যুবলীগের খুলনা বিভাগীয় ‘তারুণ্যের জয়যাত্রা’ সমাবেশ থেকে ফেরার পথে নড়াইলের কালিয়া উপজেলার যুবলীগ কর্মী আজাদ শেখ (৩২) খুনের পর এলাকায় লুটপাট, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে।
বৃহস্পতিবার (২০ জুলাই) কালিয়া উপজেলার পেড়লী গ্রামের সালাম শেখের ছেলে ও পেড়লী ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি সাজ্জাদ শেখের বড় ভাই যুবলীগ কর্মী আজাদ শেখ প্রতিপক্ষের হামলায় আহত হয়ে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মারা যান। এমন খবরে গতকাল রাতে দুর্বৃত্তরা ওই গ্রামের বেশ কয়েকটি বাড়িতে লুটপাট, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করেন। পুলিশ উপস্থিত হলে রাতে ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ বন্ধ হলেও আজ শুক্রবার সকাল থেকে আবারও বেশ কয়েকটি বাড়িতে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করে দুর্বৃত্তরা। এতে কয়েক কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে দাবি করেছেন ভুক্তভোগী পরিবার।
ভুক্তভোগী নিছার ভূঁইয়ার শ্যালিকা কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, ‘খবর পেয়ে আমরা এসে দেখি কিচ্ছু নাই। ধানের গোলায় আগুন জ্বলছে, ঘরবাড়ি পুড়ে শেষ। এক বাড়ির সাতটি ঘর, আগুন দেওয়ার আগে সব নিয়ে গেছে লুট করে।’
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক নারী বলেন, ‘আমার স্বামী অচল। ছোট দুইটা মেয়ে নিয়ে ভাঙা ঘরে থাকি। আমার ঘরটা আগুন ধরায় দিতে গেছিল। তাদের হাত-পা ধরে অনুরোধ করায় তারা আগুন দেয়নি, কিন্তু আমার ঘরে কুপিয়েছে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, পেড়লী গ্রামে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে অনেক দিন থেকেই দুই গ্রুপের মধ্যে ঝামেলা চলছে। শেখ গ্রুপের নেতৃত্বে পেড়লী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান আনিসুল ইসলাম বাবু শেখ। নিহত যুবলীগ কর্মী আজাদ শেখ তার অনুসারী ছিলেন। অপরদিকে ভূঁইয়া ও মোল্যা গ্রুপের নেতৃত্ব দেন ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও বর্তমান ইউপি চেয়ারম্যান জারজিদ মোল্যা। এই গ্রুপে আছেন শহীদুল ভূঁইয়া ও আলমগীর মোল্যা।
এদিকে যুবলীগ কর্মী আজাদ শেখ মারা যাওয়ার পর ঘরবাড়ি ফেলে পালিয়েছেন ভূঁইয়া ও মোল্যা গ্রুপের লোকজন। তবে অগ্নিসংযোগ ও ভাঙচুরের ঘটনাকে একে অপরের ওপর দোষ চাপাচ্ছেন উভয় পক্ষ।
এ বিষয়ে জেলা পুলিশ সুপার সাদিরা খাতুন ঘটনাস্থল পরিদর্শন শেষে বলেন, যেকোনো হত্যাকাণ্ড অত্যন্ত দুঃখজনক। এই হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদ্ঘাটনে আমরা সব দিক মাথায় রেখেই তদন্ত করছি। দ্রুত সময়ের মধ্যে হত্যাকারীদের গ্রেপ্তার করা হবে। এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। কোনো ধরনের বিশৃঙ্খলার চেষ্টা করলে আইনের আওতায় আনা হবে।
খুলনা গেজেট/এমএম