খুলনার ডুমুরিয়ায় হরিভদ্রা নদী সিলটেড হওয়ায় বিল সিংগায় ব্যাপক জলাবদ্ধতা দেখা দিয়েছে। বিলের চারিদিকে শুধু পানি আর পানি। ডুবুডুবু করছে প্রতিটি মৎস্য ঘের। পানিতে নষ্ট হচ্ছে বিভিন্ন ধরনের সবজি। অনেক বসতবাড়ির আঙিনাতেও পানি উঠে গেছে। তাই বিল বাঁচাতে বিএডিসি’র সহায়তা নিয়ে সেচ প্রকল্প গ্রহণ করেছেন এলাকাবাসী।
জানা যায়, খর্ণিয়া ও রুদাঘরা ইউনিয়নাধীন ২৫নং পোল্ডার আওতায় সিংগার বিল। এখানে প্রায় ২ হাজার একর জমি ও জলাশয় রয়েছে। চিংড়ি ঘেরের উপর নির্ভরশীল প্রায় প্রতিটি মানুষ। পাশাপাশি ধান ও সবজি চাষেও বিলটি অন্যতম। বলা যায় এলাকার হাজার হাজার কৃষকের ভাতের হাড়ি এই বিল সিংগায়। জোয়ার-ভাটা ও জলবায়ু পরিবর্তন এবং নদীর চর দখলের ফলে হরিভদ্রা নদীর তলদেশ অনেক উঁচু হয়ে গেছে। ফলে অকেজো হয়ে পড়েছে চহেড়ার দুই ভেন্টের স্লুইচ গেটটি।
গেটের মুখে পলি জমে ভরাট হয়ে গেছে। যে কারণে ক্রমাগত বৃষ্টির পানিতে প্লাবিত হচ্ছে বিল সিংগা। এখন বিলের অধিকাংশ মৎস্য ঘেরের কাঁনায় কাঁনায় পানি। নিম্নাঞ্চলের অনেক ঘের ও সবজি ক্ষেত তলিয়ে কৃষকের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। দ্রুত পানি নিষ্কাশন না করা গেলে হাজার হাজার কৃষকের স্বপ্ন পানিতে বিলীন হয়ে যাবে। সবমিলে ফসল বাঁচানো নিয়ে কৃষকরা দারুণ দুশ্চিন্তায় রয়েছেন। তাই বিল বাঁচাতে খর্ণিয়া ও রুদাঘরা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের সমন্বিত উদ্যোগে এবং বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশন (বিএডিসি)’র সহায়তায় সেচ প্রকল্প গ্রহণ করেছেন এলাকাবাসী।
এলাকার কৃষক আব্দুর সবুর জানান, আমরা দীর্ঘদিন সিংগার বিলে জলাবদ্ধতা নিয়ে ভুগছি। পানিতে ডুবে সবজি নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। ঠিকমত মাছ চাষ ও ফসল উৎপাদন করতে পারি না। পানি সরাতে না পারলে আমাদের ভিটে বাড়িও তলিয়ে যাবে।
এ প্রসঙ্গে খর্ণিয়া ইউপি চেয়ারম্যান শেখ দিদারুল হোসেন দিদার বলেন, হরিভদ্রা নদী সিলটেড হয়ে বিলের বেড লেভেল ছাড়া অনেক উঁচু হয়ে গেছে। ফলে পানি নিষ্কাশন আর হচ্ছে না। বলা যায় বিল সিংগায় হাজার হাজার কৃষকের ভাতের হাড়ি। তাই দ্রুত হরিভদ্রা নদী পুনঃখননের জন্য স্থানীয় সংসদ সদস্য নারায়ণ চন্দ্র চন্দের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন তিনি।
এ প্রসঙ্গে খুলনা বিএডিসি’র নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ জামাল ফারুক বলেন, সাময়িকভাবে জলাবদ্ধতা নিরসনে বিল সিংগায় ৪টি বড় মেশিন সরবরাহ করা হয়েছে। প্রয়োজন হলে আরো দেয়া হবে। সিংগার বিলের জলাবদ্ধতা নিরসনকল্পে আমরা একটা অ্যাসেসমেন্ট গ্রহণ করেছি।
খুলনা গেজেট/এনএম