নগরীর খালিশপুরের উত্তর কাশিপুর ভাটিয়াপাড়া পোড়া বাড়ি এলাকার চাঞ্চল্যকর লিটন হত্যা মামলার আসামিরা জামিনে বের হয়েছেন। নিহতের পরিবারের অভিযোগ জামিন পেয়ে আসামিরা মামলা তুলে নিতে প্রতিনিয়ত হুমকি দিচ্ছে। তাদের অনবরত হুমকিতে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন নিহতের পরিবার। এ বিষয়ে খালিশপুর থানায় সাধারণ ডায়েরী করেছেনে ভুক্তভোগী পরিবার।
নিহতের পরিবার জানায়, লিটন ওই এলাকার একজন হোটেল ব্যবসায়ী ছিলেন। এলাকার কয়েকজন মাদক ব্যবসায়ীরা তার দোকানে বসে মাদক বেচাকেনা করত। যা নিয়ে প্রায়ই ওই ব্যবসায়ীদের সাথে তার বাকবিতান্ড হতো। গেল বছরের ১৬ এপ্রিল বিকেলে মামলার ১১ নং আসামি আব্দুল্লাহ তাকে কেটে টুকরো করে ফেলার হুমকি দেয়। এ নিয়ে আব্দুল্লাহ ও লিটনের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। এলাকার মানুষের ঘটনাস্থলে উপস্থিত হলে আসামিরা একে একে সরে পড়ে।
১৮ এপ্রিল রাত একটার দিকে লিটন দোকান বন্ধ করে রিয়াজ মুন্সি ও মিজানকে সঙ্গে নিয়ে বাসায় যাওয়ার উদ্দেশ্যে রওনা হয়। উত্তর কাশিপুর বাইতিপাড়া কবরখানা রোড লাবু শরীফের বাড়ির সামনে পৌছামাত্র সন্ত্রাসীরা তার ওপর আক্রমণ করে। তাদের ধারালো অস্ত্রের এলোপাতাড়ী আঘাতে মারাত্মতভাবে আহত হন লিটন। তাকে উদ্ধার করে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। পরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। মৃত্যুর পূর্বে তিনি পুলিশের নিকট জবানবন্দি দেন।
এ ঘটনায় নিহতের স্ত্রী ১৮ জনের নাম উল্লেখ করে থানায় মামলা দায়ের করেন। হত্যাকন্ডের সাথে জড়িত থাকার অভিযোগে পুলিশ ১২ জন আসামিকে গ্রেপ্তার করে। লিটন হত্যার সাথে সরাসারি জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে ছয়জন আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে। জামিনে রয়েছে কয়েকজন আসামি।
নিহতের ছোটভাই মো: ইমামুল এ প্রতিবেদকের নিকট বলেন, খালিশপুুর বেবীর মোড় এলাকায় ঝালমুড়ির ব্যবসা করেন। ভাই হত্যাকান্ডে গ্রেপ্তার হওয়া হেলাল ও আব্দুল্লাহসহ কয়েকজন আসামি জামিনে বের হয়েছে। এলাকায় তারা বেপরোয়াভাবে ঘুরে বেড়াচ্ছে। জামিনে মুক্তি পাওয়ার পর আসামিরা তাকে ও তার পরিবারের সদস্যদের মামলা তুলে নেওয়ার জন্য চাপ দিচ্ছে। দেশীয় অস্ত্র নিয়ে বিভিন্ন সময়ে ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের সামনে এসে মহরা দিচ্ছে। মামলা তুলে না নিলে বড় ভাইয়ের মতো তার ও পরিবারের সদস্যদের পরিনতি হবে বলে হুমকি দিয়েছে। পরিবারের নিরাপত্তার স্বার্থে তিনি ২৮ জানুয়ারি পাঁচজনের নাম উল্লেখ করে থানায় একটি সাধারণ ডায়েরী করেছেন, যার নং ১২৯৮।
চায়ের দোকানী লিটনের স্ত্রী হেলেনা বলেন, গত সপ্তাহে খুনীদের একজন দোকানের সামনে মহড়া দেয়। ছেলেকে মামলা তুলে নেওয়ার জন্য শাসিয়ে যায়। মামলা তুলে না নিলে পরিণতি খুব খারাপ হবে বলে হুমকি দিয়ে যায়। পুলিশকে বিষয়টি জানানো হয়েছে।
এ বিষয়ে মামলার তদন্ত কর্মকর্তার সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, জিডির বিষয়ে তিনি কিছুই জানেন না।
খুলনা গেজেট/ এস আই