নড়াইল সদর উপজেলার বিছালী ইউনিয়নের শসা বাজার থেকে প্রতিদিন স্থানীয়ভাবে উৎপাদিত শসা দেশের বিভিন্ন স্থানে সরবরাহ করা হয়। এটি দেশের অন্যতম বড় শসার বাজার হিসেবে ইতোমধ্যে খ্যাতি অর্জন করেছে।
ক্রেতা-বিক্রেতার হাঁকডাকে খুব ভোর থেকেই সরগরম হয়ে ওঠে এই বাজার। সদর উপজেলার প্রায় ৩০ গ্রামের কৃষক এই বাজারে শসা নিয়ে আসেন। প্রতিদিন প্রায় কোটি টাকার শসা বেচাকেনা হয় বলে জানিয়েছেন বাজারের ব্যবসায়ীরা।
নড়াইল ছাড়াও ঢাকা, কুমিল্লা ও চট্টগ্রামসহ বিভিন্ন জেলার পাইকারি ও খুচরা ব্যবসায়ীরা শসা সংগ্রহ করেন। প্রতিদিন সকাল ৬টা থেকে বাজার পুরোদমে শুরু হয়ে চলে তিন থেকে চার ঘণ্টা। প্রায় তিন বছর আগে রমরমা এ শসা বাজার শুরু হয়।
ভোরের আলো ফোটার আগেই এ বাজারে পাইকারী দরে বিক্রি হয় প্রায় কোটি টাকার শসা। দরদাম করে কৃষকের কাছ থেকে শসা কিনেন পাইকাররা। এরপর তা চলে যায় ঢাকা, চট্টগ্রামসহ বিভিন্ন স্থানে। সারা বছরই এই এলাকার অসংখ্য মৎস্য ঘেরের পাড়ে চাষ হয় শসা।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ সূত্রে জানা যায়, এ বছর জেলায় ১৭৫ হেক্টর জমিতে শসা ও ক্ষীরা চাষ হয়েছে। যা গত বছরের চেয়ে ২৫ হেক্টর বেশি। জুলাই থেকে আগস্ট মাস পর্যন্ত শসা লাগানোর উপযুক্ত সময়। আড়াই মাসে শসা তোলা যায়। এ শসা চলবে পুরো ডিসেম্বর মাস।
সরেজমিনে দেখা যায়, চারদিকে সবুজের সমারোহ। রাস্তার পাশে বিস্তীর্ণ বিলজুড়ে শুধুই শসা খেত। শসা চাষ পালটে দিয়েছে সদর উপজেলার ৩০ গ্রামের চিত্র।
মির্জাপুর গ্রামের কৃষক আদিত্য বিশ্বাস বলেন, দুই বিঘা জমিতে শসা চাষ করে তার খরচ হয় ২০ হাজার টাকা। তিন মাসে শসা বিক্রি করেছেন লক্ষাধিক টাকা। শসা চাষ করে তিন গুণ লাভ পেয়েছেন। শুধু আদিত্য বিশ্বাস নন, শসা চাষ করে হাজার হাজার কৃষক লাভবান হয়েছেন।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের নড়াইলের উপপরিচালক দীপক রায় বলেন, ‘এ জেলার মাটি কৃষির জন্য খুবই উপযোগী। অন্য ফসলের তুলনায় মাছের ঘেরের পাড়ে শসা চাষ লাভজনক হওয়ায় এ জেলায় দিন দিন শসা চাষ বাড়ছে।’
বিছালী ইউনিয়নে গড়ে ওঠা শসা বাজারের সভাপতি অ্যাড. অচীন চক্রবতী বলেন, বাজারে প্রতিদিন কোটি টাকার বেচাকেনা হয়।