খুলনা, বাংলাদেশ | ৪ জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩১ | ১৮ মে, ২০২৪

Breaking News

  নরসিংদীতে বজ্রপাতে ৩ জনের মৃত্যু
  রাঙামাটিতে সশস্ত্র হামলায় ইউপিডিএফ সদস্যসহ নিহত ২
  সাতক্ষীরার তালায় ধানের ট্রাক উল্টে ২ শ্রমিক নিহত, আহত আরও ১১ জন

পরিচয় মিলল সেই ‘পরীর’, মর্গে মা-বাবাও

গেজেট ডেস্ক

রাজধানীর বেইলি রোডে বহুতল ভবন গ্রিন কোজিতে আগুনের ঘটনায় মারা যাওয়া সেই শিশুর পরিচয় জানা গেছে। তার নাম ফাইরোজ কাশেম। শিশুটির বয়স আড়াই বছর। বাবার নাম শাহজালাল উদ্দিন। মা মেহেরুন নেসা জাহান হেলালি। শিশুটির বাবা-মা’ও আগুনে মারা গেছেন। ঢাকা জেলার অতিরিক্ত ম্যাজিস্ট্রেট এ কে এম হেদায়েতুল ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

ফাইরোজ কাশেমের মা মেহেরুন নেসা জাহান হেলালির বয়স (২৪)। বাবা শাহজালাল উদ্দিনের বয়স (৩৫)। মেহেরুন নেসা জাহান হেলালির বাবার নাম মো. মুক্তার আলম হেলালি। শাহজালাল উদ্দিনের (৩৫) বাবার নাম ডা. মুক্তিযোদ্ধা আবুল কাশেম, মা রাজিয়া বেগম। তার বাড়ি কক্সবাজারের উখিয়ার পূর্ব গোমালিয়ায়। শুক্রবার রাত ১০টায় মেহেরুন নেসা জাহান হেলালির বাবা মুক্তার আলম হেলালি মরদেহ শনাক্ত করেন। ডিএনএ পরীক্ষার পর অপর দুজনের মরদেহ হস্তান্তর করা হবে বলে জানানো হয়েছে।

ঢাকা মেডিকেল কলেজ মর্গের মেঝেতে তাদের মরদেহ নাম-পরিচয়হীন ছিল। বুকে ঝোলানো কাগজে লেখা ছিল অজ্ঞাতনামা।

মর্গে ফাইরোজ কাশেমের পাশে শুইয়ে রাখা হয়েছিল তাদের। প্রায় ৪০ বছর বয়সী ওই নারীর দেহ গ্রামীণ চেকের চাদরে ঢাকা থাকলেও শিশুদেহ খোলা ছিল। ওই নারীর পরনে রয়েছে লাল জামা ও হলুদ সালোয়ার-কামিজ। শিশুটি বাম পায়ের মোজা আধখোলা। ঝুঁটি বাঁধা রয়েছে নীল রাবার ব্যান্ডে।

ঢাকার অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট একেএম হেদায়েতুল ইসলাম বলেছেন, কেউ তাদের মরদেহ নিতে আসেননি। দাবিও জানাননি। তাদের চেহারায় মিল আছে। অনুমান করছি তারা মা-মেয়ে।

মর্গে আসা স্বজন ও সাধারণ মানুষ শিশুটির মরদেহ দেখে আবেগতাড়িত হয়ে পড়েন। শিশুটির ডান হাতে ছাইয়ের দাগ রয়েছে। তবে শরীরের কোনো অংশ পোড়েনি। ধারণা করা হচ্ছে, ধোঁয়ায় আটকে পড়ে অক্সিজেন স্বল্পতায় শিশুটি মারা গেছে। পাশে থাকা নারীর মরদেহও পোড়েনি। তাঁর মুখমণ্ডলে ছাইয়ের দাগ রয়েছে। তাদের মরদেহ গ্রিন কোজির কত তলা থেকে উদ্ধার করা হয়েছে তা জানা যায়নি।

মর্গের দায়িত্বরত কর্মকর্তা আলমগীর হোসেন সমকালকে বলেন, ফুটফুটে মেয়েটির বয়স ৩ থেকে ৪ বছর হতে পারে। এখন পর্যন্ত ওই শিশুর স্বজন আসেনি। তাই অজ্ঞাত হিসেবে মরদেহটি রাখা হয়েছে। দাবিদার না পাওয়া পর্যন্ত মর্গে থাকবে। পরে নিয়মানুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

তিনি বলেন, ২০০৪ সাল থেকে লাশ হস্তান্তরের কাজ করি। অনেক ঘটনা দেখেছি। তবে এমন ফুটফুটে শিশুর লাশ পড়ে থাকতে দেখিনি। বুক ফেটে কান্না আসছে। যে দেখছে, সেই কাঁদছে।

বৃহস্পতিবার রাত পৌনে ১০টার দিকে বেইলি রোডের ভবনটিতে আগুন লাগে। অন্তত ৪৬ জন নিহত হয়েছেন। গুরুতর আহত হয়েছেন অন্তত ২২ জন। তাই নিহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। ৩৯ জনের মরদেহ শনাক্ত করে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। পরীর মতো শিশুটি রয়েছে মর্গের হিমঘরে।

 




খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!