খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে বদলী হলেন বিএনপি পন্থি চিকিৎসকদের সংগঠন ডক্টরস এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ ড্যাব নেতা ডাঃ আবু জাফর মোঃ সালেহ। ডাঃ পলাশ নামেই তিনি বেশি পরিচিত। বুধবার (৫ জানুয়ারি) সকালে তিনি খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে যোগদান করেন।
ড্যাব খুলনা মেডিকেল কলেজ শাখার সাধারণ সম্পাদক ডাঃ পলাশ শুধু বিএনপি সমর্থক হওয়ার কারণে প্রতিহিংসার শিকার হয়ে আওয়ামীলীগ আমলের ১৫ বছরে ১৩ বারের বেশি বদলী হয়েছিলেন বলে মনে করেন অধিকাংশ চিকিৎসক। খুলনা মেডিকেলে যোগদান করায় তাকে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানায়, চিকিৎসক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা।
জানা যায়, খুলনা মেডিকেল কলেজের কে-৫ ব্যাচ এর শিক্ষার্থী ডাঃ আবু জাফর মোঃ সালেহ ছাত্রজীবনে রাজনীতিতে জাড়িয়ে পড়েন। খুলনা মেডিকেল কলেজ শাখা ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক এর দায়িত্ব পালন করেন। সরকারি চাকুরীতে যোগদান করে নিয়ম অনুযায়ী ২ বছর উপজেলা হেলথ কমপ্লেক্স এ চাকুরীর পর মেডিকেল অফিসার হিসাবে যোগদান করেন খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে।
কিন্তু ২০০৯ সালে আওয়ামীলীগ সরকার ক্ষমতায় আসলে পেশাজীবী দলীয় প্রতিহিংসার শিকার হয়ে শাস্তিমুলক বদলী হতে হয় চট্রগ্রামে। এরপর কুমিল্লার মেঘনা, দাউদকান্দি, শিক্ষাকোর্স ঢাকা মেডিকেলম, বরিশাল, সাতক্ষীরার শ্যামনগর, খুলনার দাকোপ, যশোরের চৌগাছা, বাগেরহাটের কচুয়া ও রামপাল, এবং বাগেরহাট সদর হাসপাতালসহ গত ১৫ বছরে ১৩ বারের বেশি বদলী করা হলেও নিজের শহর ও মেডিকেলে তাকে আসতে দেয়া হয়নি।
জানা যায়, বিএনপি পন্থি চিকিৎসকদের সংগঠন ডক্টরস এসোসিয়েশনের সাধারণ কর্মী থেকে প্রতিটি আন্দোলনে চিকিৎসক হিসাবে ভুমিকা রাখেন ডাঃ আবু জাফর মোঃ সালেহ পলাশ। দায়িত্ব পান খুলনা মেডিকেল ড্যাবের সাধারণ সম্পাদকের। দায়িত্ব পেলেও বদলী হতে পারেননি গত ১৫ বছরে।
গত ৫ আগষ্ট ছাত্রজনতার গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে আওয়ামীলীগ সরকারের পতন হলেও নানান জটিলতায় বদলী হতে পারেননি তিনি। সর্বশেষ গত মঙ্গলবার বাগেরহাট সদর হাসপাতাল থেকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে জুনিয়র কনস্যালট্যান্ট হিসাবে বদলী হন তিনি। এতে বিএনপি পন্থি চিকিৎসকদের মধ্যে চলছে উৎসবের আমেজ। তাকে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানান ড্যাব ও কর্মচারী ঐক্য পরিষদের নেতারা।
ডাঃ আবু জাফর মোঃ সালেহ বলেন আমি জাতীয়তাবাদী আদর্শের মানুষ। শুধু মাত্র এই অপরাধের কারণে গত ১৫ বছরে নিজের মেডিকেলে কাজ করতে আসতে পারিনি। ১৫ বছরে ১৩ বার বদলী করা হয়েছে আমাকে। চট্রগ্রাম বিভাগ থেকে সাতক্ষীরা শ্যামনগর কোথাও দুই বছর স্থায়ী হতে পারিনি। সার্বক্ষণিক মানসিক যন্ত্রনায় থেকেছি। তবে ৫ আগষ্ট ছাত্র জনতার গণঅভ্যুত্থানের পর মানুষ সঠিক ভাবে চাকুরী করার সুযোগ পাচ্ছে। আগামী দিনে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ম অনুযায়ী চাকুরীর পাশাপাশি চিকিৎসকদের সমস্যা ও যৌক্তির দাবির চিকিৎসকদের পাশেই থাকবো।
খুলনা গেজেট/ টিএ