলে আমাদের সংসার চলবে কি করে। কেন্দ্রীয়ভাবে ২৪ ঘন্টার ধর্মঘট ডাকা হয়েছে। খুলনার পরিবহন মালিকেরা স্বেচ্ছায় বন্ধ রেখেছে।
কুষ্টিয়া ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী সুমাইয়া কবির কুষ্টিয়ার উদ্দেশ্যে খুলনা বাস টার্মিনালে এসে বাস ধর্মঘট দেখে রীতিমতো চিন্তায় পড়ে গেছেন। শনিবার তার ভর্তির তারিখ। যথা সময়ে সেখানে পৌছাতে না পারলে তার সমস্যা হয়ে যাবে। কি করবেন তা ভেবে পারছেন না তিনি।
আবু বক্কার সিদ্দিক ঢাকার একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকুরী করেন। শনিবার তাকে অফিসে পৌঁছাতে হবে জরুরী মিটিং এ । সেখানে উপস্থিত হতে না পারলে তার সমস্যা হবে। আগামী ৮ নভেম্বর পর্যন্ত কোন ট্রেনের টিকিট পাওয়া যাচ্ছে না। ঢাকায় যেতে হলে তাকে অনেক বেগ পোহাতে হবে বলে তিনি এ প্রতিবেদককে জানিয়েছেন।
আসলাম হোসেন মোড়লগঞ্জের বাসিন্দা। না জেনে শুনে তিনি খুলনায় এসে বিপদে পড়েছেন। ভাইয়ের বাড়িতে ছিলেন। বাড়িতে ফিরে যাওয়ার জন্য বাস টার্মিনালে এসে দেখেন পরিবহন ধর্মঘট। বাড়িতে ফিরে যাবে কিভাবে সেটা নিয়ে তিনি চিন্তিত।
খুলনা গেজেট/ এস আই